• ১৫ দিন স্বামীকে, ১৫ বয়ফ্রেন্ডকে 'দেওয়ার' অদ্ভুত দাবি মহিলার! স্তম্ভিত গোটা গ্রাম, কী দেওয়ার কথা বললেন মহিলা?
    আজকাল | ২৮ আগস্ট ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের রামপুর জেলায় ঘটেছে এক বিস্ময়কর ঘটনা, যা স্থানীয় গ্রামবাসী থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত পর্যন্ত সকলকে হতবাক করেছে। স্বামী-স্ত্রীর পারিবারিক বিবাদের মীমাংসা করতে বসেছিল গ্রাম পঞ্চায়েত, কিন্তু সেখানে এক মহিলার প্রস্তাব রীতিমতো শোরগোল ফেলে দেয়। ওই মহিলা দাবি করেন, মাসের পনেরো দিন তিনি স্বামীর সঙ্গে আর বাকি পনেরো দিন প্রেমিককে দেবেন।

    ঘটনাটি আজিমনগর ও টান্ডা থানা এলাকার অন্তর্গত দুটি গ্রামের সঙ্গে যুক্ত। প্রায় দেড় বছর আগে আজিমনগরের এক তরুণীর বিয়ে হয় পাশের গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে। কিন্তু বিবাহের কিছুদিন পরই তার সম্পর্ক গড়ে ওঠে টান্ডা এলাকার এক যুবকের সঙ্গে। তারপর থেকেই একাধিকবার তিনি ঘর ছেড়ে ওই প্রেমিকের কাছে পালিয়ে যান। স্বামী প্রতিবার তাকে ফিরিয়ে আনলেও নারী একই কাণ্ড বারবার ঘটিয়েছেন। এমনকি গতবার তিনি দশমবারের মতো প্রেমিকের কাছে চলে যান। শেষবার যখন স্বামী তাকে ফিরিয়ে আনতে যান, তখন ওই মহিলা  একেবারে স্পষ্ট জানিয়ে দেন— তিনি ফিরে আসবেন না। এই অবস্থায় দুই পরিবারের লোকজন মিলে পঞ্চায়েত ডাকেন। পঞ্চায়েতের বৈঠকে সকল গ্রামবাসী ও প্রবীণরা উপস্থিত ছিলেন। সবার সামনে ওই মহিলা  অকপটে ঘোষণা করেন— তিনি স্বামী ও প্রেমিক, উভয়ের সঙ্গেই সম্পর্ক রাখতে চান। এজন্য মাসের অর্ধেক দিন স্বামীর সঙ্গে এবং বাকি অর্ধেক প্রেমিকের সঙ্গে কাটাবেন বলে দাবি করেন।

    এই অদ্ভুত প্রস্তাবে পঞ্চায়েত হতভম্ব হয়ে পড়ে। স্বামী তখন সভার মাঝখানে হাত জোড় করে স্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, “তুমি আমাকে মাফ করো, প্রেমিকের সঙ্গেই থাকো।” তার বক্তব্য শুনে উপস্থিত গ্রামবাসীদের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই বিস্মিত হয়ে প্রশ্ন তোলেন, এমন অস্বাভাবিক প্রস্তাব আদৌ কীভাবে গ্রহণযোগ্য হতে পারে। বর্তমানে পরিস্থিতি অনির্দিষ্ট। স্বামী স্পষ্ট জানিয়েছেন, তিনি আর এই দাম্পত্য সম্পর্ক চালিয়ে যেতে রাজি নন। অপরদিকে স্ত্রী নিজের অবস্থান থেকে নড়েননি, তার দাবি— দুই পুরুষের মধ্যে সময় ভাগ করেই তিনি জীবন কাটাবেন। গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যরা জানান, এমন ঘটনা তাদের জীবনে কখনও দেখেননি। কীভাবে সমস্যার সমাধান হবে, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যেই গ্রামে এই ঘটনা নিয়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।

    রামপুরের এই ঘটনাটি শুধু ব্যক্তিগত দাম্পত্য জীবনের সংকট নয়, এর সামাজিক ও মনস্তাত্ত্বিক অভিঘাতও গভীর। প্রথমত, সমাজের প্রচলিত নৈতিক ধারণা ও দাম্পত্য সম্পর্কের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গিকে এটি বড় প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে। গ্রামের প্রবীণ ও সাধারণ মানুষ যেভাবে হতবাক হয়েছেন, তা দেখায় সমাজ এখনও একক সম্পর্ককেই বৈধ ও গ্রহণযোগ্য মনে করে। দ্বিতীয়ত, মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকে দেখা যায়, বারবার পালিয়ে যাওয়া এবং দুই পুরুষের মধ্যে সময় ভাগ করার প্রস্তাব আসলে মহিলার অন্তর্দ্বন্দ্ব, মানসিক অস্থিরতা এবং আত্মপরিচয়ের টানাপোড়েনকে প্রতিফলিত করে। অপরদিকে, স্বামীর বারবার অপমান সহ্য করা ও শেষে হাত জোড় করে ছেড়ে দেওয়ার ঘটনা তার মানসিক ভাঙন, অবসাদ ও আত্মসম্মানবোধের ক্ষয়কে প্রকাশ করে। এই ধরনের পরিস্থিতি পরিবার ভাঙনের পাশাপাশি সামাজিক আস্থাহীনতাও বাড়ায়। গ্রামের মধ্যে এমন ঘটনার প্রচার সমাজে বিভাজন, লজ্জা ও কৌতূহল তৈরি করে, যা দীর্ঘমেয়াদে ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
  • Link to this news (আজকাল)