'দ্বিতীয় বউ বলছি...', স্বামীর ফোনে মহিলার কণ্ঠস্বর! কাঁদতে কাঁদতেই সব শেষ, তরুণীর চরম পরিণতিতে মাথায় হাত পরিবারের
আজকাল | ২৮ আগস্ট ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্বামীর নম্বর থেকে ফোন এসেছিল। ভেবেছিলেন, স্বামী হয়তো খোঁজখবর নিতেই ফোন করেছেন। ফোন ধরতেই এক মহিলার কন্ঠস্বর শুনতে যান স্ত্রী। কোনও কথা বলার আগে ফোনের ওপার থেকে তরুণীকে বলা হয়, 'আমি তোমার স্বামীর দ্বিতীয় স্ত্রী বলছি!' ব্যস! মুহূর্তের মধ্যে সব শেষ। চলন্ত বাসে মর্মান্তিক পরিণতি হল তরুণীর।
ফোনটি পেয়েই হাউমাউ কান্না শুরু করেন তরুণী। কাঁদতে কাঁদতেই রওনা দেন স্বামীর কাছে। স্বামী না জানিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন, এটি শোনার পর মানসিকভাবে ভেঙেও পড়েছিলেন। কিন্তু স্বামীর কাছে আর পৌঁছনো হল না তরুণীর। পথেই সব শেষ। চলন্ত বাসেই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন তিনি। বিষয়টি ঘিরে এলাকাতেও ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঘটনাটি ঘিরে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। আদৌ তরুণীর স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন কিনা, না কি ভুয়ো পরিচয় দিয়ে ফোন করা হয়েছিল, খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পাশাপাশি কীভাবে তরুণীর মৃত্যু হল, তার জন্য ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে তাঁর দেহটি।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে ২৫ বছর বয়সি তরুণীর নাম, রীতা। তিনি জলালপুরের বাসিন্দা ছিলেন। দিল্লিতে মা ও ভাইয়ের কাছে থাকতেন তিনি। জানা গেছে, মঙ্গলবার তাঁর স্বামীর নম্বর থেকে তাঁর কাছে ফোন আসে। ফোন তুলতেই এক অপরিচিত মহিলার কন্ঠস্বর শুনতে পান তিনি। ফোনে তরুণীকে ওই মহিলা বলেন, তিনি তাঁর স্বামীর দ্বিতীয় স্ত্রী।
মহিলার দাবি শুনেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন রীতা। ফোন পেয়েই মা ও ভাইকে নিয়ে বাসে করে উত্তরপ্রদেশের হারদউয়ের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। মাঝ রাস্তাতেই মাকে জানান, তিনি শরীরে অস্বস্তি অনুভূত হচ্ছে। তাঁকে সেই সময় বিধ্বস্ত দেখাচ্ছিল। মায়ের কোলে মাথা রেখে কান্নাকাটি করছিলেন রীতা। এর কিছুক্ষণ পরেই বাসের মধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন তিনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে আতারাউলি থানার অন্তর্গত ধিকুন্নি গ্রামের মধ্যে। তদন্তে নেমে তারা জানতে পেরেছে, আড়াই বছর আগে সীতাপুর গ্রামের বাসিন্দা বানিয়া মৌ গ্রামের বাসিন্দা শৈলেন্দ্রর সঙ্গে রীতার বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক মাস পরেই জানা যায়, রীতা টিউবারকুলেসিসে আক্রান্ত। এরপরই শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে মা ও ভাইয়ের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন তরুণী।
কয়েক মাস চিকিৎসার পর তিনি খানিকটা সুস্থ হয়ে ওঠেন। এরপর আবারও শ্বশুরবাড়িতে ফিরে যান। গত মে মাসে বাবার মৃত্যুর পর আবারও জালালপুরে মায়ের কাছে ফিরে আসেন রীতা। এই সময়েই স্বামীর সঙ্গে অশান্তি শুরু হয় তাঁর। যে অশান্তির জেরেই দিল্লিতে এসে মা ও ভাইয়ের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন রীতা।
রীতার মৃত্যুর পর আতারাউলি থানায় তাঁর ঘটনাটির অভিযোগ জানান। পুলিশ আধিকারিক মরকান্দে সিং জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই ২৫ বছর বয়সি তরুণীর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলেই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। ঘটনাটি ঘিরে তদন্ত জারি রয়েছে। এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।