অর্ণব আইচ: বিশেষভাবে সক্ষম সেজে লিফটের আর্জি। বাইকে তুলতেই যুবককে পোড়ো বাড়িতে নিয়ে ডাকাতির অভিযোগ। ছুরি ও অস্ত্র দেখিয়ে যুবকের থেকে প্রথমে নগদ টাকা ও পরে ডাকাতি করা হয়। দু’দফায় ১৮ হাজার ৩০০ টাকা পাঠাতে বাধ্য করা হয় বলেও অভিযোগ। তারপর তাঁকে মারধর করে বের করে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। দুই ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত দুই ডাকাতের নাম রহিম আহমেদ ও সাজিদ জাকির। গত ২৩ আগস্ট গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটে। অভিযোগকারী যুবক এন্টালি এলাকার লালমোহন ভট্টাচার্য রোডের বাসিন্দা। সেদিনই তাঁর এক ভাই এসে বাড়ি সারানোর জন্য তাঁকে ৫০ হাজার টাকা দেন। ওই টাকা তাঁর কাছে ছিল। রাতে তিনি স্কুটিতে করে তপসিয়ায় তাঁর এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে যান। বাড়ি ফেরার পথে লোহার পুলের কাছে একটি দোকানে পিৎজা খান। তখনই এক ব্যক্তি নিজেকে বিশেষভাবে সক্ষম বলে পরিচয় দিয়ে জানায়, সে ভাল করে হাঁটতে পারে না। দয়ার বশে ওই যুবক ব্যক্তিটিকে নিজের বাইকে বসায়। বাড়ি যাওয়ার নামে বিভিন্ন রাস্তা ঘুরিয়ে তাঁকে কড়েয়ার একটি পুরনো বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ।
যেহেতু পায়ে সমস্যা, সে সিঁড়ি দিয়ে একা উঠতে পারে না। যুবককে উপরে উঠতে সাহায্য করার জন্য অনুরোধ জানায়। যুবক বাড়ির সামনে বাইক পার্ক করে ব্যক্তিটিকে নিয়ে দোতলায় ওঠেন। একটি ঘরের ভিতর ওই ব্যক্তিটিকে নিয়ে যাওয়ার পর দেখে, সেখানে রয়েছে আরও দু’জন। অভিযোগ, ছুরি দেখিয়ে তাঁর কাছ থেকে ওই নগদ ৫০ হাজার টাকা লুঠ করা হয়। এর পর অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে দু’দফায় তাঁর মোবাইল থেকে অনলাইনে ৩ হাজার ৩০০ টাকা ও ১৫ হাজার টাকা লুঠ করে ডাকাতরা। তিনি পালাতে গেলে তাঁকে প্রচণ্ড মারধরও করা হয়। এরপর জামাকাপড় জোর করে খুলিয়ে তাঁর অশ্লীল কিছু ছবি তুলে ব্ল্যাকমেলও করা হয় বলেও অভিযোগ। তাঁর মোবাইল বন্ধ করিয়ে স্কুটির চাবিও কেড়ে নেওয়া হয়।
তিনি কোনওমতে বাড়ি থেকে দৌড়ে পালিয়ে যান। নিজের বাড়িতে পৌঁছনোর পর দু’দিন আতঙ্কে ছিলেন। শেষে মঙ্গলবার কড়েয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত শুরু করে ওই বাড়িটির সন্ধান পায়। সিসিটিভির ফুটেজ দেখে একদিনের মধ্যেই রহিম আহমেদ ও সাজিদ জাকির নামে দুই ডাকাতকে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করে। বাকি একজন পলাতক। তার সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।