ফোন সারাই করে এ কী বিপদে পড়লেন কলকাতার মহিলা! হাজার হাজার পুরুষ চাইছেন একটাই ‘জিনিস’...
আজকাল | ২৯ আগস্ট ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: ফোন খারাপ হয়ে গেলে সেটি সারাতে দিয়ে থাকি আমরা সকলেই। কিন্তু ফোন সারানোর পর কলকাতার এই তরুণীর সঙ্গে যা হয়েছে তাতে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে তাঁর জীবন। তরুণীর অভিযোগ, মেরামতের দোকানের কর্মীরা তাঁর ব্যক্তিগত ভিডিওগুলি তাঁর সম্মতি ছাড়াই অ্যাক্সেস করেছেন এবং সেগুলি অনলাইনে ‘ফাঁস’ করেছেন। এর পরপরই, তিনি হাজার হাজার বিরক্তিকর মেসেজ পেয়েছেন সকলের কাছ থেকে। এই অগ্নিপরীক্ষা তাকে তাঁর সব সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলতে বাধ্য করেছে এবং তাঁকে সবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। মন খারাপ করে তিনি জানিয়েছে যে এমনকি তাঁর বাবা-মাও তাঁর সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছেন। যার ফলে তাঁর ‘গোটা জীবন ভেঙে পড়েছে’ বলে মনে হচ্ছে।
রেডিট-এ গিয়ে মহিলাটি লিখেছেন, “কলকাতার ফোন মেরামতের দোকানটি আমার ব্যক্তিগত ভিডিও ফাঁস করেছে। আমি জানি না এই আঘাত থেকে কীভাবে সেরে উঠব। আমি এখন পুরোপুরি ভেঙে পড়েছি। তারপর থেকে, আমার বাবা-মা আমার সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছেন। আমি আমার সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলেছি, আমার ফোন নম্বর পরিবর্তন করেছি এবং সবার থেকে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছি। আমি আর আমার ঘর থেকে বের হই না, লোকেদের এড়িয়ে চলি এবং আমার ফোন ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছি। আমার মনে হচ্ছে আমার পুরো জীবন ভেঙে পড়েছে এবং আমি জানি না আমি কখনই এই আঘাত থেকে সেরে উঠব।”
পোস্টটির প্রতিক্রিয়ায় একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “ওই অপরাধীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করুন, সমস্ত প্রমাণ সংগ্রহ করুন এবং একজন আইনজীবী নিয়োগ করুন। যদি আপনি কোনও নারীবাদী সংগঠনের সাহায্য নিতে পারেন, তাহলে তারা সাইবার ক্রাইম বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে আপনার সাহায্য করবে।”
অন্য একজন লিখেছেন, “আমি দু’বার ডিপফেকের শিকার হয়েছি, যেন কেউ আমার ইনস্টাগ্রাম পোস্ট নিয়ে এআই দিয়ে এডিট করার পর হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়েছে, এবং এটি এতটাই বাস্তব দেখাচ্ছে যে কেউ বিশ্বাস করতে পারে।”
একজন মন্তব্য করেছেন, “এটি আমার সবচেয়ে বড় ভয়, আমার গোপন জিনিস ফাঁস হয়ে যাওয়া এবং লোকেরা আমাকে জেনে যাওয়া। আমি কল্পনাও করতে পারছি না যে আপনি এখন কী পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। এর থেকে সেরে উঠতে অনেক সময় লাগবে, তবে ভাল দিক হল আপনি যদি এর জন্য নিজেকে দোষারোপ না করেন, তাহলে অন্য কেউ পারবে না।”
একজন লিখেছেন, “সব সময় তোমার ব্যক্তিগত ছবি এবং তথ্য (যেমন ব্যাঙ্ক নম্বর/আধার) এনক্রিপ্ট করা ফাইলে সংরক্ষণ করো। লোকাল নয়, ভাল ড্রাইভে সংরক্ষণ করো। গুরুত্বপূর্ণ, প্রায়শই ব্যবহৃত তথ্যগুলো লোকাল (কিন্তু এনক্রিপ্ট করা) ভাষায় সংরক্ষণ করো। এছাড়াও, WinRAR এনক্রিপশন ব্যবহার করো, কারণ আমি দেখেছি পাসওয়ার্ড ছাড়া এটা ভাঙা কঠিন (সম্ভবত অসম্ভব)।”
আরও একজন বলেছেন, “আমার এক প্রাক্তনের কাছে আমার ছবি ছিল এবং আমি যদি তাঁর সঙ্গে না থাকি তাহলে সে ওই ছবিগুলি মুছে ফেলবে না বলে হুমকি দিয়েছতে অস্বীকৃতি জানায়। আমি তার কথায় পাত্তা দেয়নি। আমি জানি এটি কেমন অনুভূতি হতে পারে। আমি জানি এটা তোমাকে কতটা শক্তিহীন এবং দুর্বল করে তোলে। শক্ত থাকো। একা একা সবকিছু মোকাবিলা করা অবশ্যই খুব ভীতিকর, কিন্তু একদিন সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।”
মহিলাটি তাঁর পুলিশে দায়ের করা অভিযোগের একটি স্ক্রিনশটও পোস্ট করেছেন। সাইবার পুলিশ তাঁকে জানিয়েছে যে মামলাটি মাহিলা থানায় পাঠানো হয়েছে। পুলিশ আরও জানিয়েছে, মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে আরও জানতে চাইলে তিনি সরাসরি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন নির্দ্বিধায়।