• ‘জয় বাংলা’ লেখা পাঞ্জাবি পরে কলেজে দাঁড়িয়েই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যদের পোশাক বিতরণ অধ্যক্ষের
    আনন্দবাজার | ২৮ আগস্ট ২০২৫
  • তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে পূর্বনির্ধারিত সেমেস্টার পিছিয়ে দেওয়ার জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে যাঁরা আবেদন জানিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে তিনিও ছিলেন। বৃহস্পতিবার সুরেন্দ্রনাথ সান্ধ্য কলেজচত্বরে দাঁড়িয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যদের পোশাক বিতরণ করলেন কলেজের সেই অধ্যক্ষ জাফর আলি আখান। তাঁর পরনেও ছিল ‘জয় বাংলা’ লেখা হলুদ পাঞ্জাবি। এই কর্মসূচির আয়োজন করেছিল রাজ্যের শাসকদলের ছাত্র সংগঠন। জাফর জানান, ছাত্র-ছাত্রীদের অনুরোধ রাখতেই তিনি এই পোশাক বিতরণ করেছেন। পাশাপাশি তিনি এ-ও জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সুরেন্দ্রনাথ সান্ধ্য কলেজে নির্বিঘ্নেই হয়েছে পরীক্ষা। পরীক্ষার্থীদের তরফে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি।

    বৃহস্পতিবার এক দিকে যখন সুরেন্দ্রনাথ সান্ধ্য কলেজে চলছিল সেমেস্টার, তখন কলেজচত্বরেই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যদের হলুদ উত্তরীয়, টিশার্ট, পাঞ্জাবি বিতরণ করা হয়। জাফর জানান, এই কর্মসূচির নেপথ্যে রয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। তাঁর কথায়, ‘‘মধ্য কলকাতা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ইউনিটের পক্ষ থেকে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। সদস্যদের টিশার্ট, উত্তরীয়, পাঞ্জাবি দেওয়া হয়। ওয়েবকুপা (তৃণমূল সমর্থিত অধ্যাপকদের সংগঠন), তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তরফে অনুদান দেওয়া হয়েছে। সেই টাকায় এই পোশাক কেনা হয়েছে।’’ এই কর্মসূচির সময়ে অধ্যক্ষের গায়েও ছিল সেই হলুদ পাঞ্জাবি, যার উপরে বসানো ‘জয় বাংলা’ লেখা লোগো। অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা, টিএমসিপি ইউনিটের সদস্যেরা এই কর্মসূচির আয়োজন করেছে। আমি উপরে ছিলাম। ওরা ডেকে নিয়ে গিয়েছে। বলল, আপনি দু’-একটা পোশাক দিয়ে দিন। অনুরোধ রেখেছি।’’

    তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকে দেওয়া ওই হলুদ পোশাক পরে সদস্যেরা মিছিল করে বৃহস্পতিবার মেয়ো রোডের সভায় যোগ দেন। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে সেখানে সভার আয়োজন করা হয়েছিল। সুরেন্দ্রনাথ কলেজের সান্ধ্য বিভাগের অধ্যক্ষ জাফর জানিয়েছেন, এই মিছিল কলেজের বাইরে থেকে শুরু হয়েছে। তাতে পরীক্ষার্থীদের কোনও সমস্যা হয়নি। পরীক্ষা শান্তিপূর্ণ ভাবেই মিটেছে। কোনও পরীক্ষার্থীর তরফে অসুবিধা কোনও অভিযোগও জমা পড়েনি।

    পড়ুয়া, অধ্যক্ষ, অধ্যাপক, শিক্ষাকর্মীদের একাংশের তরফ থেকে পরীক্ষার দিন পিছিয়ে দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শান্তা দত্ত দে-কে এই নিয়ে চিঠি দিয়েছিল অধ্যক্ষ এবং অধ্যাপকদের সংগঠন। তারা জানিয়েছিল, বৃহস্পতিবার যেহেতু তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস, তাই পরীক্ষার্থীরা কলেজে পৌঁছোতে সমস্যায় পড়তে পারেন। পরীক্ষার দিন পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যকে চিঠি দিয়েছিল উচ্চশিক্ষা দফতর। যদিও শান্তা স্পষ্টই জানিয়ে দেন, পরীক্ষার দিন তিনি পরিবর্তন করবেন না। সেই মতো নির্ধারিত দিনেই হয়েছে পরীক্ষা। যাঁরা পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন জাফরও। তিনি বলেন, ‘‘অনুমোদিত কলেজের অধ্যক্ষ হিসাবে অনুরোধ করেছিলাম। সরকারও করেছিল। বিভিন্ন কারণে পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়নি হয়তো। পরীক্ষার সূচি নির্ধারিত থাকে। তবে পরীক্ষা শান্তিপূর্ণ ভাবে হয়েছে। তা নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)