• মহালয়ার গানে উদ্দাম নাচতে হবে! বাংলায় ‘অবাঙালিয়ানার রমরমা’ নিয়ে তুমুল ক্ষোভ উগরে দিলেন ভাস্বর
    আজকাল | ২৮ আগস্ট ২০২৫
  • মাঝেমধ্যেই ব্যক্তিগত জীবনের কয়েক পশলা নানান রঙের ঘটনা সমাজমাধ্যমে ভাগ করে নেন অভিনেতা ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়। কখনও সখনও তাঁর সেইসব পোস্টে উঠে আসে নিজস্ব ভাবনা, প্রতিবাদ। সম্প্রতি, সেরকমই একটি পোস্ট করেছেন অভিনেতা যা প্রথম ঝলকে মজাদার মনে হলেও তার গভীরে লুকিয়ে রয়েছে অন্য বার্তা। এক অবাঙালি পরিচালকের নির্দেশনায় পুজো সংক্রান্ত একটি শুটিং করতে গিয়ে কী কী সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল তাঁকে, সেটাই এই পোস্টের প্রধান উপজীব্য।

    ভাস্বর লিখছেন, “অভিনয় জীবনে কতরকমের ঘটনার সাক্ষী হই প্রতিদিন তা নিয়ে একটা মোটা বই হয়ে যেতে পারে।
    কদিন আগে একটা shoot করছিলাম অবাঙালি এক পরিচালকের সঙ্গে (এখানকার নন)। মহালয়া related sequence এর shoot চলছিল।উনি বললেন এখানে আপনারা সবাই চা ঝালমুড়ি খাবেন। শুনে আমরা বললাম এরকম হয় না। তখন উনি বললেন তাহলে চা সিঙ্গাড়া? আবার আমরা বললাম দেখুন ভোর চারটের সময় কেউ এসব খায় না। অনেকে বিছানায় শুয়েই শোনে নাহলে বড়জোর চা খেতে খেতে। পছন্দ হলো না পরিচালকের। আমি জানতে চাইলাম রেডিওতে মহালয়া শুনছি এতে আটকাচ্ছে কোথায়? উনি বললেন জমছে না। You all need to do something. এক কাজ করুন মহালয়ার গানের সঙ্গে সপরিবারে নাচুন। What an idea sirji আমাদের সবার চোখ কপালে। বললাম মহালয়ার গানের সঙ্গে নাচলে আমাদের মেরে পৃথিবীছাড়া করে দেবে জনগণ। হতাশ হয়ে ক্ষান্ত দিলেন ভদ্রলোক।”
    (পোস্টের বানান অপরিবর্তিত রাখা হল)

    স্বভাবতই বিষয়টি নেটপাড়ার একটি বড় অংশ ভাল চোখে নেয়নি। ওই অবাঙালি পরিচালককে ‘অপদার্থ’ যেমন বলা হয়েছে তেমনই অভিনেতার প্রশ্নগশা করে তাঁর উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে – “…তবু তুমি বা তোমার মতো কিছু মানুষ ওই শুটিংয়ে ছিলে বলে তিনি ক্ষান্ত দিয়েছে। না হলে তথাকথিত কিছু শিল্পী যাদের কোনও কিছুতেই কিছু যায় আসে না, দিনের শেষে এ টাকাটা দেখেন তাঁরা তো নেচে আসতেন। ধন্যবাদ তোমাকে, নিজের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে অন্যায় না হতে দেওয়ার জন্য।”

    পুরো বিষয়টি বিশদে জানতে আজকাল ডট ইন যোগাযোগ করে অভিনেতার সঙ্গে। ভাস্বরের কথায়, “প্রথমত, কোনও অবাঙালি পরিচালক পুজো সংক্রান্ত শুটিং করতেই পারেন, তাতে আমার আপত্তি নেই। কিন্তু যে বিষয় নিয়ে সে কাজ করতে চলেছে, তা নিয়ে পড়াশোনা করে আসবে না? চর্চা করবে না? সেদিন আমি সহ বাকি অভিনেতা-অভিনেত্রীরা প্রতিবাদ করেছিলেন বলেই মহালয়ার গানের সঙ্গে আমাদের নাচতে হয়নি শেষপর্যন্ত! সেদিন যদি আমরা না থেকে শুটে এক সেট অবাঙালি অভিনেতা-অভিনেত্রীরা থাকতেন, কে বলতে পারে ওঁদের যদি এরকম নির্দেশ দেওয়া হত...ওঁরা হয়ত সেটা করেই দিতেন! জানি না কী বলব। আরও একটা কথা। এই প্রসঙ্গে আমার প্রশ্ন, বাংলা সংস্কৃতিতে এত অবাঙালিয়ানার রমরমা কেন হবে? তার জন্য দায়ী এই নির্মাতাদের এক্সপেরিমেন্ট করার বাতিক! সেইজন্যই রিয়্যালিটি শো-এ চণ্ডালিকা নিয়ে বিতর্ক হল! অবাঙালিয়ানার চর্চা করতে গিয়ে, ট্রেন্ডিং হতে গিয়ে আমাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।”

    প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই প্রথমবার শুভশ্রীর সঙ্গে জুটি বেঁধে একটি বিজ্ঞাপনে কাজ করেছেন ভাস্বর। উত্তর কলকাতার লাহা বাড়িতে চলেছে সেই বিজ্ঞাপনী শুট। সেই বিজ্ঞাপনী ছবিতে অভিনেত্রীর স্বামীর ভূমিকায় দেখা যাবে ভাস্বরকে। সেদিন শুভশ্রী ছিলেন স্নিগ্ধ পিচরঙা সালোয়ার-কামিজে। অন্যদিকে, মেরুন রঙের পাঞ্জাবি পরেছিলেন ভাস্বর। অন্যদিকে, অনিলাভ চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম ছবি ‘বেলা’তে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর সঙ্গে জুটি বেঁধে কাজ করেছেন এই অভিনেতা। এই ছবিটি নিয়ে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর সঙ্গে তাঁর চারটি ছবি। ‘আলো’, ‘আহা রে’, ‘আমার লবঙ্গলতা’। ‘আহা রে’-তে নায়ক হয়েছিলেন ভাস্বর। কিন্তু সেটা খুব অল্প সময়ের জন্য।

    এছাড়াও টলিপাড়ার পাশাপাশি মুম্বইতেও কাজ করছেন ভাস্বর। স্নেহাশিস চক্রবর্তীর বাংলা সিরিয়াল ‘গীতা এলএলবি’র হিন্দিতে রিমেকে দেখা যেতে চলেছে তাঁকে।হিন্দি এই ধারাবাহিকের নাম 'অ্যাডভোকেট অঞ্জলি অবস্থি'। মুখ্য চরিত্রে দেখা যাবে শ্রীতমা মিত্রকে। এই চরিত্রের মাধ্যমে শ্রীতমারও হিন্দি ধারাবাহিকে হাতেখড়ি হতে চলেছে। তাঁর বিপরীতে রয়েছেন অঙ্কিত রায়জাদা। গল্পে ভাস্বরকে দেখা যাবে ‘গৌরব সিং রাজপুত’-এর চরিত্রে।ব্লুজ প্রোডাকশন হাউজের ব্যানারে স্টার প্লাসে সম্প্রচারিত হচ্ছে ‘অ্যাডভোকেট অঞ্জলি অবস্থি’।
  • Link to this news (আজকাল)