কোয়েলের পর অনীক! ভারোত্তোলনে সোনা হাওড়ার ১৭ বছরের কিশোরের, স্বপ্ন অলিম্পিক্সে নামার
আনন্দবাজার | ২৮ আগস্ট ২০২৫
মঙ্গলবার অহমদাবাদে ভারোত্তোলনের কমনওয়েলথ চ্যাম্পিয়নশিপে বিশ্বরেকর্ডের হ্যাটট্রিক করেছিলেন হাওড়ার মেয়ে কোয়েল বর। তার দু’দিন পর হাওড়ার কিশোর অনীক মুদি সোনা জিতলেন। ১৭ বছরের কিশোর কমনওয়েলথ চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জিতেছেন। হাওড়ার পাঁচলার দেউলপুর গ্রামে এই খবর আসতেই বইছে খুশির হাওয়া। অনীকের মা জানিয়েছেন, ছেলের স্বপ্ন অলিম্পিক্সে নামার।
পাঁচলার দেউলপুরের গোলুইপাড়ায় থাকেন প্রাক্তন জাতীয় ভারোত্তোলক শ্রীকান্ত মুদি। বেশ কয়েক বার তিনি জাতীয় প্রতিযোগিতায় পদক জিতেছিলেন। খেলার সূত্রেই তিনি রেলে চাকরি পান। ছেলে অনীককে ভারোত্তোলক করার জন্য বাড়িতেই একটি আখড়া তৈরি করেন তিনি। ২০১৯ সাল থেকে অনীককে তিনি নিজেই প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন।
বাবার প্রশিক্ষণে অল্প বয়সেই নজর কাড়েন অনীক। হাওড়া জেলা ও রাজ্যের একাধিক প্রতিযোগিতায় সোনা জেতেন। চলতি বছরের জুন মাসে পাতিয়ালায় জাতীয় শিবিরেও নির্বাচিত হন তিনি। অহমদাবাদে অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ ভারোত্তোলন চ্যাম্পিয়নশিপে ৬৫ কেজি বিভাগে ২৩৮ কেজি ওজন তুলে সোনা জিতেছেন অনীক। স্ন্যাচে ১০৩ কেজি এবং ক্লিন অ্যান্ড জার্কে ১৩৫ কেজি ওজন তোলেন অনীক।
ঘরের ছেলে যখন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ওজন তুলতে ব্যস্ত তখন বাবা-মা, ঠাকুরমা এবং গ্রামের প্রতিবেশীদের চোখ ছিল টিভির পর্দায়। পোডিয়ামে অনীকের গলায় সোনার পদক ঝুলতেই খুশির হওয়া গোটা পরিবারে। অনীকের মা পুষ্প মুদি বলেন, “ছেলেকে নিয়ে গর্ব হচ্ছে। আমরা খুব খুশি। গোটা গ্রামের মানুষ আনন্দে মিষ্টি খেতে এসেছে। ছেলের স্বপ্ন ও অলিম্পিক্সে খেলবে।” মাংস ও মিষ্টি খেতে ভালবাসেন অনীক। ছেলে বাড়ি এলে মা নিজের হাতে তাঁর পছন্দে খাবার রান্না করে খাওয়াবেন।
খেলোধুলোর পাশাপাশি পড়াশোনাও চলছে অনীকের। গ্রামেরই একটি স্কুলে দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র তিনি। অনীকের এক আত্মীয় বিশ্বজিৎ মুদি বলেন, “গ্রামের মানুষ সকলেই খুব খুশি। আমরা চাই অনীক আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় আরও সাফল্য পাক। গ্রামে ফিরলে ওকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে।”
এর আগে ওই একই প্রতিযোগিতায় মোট ১৯২ কেজি ওজন তুলে যুব ভারোত্তোলনে বিশ্বরেকর্ড করেন কোয়েল। সেই সঙ্গে জিতে নেন সোনাও। যুব ভারোত্তোলনে ৫৩ কেজি বিভাগে আগের বিশ্বরেকর্ড ছিল ১৮৮ কেজি। কোয়েল সহজেই তা ভেঙে দেন। ক্লিন অ্যান্ড জার্ক বিভাগে ১০৭ কেজি ওজন তোলেন কোয়েল। এই বিভাগে বিশ্বরেকর্ড ছিল ১০৫ কেজি। স্ন্যাচে ৮৫ কেজি ওজন তুলে বিশ্বরেকর্ড স্পর্শ করেন হাওড়ার মেয়ে।