• হরিজন সম্প্রদায়ের ব্যক্তির দাহতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ব্রাহ্মণ-বৈষ্ণবদের, সমস্যা মেটাতে শ্মশানে পুলিশ
    এই সময় | ২৯ আগস্ট ২০২৫
  • শ্মশানেও আমরা-ওরা! ‘নীচু জাতের’ লোকের দেহ শ্মশানে দাহ করতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠলো সমাজের উঁচু জাতের লোকদের বিরুদ্ধে। হরিজন সম্প্রদায়ের ব্যক্তির দেহ দাহতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ব্রাহ্মণ এবং বৈষ্ণবদের বিরুদ্ধে। এই নিয়ে উত্তেজনা ছড়ানোর পরেই হস্তক্ষেপ করে পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতিতেই ওই ব্যক্তির দেহ দাহ করা হয় বৈদ্যুতিক চুল্লিযুক্ত সরকারি শ্মশানে। পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন থানার ঘটনা।

    জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন দাঁতন থানার খন্ডরুই গ্রামের হরিজনপাড়ার বাসিন্দা শঙ্কর ঘোড়ই (৫৫)। বুধবার রাতে বাড়িতেই মৃত্যু হয় তাঁর। বৃহস্পতিবার সকালে গ্রামের পশ্চিমপাড়ার বৈদ্যুতিক চুল্লিযুক্ত সরকারি শ্মশানেই তাঁকে দাহ করার সিদ্ধান্ত নেন পরিবারের লোকজন। তাঁদের এই সিদ্ধান্ত ঘিরেই উত্তেজনা ছড়ায় সেই শ্মশানে।

    বৃহস্পতিবার সকালে শঙ্করের দেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার পরে তাঁর পরিবারের সদস্যরা দেখেন সেখানে অনেক লোক দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁরা শঙ্করের দেহ সেই শ্মশানে দাহ করতে দিতে নারাজ। হরিজনপাড়ায় যে শ্মশান আছে, সেখানেই শঙ্করকে দাহ করার কথা বলেন তাঁরা।

    শঙ্করের ভাই হেমন্তর অভিযোগ, প্রথমে ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের লোকজন এসে বাধা দেয়। পরে সেখানে পৌঁছে যায় বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের মানুষও।

    এ নিয়েই দু’পক্ষের মধ্যে শুরু হয়ে যায় তুমুল বাক-বিতণ্ডা। খবর পেয়েই সেখানে বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে আসেন দাঁতন থানার আইসি তীর্থসারথী হালদার। ওই সরকারি শ্মশানে সবার সমান অধিকারর আছে বলে জানিয়ে দেন তিনি। সেখানে কাউকে দাহ করতে না দিলে পুলিশ কড়া পদক্ষেপ করবে বলেও জানিয়ে দেন তিনি। তার পরেই পুলিশের উপস্থিতিতে ওই শ্মশানে শঙ্করের দেহ দাহ করা হয় বলে জানান হেমন্ত। এখনও যে জাতপাত নিয়ে সমস্যার মধ্যে পড়তে হতে পারে তা তাঁরা ভাবেননি বলেও জানান তিনি।

    দাঁতনের বিধায়ক বিক্রমচন্দ্র প্রধান বলেন, ‘একবিংশ শতকেও জাতপাত নিয়ে এই অশান্তি মেনে নেওয়া যায় না। তবে, পুলিশ ও প্রশাসন পদক্ষেপ করেছে। ভবিষ্যতে এই ধরনের সমস্যা না হয় আমরা তা নিশ্চিত করতে চাই।’

  • Link to this news (এই সময়)