ডেঙ্গুর সার্ভেতে গিয়ে হেনস্তার মুখে মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী, থানায় অভিযোগ
বর্তমান | ২৯ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি ও সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: ডেঙ্গুর সার্ভে করতে গিয়ে ফের আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মীরা। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি শিলিগুড়ি শহরের পাইপ লাইন এলাকায় ঘটে। অভিযোগ, ডেঙ্গুর সার্ভে করতে গিয়ে জমা জল নিয়ে প্রশ্ন তোলায় চার মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীর গায়ে হাত দেন বাড়ির পুরুষরা। এনিয়ে এনজেপি থানায় অভিযোগ জানিয়েছে শিলিগুড়ি পুরসভা। দুই সপ্তাহের মধ্যে এ ধরনের দু’টি ঘটনা ঘটল শহরে। এর ফলে ডেঙ্গুর সার্ভে, মশার আঁতুড়ঘর নিধন অভিযান ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা।
পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ দুলাল দত্ত বলেন, ডেঙ্গুর সার্ভে করতে যাওয়া স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর আক্রমণের ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি পুলিসের কাছে জানানো হয়েছে।
শিলিগুড়ির ডেপুটি পুলিস কমিশনার রাকেশ সিং বলেন, ওই ঘটনা নিয়ে থানায় অভিযোগ হয়েছে। অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখে যথাযথ পদক্ষেপ করা হবে।
স্বাস্থ্যদপ্তরের নির্দেশে মশাবাহিত ডেঙ্গু মোকাবিলায় বাড়ি বাড়ি সার্ভে শুরু করেছে পুরসভা। সকালে চার স্বাস্থ্যকর্মীর একটি দল ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের পাইপ লাইন এলাকার একটি বাড়িতে যান। ওই বাড়িতে জমা জল দেখে প্রশ্ন তোলেন স্বাস্থ্যকর্মীদের টিম। দলে ভেক্টর কন্ট্রোল টিমের সুপারভাইজার, দু’জন সার্ভে কর্মী এবং একজন নির্মলসাথী ছিলেন। প্রত্যেকেই মহিলা। তাঁরা বাড়িতে ঢোকায় পাল্টা প্রশ্ন তোলেন বাড়ির মালিক। এনিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এক-দু’কথায় উত্তেজিত হয়ে ওই স্বাস্থ্যকর্মীদের গায়ে বাড়ির পুরুষরা হাত দেন বলে অভিযোগ। এমনকী, ঘটনাটি নিয়ে মুখ খুললে তাঁদের দেখে নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
ওই স্বাস্থ্যকর্মীদের তরফে প্রিয়াঙ্কা মণ্ডল বলেন, ওই বাড়ির বিভিন্ন জায়গায় জল জমে রয়েছে। সেখানে কিলবিল করছে মশার লার্ভা। ওই জল পরিষ্কার করতে গেলে বাড়ির পুরুষরা আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এমনকী, গায়ে হাতও দেওয়া হয়। এর আগেও সার্ভে টিমের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন ওই বাড়ির লোকেরা। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখছি।
যদিও পুলিসের কাছে অভিযুক্তরা জানিয়েছেন, তর্ক হলেও মারধরের ঘটনা ঘটেনি। কয়েকদিন আগে পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদের ওয়ার্ড ৩৮ নম্বরে একটি আবাসনের ফ্ল্যাটে ডেঙ্গুর সার্ভে করতে গিয়ে আক্রান্ত হন কর্মীরা। ওই ঘটনা নিয়ে চারজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ হয়েছে। গত বছর এ ধরনের ঘটনা ৪, ৫ ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডেও ঘটেছিল। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ বলেন, নাগরিকদের সহায়তা ছাড়া ডেঙ্গু মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। এব্যাপারে অধিকাংশ শহরবাসী সহায়তা করায় এবার ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে। কিন্তু কিছু মানুষ এখনও সহযোগিতা করছেন না। নিজস্ব চিত্র।