সংবাদদাতা, ডোমকল: ভোটমুখী বিহারে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা(এসআইআর) সদ্য শেষ হয়েছে। বাংলাতেও এসআইআর হবে কিনা-তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। সেজন্য ইতিমধ্যেই ডোমকল মহকুমাজুড়ে নথি সংশোধনের হিড়িক পড়ে গিয়েছে। আর এই দৌড়ঝাঁপের সঙ্গে অনেকেরই এফিডেভিট বা হলফনামার প্রয়োজন পড়ছে। তাই ডোমকল আদালতে এফিডেভিট করানোর সংখ্যা একলাফে ৮-১০গুণ বেড়ে গিয়েছে।
জন্ম শংসাপত্র, আধার, ভোটার ও রেশন কার্ড-প্রায় সমস্ত নথিতেই অনেক মানুষের নাম, বয়স, ঠিকানায় গরমিল রয়েছে। সেইসঙ্গে বানানজনিত গরমিল তো আছেই। সেজন্য বিভিন্ন নথি সংশোধন করছেন মানুষ। আধার বা রেশন কার্ড সামান্য কাগজপত্রের ভিত্তিতে সংশোধন হয়ে গেলেও জন্ম শংসাপত্র সংশোধনে বেশি ঝক্কি। এছাড়া, যাঁরা আগে জন্ম শংসাপত্র নেননি, অথবা পুরনো হাতে লেখা শংসাপত্র ডিজিটাল করতে চাইছেন, তাঁদেরও এখন ব্যাপক দৌড়ঝাঁপ করতে হচ্ছে।
প্রান্তিক এলাকায় একসময় বহু শিশুর বাড়িতেই জন্ম হতো। তখন শংসাপত্রকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হতো না। কিন্তু এখন এসআইআর আবহে জন্ম শংসাপত্র খুবই গুরুত্বপূর্ণ নথি হয়ে উঠেছে। অনেকের জন্ম শংসাপত্রে নামের বানান সহ নানা ভুল রয়েছে। তাঁদের নোটারি, কিংবা এগজিকিউটিভ বা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে হলফনামা দিতে হচ্ছে। যাঁরা এতদিন জন্ম শংসাপত্র নেননি, তাঁদের ওই হলফনামার মাধ্যমে কারণ জানাতে হচ্ছে। এরপর সেই এফিডেভিটের কপি নিয়ে পুরসভা, পঞ্চায়েতের দরজায় আবার দৌড়ঝাঁপ করতে হচ্ছে।
মাত্র কয়েকসপ্তাহের মধ্যেই জন্ম শংসাপত্র-সংক্রান্ত এফিডেভিট করাতে আসা মানুষের ভিড় বেড়েছে প্রায় ৮-১০গুণ বেড়ে গিয়েছে। আগে রোজ সমস্ত আইনজীবী মিলিয়ে ৫০-১০০জন এফিডেভিট করাতেন। এখন সেই সংখ্যা ৭০০-৮০০’র ঘরে দাঁড়িয়েছে। ডোমকল মহকুমা আদালতে আইনজীবীদের সেরেস্তা এখন রোজ ভিড়ে ঠাসা থাকে। ডোমকলের আইনজীবী রাশিদুল আলম বলেন, বিহারে এসআইআর-এর খবর জানার পর থেকেই মানুষ আতঙ্কে নথি গুছিয়ে নিতে চাইছেন। আগে যেটা নিয়ে কেউ মাথা ঘামাত না, সেই জন্ম শংসাপত্র নিয়েই এখন সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে। আমাদের কাছে মূলত দু’ধরনের মানুষ বেশি আসছেন। যাঁদের জন্ম শংসাপত্রে ভুল আছে এবং যাঁরা এতদিনেও ওই শংসাপত্র তোলেননি। দু’ক্ষেত্রেই এফিডেভিট করাতে হচ্ছে।
ডোমকলের বাসিন্দা সাবিনা খাতুন বলেন, আমার ছেলের জন্মের সময় জন্ম শংসাপত্র নেওয়া হয়নি। কিন্তু এখন এসআইআর-এর কথা শুনে সমস্ত কাগজপত্র গুছিয়ে রাখছি। এফিডেভিট করে জানাতে হল, অবহেলা করে এতদিন জন্ম শংসাপত্র তুলিনি।