• বাঁকুড়ায় হঠাৎ ধর্মঘট বেসরকারি বাস মালিকদের, জেলায় যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে, ক্ষোভ
    বর্তমান | ২৯ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: সময়সূচি বা টাইম টেবিল নিয়ে বিবাদের জেরে বৃহস্পতিবার দুপুরে হঠাৎ করে বাঁকুড়ায় বেসরকারি বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিবাদ নিষ্পত্তির দাবি তুলে বাস মালিক ও কর্মীরা ধর্মঘট শুরু করে দেন। ফলে যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে ওঠে। দুপুরের কাঠফাটা রোদে গোবিন্দনগর বাসস্ট্যান্ড সহ জেলার বিভিন্ন স্টপে দীর্ঘক্ষণ বাসের জন্য যাত্রীদের হাপিত্যেশ করে বসে থাকতে হয়। দুপুর আড়াইটা নাগাদ যাত্রীরা স্ট্যান্ডের সামনে রাস্তায় বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখান। অবিলম্বে বাস চালানোর দাবি জানান। পরে পুলিস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিকেলে পুলিস আলোচনার মাধ্যমে ধর্মঘট তোলে। তবে এদিন বাস চলাচল পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি।

    বাঁকুড়া বাস মালিক কল্যাণ সমিতির সম্পাদক সঞ্জীব শীট বলেন, পরিবহণ দপ্তরকে সংঘাতহীন ও ত্রুটিমুক্ত সময়সূচি ঘোষণা করতে হবে। তা না হলে বাসের রেষারেষি কমবে না। রেষারেষির জেরে মাঝেম঩ধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটছে। তাতে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। বাসের কর্মীদের আমরা ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিতে পারি না। অবিলম্বে প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলন হবে। 

    বাঁকুড়ার পুলিস সুপার বৈভব তেওয়ারি বলেন, উচ্চ আদালতের রায়ে একটি বাসকে এদিন পুলিসি প্রহরায় চালানোর ব্যবস্থা করা হয়। অন্যান্য বাসের মালিকরা সেটিকে চলতে দেবেন না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। তার ফলে সমস্যা হয়েছিল। আদালতের রায় মানতে আমরা বাধ্য। আবার বাস মালিকদের যাতে সমস্যা না হয়, তাও দেখতে হবে। দ্রুত আমরা মালিকদের নিয়ে বৈঠকে বসব। ওই বৈঠকে পরিবহণ দপ্তরের আধিকারিকদেরও ডাকা হবে। বিষ্ণুপুরের বাসিন্দা সুকুমার মণ্ডল, তালডাংরার কলেজ ছাত্রী বিপাশা রায় বলেন, পূর্ব ঘোষিত বাস ধর্মঘট হলে জরুরি কাজ ছাড়া মানুষ বাড়ি থেকে বের হয় না। কেউ প্রয়োজনে বেরলে বিকল্প ব্যবস্থা করে নেয়। কিন্তু, এদিন দুপুর ১২টার পর থেকে হঠাৎ করে বাস বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে আমরা দীর্ঘক্ষণ বাঁকুড়া শহরে আটকে পড়ি। বিকেলে ছোট গাড়িতে চেপে বাড়ি ফিরতে হয়েছে। 

    উল্লেখ্য, এসটিএ পারমিটের একটি বাসকে নিয়ে এদিন সমস্যার সূত্রপাত হয়। বাঁকুড়া-খড়িকামাথানি রুটের ওই বাসের সময়সূচি নিয়ে বাঁকুড়ার বাস মালিকরা আপত্তি তোলেন। বাসটিকে বাঁকুড়ায় ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে মালিকরা হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। ফলে ওই বাসের মালিক আদালতের দ্বারস্থ হন। পুলিস এদিন পৌনে ১২টা নাগাদ বাসটিকে পাহারা দিয়ে স্ট্যান্ডে ঢোকা ও বের করার ব্যবস্থা করে। তাতেই অন্যান্যরা বেঁকে বসেন। শুরু হয় ধর্মঘট। ওই বাসটি বাঁকুড়া শহরে ঢুকলে অন্য কোনও বাস চলবে না বলে মালিকদের পাশাপাশি কর্মীরাও জানিয়ে দেন। কারণ ওই বাসের সময়েই আগে থেকে অন্য বাস সংশ্লিষ্ট রুটে চলাচল করে। তা না খতিয়ে দেখেই পারমিট ইস্যু করা হয়েছে বলে বাস মালিকরা অভিযোগ করেন। ঘটনায় পরিবহণ দপ্তরের বিরুদ্ধে বাস মালিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বাঁকুড়া সদর থানা ও ট্রাফিক পুলিসের আধিকারিকরা বাস মালিকদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করেন। শুরুর দিকে বাস মালিক ও কর্মীরা ধর্মঘট দীর্ঘস্থায়ী করার ব্যাপারে অনঢ় থাকলেও বিকেলে বরফ গলে। তারপর বাস চলাচল শুরু হয়।   
  • Link to this news (বর্তমান)