• ভূস্বর্গে বৃষ্টি কমায় স্বস্তি, চিন্তা বাড়াচ্ছে তেলঙ্গানা
    এই সময় | ২৯ আগস্ট ২০২৫
  • এই সময়: বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা কমলেও স্বস্তি ফিরছে না ভূস্বর্গে। মঙ্গলবার বৈষ্ণোদেবী মন্দিরে যাওয়ার ট্রেকিং রুটে ধস নেমেছিল। সেখানের বোল্ডার, কাদা–পাথরের স্তূপ সরিয়ে ৩৪ জন তীর্থযাত্রীর দেহ উদ্ধার হয়েছে। ফলে গত কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টি–ধসে জম্মু–কাশ্মীরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪১। বৃহস্পতিবারও উধমপুর–রামবান বেল্টে বেশ কয়েকটি জায়গায় ধস নামার খবর মিলেছে, ফলে বন্ধ ছিল জম্মু–শ্রীনগর ন্যাশনাল হাইওয়ে।

    তবে, বৃহস্পতিবার ভারী বৃষ্টি না হওয়ায় ঝিলম এবং অন্যান্য নদীর জলস্তর কমতে শুরু করেছে। দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগে ঝিলমের জল এখন বিপদসীমার নীচে দিয়ে বইছে। শ্রীনগরে ঝিলমের জল বিপদসীমার উপরে থাকলেও জলস্তর কমছে। তবে আশঙ্কা বাড়াচ্ছে আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস। শনি এবং রবিবার জম্মুর একাধিক জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ–সহ ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। কাশ্মীরের ডিভিশনাল কমিশনার অংশুল গর্গ বলেন, ‘জলস্তর নামছে, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। অযথা আশঙ্কার কারণ নেই, তবে আগামী দু’সপ্তাহ কাশ্মীরের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। নদীর তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের আগামী ১০–১৫ দিন সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগ ২৪ ঘণ্টা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে।’

    হিমাচল প্রদেশে অবশ্য বৃহস্পতিবারও ভারী বৃষ্টির খবর মিলেছে। বানালায় ধস নামার কারণে এ দিনও বন্ধ ছিল চণ্ডীগড়–মানালি হাইওয়ে, তবে ভেঙে পড়া রাস্তা মেরামতির কাজ চলছে। প্রবল বৃষ্টির ফলে কুলুর হাইওয়ের একাংশ ভেঙে ধুয়ে গিয়েছে! এ দিকে, উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজ, বারাণসী, মুজফ্‌ফরনগরে বন্যা সতর্কতা জারি হয়েছে। গঙ্গার জল ফুলেফেঁপে উঠে বারাণসীর অধিকাংশ ঘাট ডুবিয়ে দিয়েছে, ফলে আরতি এবং শেষকৃত্যের কাজে সমস্যা হচ্ছে। ‘গঙ্গা সেবা নিধি’র ম্যানেজাররা জানান, গঙ্গার বেড়ে ওঠা জলস্তর দশাশ্বমেধ ঘাটের নীচের অংশ ডুবিয়ে দিয়েছে, ফলে গঙ্গা তীরবর্তী বিল্ডিংয়ের ছাদে আরতির ব্যবস্থা করতে বাধ্য হচ্ছেন আয়োজকরা। হরিশ্চন্দ্র এবং মণিকর্ণিকা ঘাট জল ডুবে যাওয়ায় দাহকার্য করা হচ্ছে নিকটবর্তী ভবনগুলোর ছাদে। গঙ্গার ফুলে ওঠা জলে অর্ধেক ডুবে গিয়েছে দশাশ্বমেধ ঘাটের শীতলা মাতা মন্দির।

    এ দিকে, ছত্তিসগড়ের বস্তার ডিভিশন বন্যায় ভাসছে। সেখানে আট জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। ভেঙে পড়েছে অন্তত শ’পাঁচেক বাড়ি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে প্রশাসনিক সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন ছত্তিসগড়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেও সাঁই। নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে অন্তত দু’হাজার মানুষকে। একই অবস্থা দক্ষিণের তেলঙ্গানারও।

    গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড বৃষ্টির সাক্ষী থেকেছে তেলঙ্গানার কামারেড্ডি এবং মেডাক জেলা। কামারেড্ডির রাজমপেট এলাকায় ২৪ ঘণ্টায় ৪৪ সেমিরও বেশি বৃষ্টি হয়েছে। মোট ২৩টি এলাকায় বৃষ্টি হয়েছে ২০ সেন্টিমিটারের বেশি, যার মধ্যে কামারেড্ডির ১০টি, নির্মলের চারটি, মেডাকের ছ’টি এলাকা রয়েছে। ৫০ বছরের মধ্যে অল্প সময়ে এত বৃষ্টি দেখেনি কামারেড্ডি এবং মেডক। দুই জেলাতেই হড়পা বানের সতর্কতা রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।

  • Link to this news (এই সময়)