• 'ওরা বর-বউ মিলে কালা জাদু করছে', বিহারে পিটিয়ে খুন যুবককে, থেঁতলে দিল যুবতীকে
    আজকাল | ২৯ আগস্ট ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: একদিকে  বিজ্ঞানের অগ্রগতি। অন্যদিকে কুসংস্কার। সন্দেহ। ভোটমুখী বিহারে যা ঘটে গেল, তাতে শিউরে উঠছেন মানুষ। সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, 'কালা জাদু' সন্দেহে বিহারে এক যুবককে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। তাঁর স্ত্রীকেও বেধড়ক মারধোর করা হয়েছে। 

    ঘটনা প্রসঙ্গে বুধবার বিহার পুলিশ জানিয়েছে, বিহারের নওয়াদায় এক ব্যক্তিকে কালা জাদু করার অভিযোগে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে এবং তার স্ত্রীকে নির্মমভাবে মারধোর করা হয়েছে।

    ৫৫ বছর বয়সি গয়া মাঞ্জি এবং তাঁর স্ত্রী সমুদ্রী মাঞ্জি নামে নিহতদের বিরুদ্ধে বারবার কালা জাদু করার অভিযোগ আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র পুলিশ অফিসার অভিনব ধীমান। জানা গিয়েছে, গোটা ঘটনাটি ঘটেছে একটি পার্টিকে কেন্দ্র করে। মোহন মাঞ্জির আয়োজিত একটি পার্টিতে উপস্থিত ছিলেন ওই দু' জনও। অভিযোগ, অনুষ্ঠানের মাঝেই বারেবারে বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল ডিজে। আর সেখান থেকেই সমস্যার সূত্রপাত। বারবার ডিজে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওই দম্পতির বিরূদ্ধে ডিজে'র উপর কালা জাদু করার অভিযোগ উঠে এসেছে।  জানা গিয়েছে তারপরেই ওই দু' জনের উপর শুরু হয় মারধোর। যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত যুবতী। ঘটনায় মোহন মাঞ্জি নামের ওই ব্যক্তি-সহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে তাঁদের মধ্যে ন' জন মহিলা।  

    অতি সম্প্রতি আরও একটি বিষয়ে ব্যাপক হইচই হয়। সেখানেও উঠে আসে কালা জাদু বিষয়টি। ঘটনাস্থল এজলাস। আগস্ট মাসেই দ্বিতীয় সপ্তাহেই সামনে আসে এই ঘটনা। জানা যায়, শুনানি চলাকালীন হঠাৎই এক অভিযুক্ত মুঠোভর্তি ভাত ছুড়ে দেন মেঝেতে। মুহূর্তেই থমকে যায় বিচারকাজ। উপস্থিত আইনজীবীদের একাংশের দাবি, ঘটনাটির নেপথ্যে  থাকতে পারে কালাজাদু। শেষপর্যন্ত আদালতের শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ওই অভিযুক্তকে সেদিন আদালত চলা পর্যন্ত কারাবাসের সাজা ও দু'হাজার টাকা জরিমানা করেন বিচারক।

    ঘটনাটি ঘটে ১১ অগস্ট। অতিরিক্ত সেশন বিচারক শেফালি বারনালা ট্যান্ডনের এজলাসে তখন শুনানি চলছে। আচমকা অভিযুক্ত মেঝেতে ভাত ছুড়ে দেন। আদালতের কর্মী ও আইনজীবীরা বিচারককে জানান, মেঝেতে ভাত ছড়িয়ে থাকায় কেউই আর মঞ্চের দিকে এগোতে পারছেন না।

    বিচারক নির্দেশ দেন, অভিযুক্ত যেন নিজেই ভাত কুড়িয়ে মেঝে পরিস্কার করে দেন। সেই সঙ্গে ডাকা হয় ঝাড়ুদারকে। প্রায় ১০ মিনিট বন্ধ থাকে শুনানি। আইনজীবীদের আশঙ্কা, এটা আসলে কালাজাদুর কৌশল। পরে অভিযুক্তের আইনজীবী ভার্চুয়ালি আদালতে হাজির হয়ে সময় চান। অভিযুক্ত নিজেও হাঁটু গেড়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তবে বিচারক স্পষ্ট ভাষায় জানান, আদালত ন্যায়বিচারের মন্দির। সেখানে শৃঙ্খলা ও মর্যাদা রক্ষা অত্যন্ত জরুরি। এ ধরনের আচরণ শুধু শুনানিই বিঘ্নিত করে না, সাধারণ মানুষের চোখে বিচারব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতাকেও প্রশ্নের মুখে ফেলে।বিচারক আরও বলেন, মহারাষ্ট্রে কালাজাদু ও অমানবিক কুসংস্কার প্রতিরোধে বিশেষ আইন কার্যকর রয়েছে। অথচ অভিযুক্ত যিনি পেশায় একজন সার্জন, তিনি শিক্ষিত সমাজের মানুষ হয়েও এই ধরনের অবিবেচক আচরণ করেছেন। এর ফলে প্রায় ১৫-২০ মিনিট আদালতের কার্যক্রম স্তব্ধ থেকেছে।

    ওই বিষয়ে আশঙ্কা হয়েছিল কালা জাদুর। তবে ব্ল্যাক ম্যাজিক বা কালা জাদু সন্দেহে যে নৃশংস ঘটনা ঘটে গিয়েছে বিহারে, তাতে শিউরে উঠছেন সাধারণ মানুষ।
  • Link to this news (আজকাল)