দেশের শহরাঞ্চলের প্রায় অর্ধেক মহিলাই নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে নিশ্চিত নন! বার্ষিক রিপোর্টে উঠে এল চিন্তা বাড়ানো তথ্য
আজকাল | ২৯ আগস্ট ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: ঘরে ফেরার পথ কতটা সহজ? রাত বাড়লে সহজ? সহজ দিনের আলোয়? মেয়েরা এমন কথা ভাবেন, এমন প্রশ্ন শোনেন। ছবিটা কোনও নির্দিষ্ট জায়গার নয়। কোনও জেলা, রাজ্য কিংবা দেশের নয়। এই ছবি কম বেশি সর্বত্র। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের নানা রাজ্যে মহিলাদের উপর অকথ্য অত্যাচার, ধর্ষণের অভিযোগ উঠে এসেছে। উঠে এসেছে পণ প্রথার নৃশংস পরিণামের অভিযোগও। তার মাঝেই সামনে এসেছে, এক তথ্য। সেই তথ্য চিন্তা বাড়াচ্ছে বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের।
সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনের তথ্য, বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের শহরাঞ্চলের ৪০ শতাংশ নারী তাদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত। নারী ২০২৫(NARI2025) তাদের বার্ষিক রিপোর্টে মহিলাদের উপর অত্যাচার, হয়রানির পরিসংখ্যান তুলে ধরেছে বলে খবর সূত্রের। তথ্য, ভারতের শহরাঞ্চলের ৪০ শতাংশ মহিলা নিরাপদ বোধ করেন না। জাতীয় বার্ষিক প্রতিবেদন এবং নারী সুরক্ষা সূচক, NARI 2025, সমস্ত রাজ্যের ৩১টি শহরের ১২,৭৭০ জন মহিলার মতামতের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। তালিকায় কলকাতা, দিল্লি, রাঁচি, শ্রীনগর, ফরিদাবাদ।
তথ্য, ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৪ সালে ৭ শতাংশ মহিলা জানিয়েছেন, তাঁরা নানা সময়ে হয়রানির সম্মুখীন হয়েছেন। তালিকায় সবথেকে বেশি রয়েছেন ১৮-২৪ বছর বয়সী যুবতীরা। তারমধ্যে রয়েছে রাস্তায় নানা রকমের মন্তব্য, অশ্লীল মন্তব্য করা, স্পর্শ করা। কখনও কখনও এই পরিস্থিতির জন্য খারাপ রাস্তাঘাট, যানবাহনের সংখ্যাকেও দায়ী করা হয়েছে। ২০২২ সালের সর্বশেষ জাতীয় অপরাধ রেকর্ড ব্যুরো (এনসিআরবি) অনুসারে, এই সংখ্যা মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের ঘটনার ১০০ গুণ বেশি।
মহিলাদের নিজেদের শেয়ার করা অভিজ্ঞতা, তাঁদের থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে কোহিমা, বিশাখাপত্তনম, ভুবনেশ্বর, আইজল, গ্যাংটক এবং ইটানগরের মতো মুম্বাইকে সবচেয়ে নিরাপদ হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছে ওই রিপোর্টে। সূত্রের খবর, ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, এই তালিকা এমন বহু ঘটনা বা মহিলার বক্তব্য যুক্ত করা হয়েছে, যেগুলি সরকারি খাতায় উল্লিখিত নেই।
অনেক ক্ষেত্রে জানা গিয়েছে, যুবতী, কিশোরীরা আরও বেশি হেনস্থা কিংবা সামাজিক পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে অভিযোগ দায়ের করেন না অনেক সময়। উল্লেখ করা হয়েছে, ওই সংস্থা যাঁদের অভিজ্ঞতার কথা শুনেছেন এই রিপোর্ট বানানোর জন্য, তাঁদের মধ্যে মাত্র ২২ শতাংশ মহিলা তাঁদের অভিযোগ নথিভুক্ত করেছেন। জানা গিয়েছে, ৫৩ শতাংশ মহিলা স্পষ্টভাবে জানতেন না, তাঁদের কর্মক্ষেত্রে আইন দ্বারা বাধ্যতামূলক যৌন হয়রানি প্রতিরোধ (POSH) নীতি আছে কি না।
জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন বিজয়া কিশোর রাহাতকর পিভ্যালু অ্যানালিটিক্স দ্বারা তৈরি এবং বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষাবিদদের গ্রুপ (GIA) দ্বারা প্রকাশিত এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছেন। দিল্লিতে তিনি বলেন, 'এই পর্যবেক্ষণের সূচনা দেশের শহরগুলিতে মহিলাদের নিরাপত্তার উদ্বেগগুলি বোঝার ক্ষেত্রে এক ধাপ এগিয়ে। তিনি আরও বলেন, 'জাতীয় মহিলা কমিশনে, আমাদের অগ্রাধিকার হল প্রতিটি মহিলা যাতে বাড়িতে, কর্মক্ষেত্রে, জনসাধারণের স্থানে এবং অনলাইনে নিরাপদ বোধ করেন তা নিশ্চিত করা।'