দিল্লিতে অভিযান কলকাতা পুলিশের, কোটি টাকার প্রতারণায় গ্রেফতার ২ নাইজেরীয়
হিন্দুস্তান টাইমস | ২৯ আগস্ট ২০২৫
এক কোটি টাকারও বেশি প্রতারণার মামলায় বড় সাফল্য পেল কলকাতা পুলিশ। দিল্লি থেকে পাকড়াও করা হয়েছে আরও দুই নাইজেরীয় নাগরিককে। এর আগে একই ঘটনায় ইতিমধ্যেই তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। বুধবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ দিল্লির পালাম এলাকায় অভিযান চালিয়ে ধরা হয় অভিযুক্ত দু’জনকে। নেতৃত্বে ছিলেন কলকাতা পুলিশের ইনস্পেক্টর সোমা মাইতি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং ব্রিটেনের একটি ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার নাম ভাঁড়িয়ে কলকাতার এক বাসিন্দার কাছ থেকে মোট ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকার বেশি হাতিয়ে নেয় প্রতারক চক্রটি। গত মে মাসে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর থেকেই তদন্তে নামে পুলিশ। অভিযোগকারীকে ভুয়ো ই-মেল, হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর ও জাল নথি ব্যবহার করে বিনিয়োগের টোপ দেওয়া হয়েছিল। টাকা জমা দেওয়ার পরেই তিনি বুঝতে পারেন, এটি আসলে এক সুপরিকল্পিত প্রতারণা। তদন্তকারীরা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও মোবাইল নম্বর ঘেঁটে সূত্র খুঁজে পান দিল্লির পালাম এলাকায়। আইপি অ্যাড্রেস, কল রেকর্ড এবং ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারীর তথ্য বিশ্লেষণ করে অভিযুক্তদের অবস্থান নিশ্চিত হয়। এর পরেই কলকাতা পুলিশের দল পৌঁছে যায় দিল্লিতে। ওই দলে ছিলেন সার্জেন্ট শান্তনু গায়েন এবং কনস্টেবল জ়েড হোসেন, কে কর্মকার, এ সাহা ও এম জমাদার। দিল্লি পুলিশের সহযোগিতায় বুধবার বিকেল ৫টার কিছু পরেই পালামের একটি দোতলার ফ্ল্যাটে হানা দেওয়া হয়। সেখানেই তাদের গ্রেফতার করা হয়।
অভিযুক্তদের নাম এজিকে বেঞ্জামিন নওয়াবুনওয়ান্নে ও বিলিভ ওন্যেচেলেম ঝন। পুলিশ দেখে তাঁরা পালানোর চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। ধস্তাধস্তিতে এক কনস্টেবল জখমও হন। তবে শেষ পর্যন্ত দু’জনকেই পাকড়াও করা সম্ভব হয়। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ১২টি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন, দুটি কি-প্যাড মোবাইল, একটি ল্যাপটপ, একটি ওয়াইফাই রাউটার, ব্রিটেনের দুটি সিম কার্ড, চারটি এটিএম কার্ড এবং একটি পেন ড্রাইভ। ওই ফ্ল্যাট থেকেই নথি জাল করার যাবতীয় কাজকর্ম চলত বলে সন্দেহ তদন্তকারীদের। পুলিশের দাবি, এই প্রতারণা চক্র আন্তর্জাতিক জালিয়াতি চক্রের সঙ্গে যুক্ত। এর আগেও নাইজেরীয় নাগরিকদের এ ধরনের প্রতারণায় জড়িত থাকার নজির পাওয়া গিয়েছে। তদন্তকারীরা মনে করছেন, গ্রেফতার হওয়া দুই অভিযুক্তই কলকাতার এক ব্যবসায়ীকে লক্ষ্য করে সাজানো এই প্রতারণার মূল চরিত্রদের মধ্যে অন্যতম। ফলে, পাঁচ জনকে গ্রেফতারের পর এখন জোরকদমে চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। পুলিশের ধারণা, জালিয়াতির টাকার হদিস ও চক্রের আরও সদস্যদের খোঁজ শীঘ্রই মিলতে পারে।