• ট্রাম্পের রক্তচক্ষুকে থোড়াই কেয়ার! সেপ্টেম্বরেই রাশিয়ার থেকে তেল আমদানি বাড়াচ্ছে ভারত ...
    আজকাল | ২৯ আগস্ট ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: আমেরিকার রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা নয়াদিল্লির। মার্কিন চাপ সত্ত্বেও রাশিয়ার থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি বাড়াচ্ছে ভারত। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, আসন্ন সেপ্টেম্বর থেকেই পুতিনের দেশের থেকে আরও বেশি পরিমাণে তেল কেনা হবে। সূত্রের খবর, আগস্টের তুলনায় প্রায় ১০-২০ শতাংশ বেশি তেল কিনার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। 

    ইউক্রেনের ড্রোন হামলা রাশিয়ার বেশ কয়েকটি তৈল শোধনাগার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে তেল প্রক্রিয়াকরণ ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। এরপরই রুশ রপ্তানিকারকরা আরও কম দামে ভারতকে অপরিশোধিত তেল বিক্রির প্রস্তাব দেয়। কম দামে তেল কেনার এই লোভনীয় প্রস্তাব কাজে লাগাতে মরিয়া ভারত। ফলে সুলভে রাশিয়া থেকে আরও বেশি তেল আমদানি কিনছে নয়াদিল্লি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তকে 'অযৌক্তিক, অন্যায্য' বলে দাবি করেছে নয়াদিল্লি।

    আলোচনার মাধ্যমে শুল্ক বিরোধ সমাধানের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে বিদেশমন্ত্রকের আধিকারিকরা। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে পদক্ষেপ করেছেন। ভারতীয় কূটনীতিকরা মার্কিন সমালোচনার মোকাবিলায় যুক্তি দিচ্ছেন যে, পশ্চিমের দেশগুলি নিজেরাই রাশিয়ার সঙ্গে অন্যান্য ক্ষেত্রে বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে।

    শিল্প তথ্য থেকে দেখা যায় যে, আগস্টের প্রথম ২০ দিনে ভারত প্রতিদিন প্রায় ১.৫ মিলিয়ন ব্যারেল রুশ অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে। জুলাইয়ের তুলনায় যা স্থিতিশীল। তবে এই হার জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত গড়ের তুলনায় কিছুটা কম। রাশিয়ার তেল এখন ভারতের মোট চাহিদার প্রায় ৪০ শতাংশ। ভারতের তেল আমদানিতে রাশিয়া এখন অন্যতম বৃহৎ সরবরাহকারী। 

    কেন ছাড় গুরুত্বপূর্ণব্যবসায়ীরা বলেছেন যে, সেপ্টেম্বরে লোডিংয়ের জন্য রাশিয়ান ইউরাল অপরিশোধিত তেল বেঞ্চমার্ক ব্রেন্টের তুলনায় প্রতি ব্যারেল ২-৩ ডলার ছাড়ে বিক্রি হচ্ছে। এটি আগস্টের ১.৫০ ডলার ছাড়ের চেয়ে বেশি, যা ২০২২ সালের পর থেকে সবচেয়ে কম ছিল। দাম আরও আকর্ষণীয় হওয়ায়, রিফাইনার রিলাইন্স এবং নায়ারা এনার্জি তেল কেনা বাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে, যদিও এই দুই সংস্থাই এখনও কোনও মন্তব্য করেনি।

    বিশ্লেষকদের ধারণা বিশ্বব্যাপী নিষেধাজ্ঞা কার্যকর না হলে ভারত রুশ তেল কেনা অব্যাহত রাখবে। কেপলারের সুমিত রিটোলিয়া বলেন, "যদি না ভারত স্পষ্ট নীতিগত নির্দেশ জারি করে বা বাণিজ্য অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন না আসে, তাহলে রুশ অপরিশোধিত তেল কেনা থেকে বিরত হওয়ার কোনও কারণ ভারতের নেই।" 

    বিশ্বব্যাপী তীব্র প্রভাবযদি ভারত রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল কেনা বন্ধ করে দেয়, তাহলে ব্রোকারেজ সিএলএসএ-এর মতে, বিশ্বব্যাপী তেলের সরবরাহ প্রতিদিন প্রায় দশ লক্ষ ব্যারেল কমে যেতে পারে। এর ফলে দাম প্রতি ব্যারেল ১০০ ডলারে ফিরে যেতে পারে।

    তবে, আপাতত ব্যবসায়ীরা আশা করছেন যে- ভারতের শক্তিশালী আমদানি কমপক্ষে অক্টোবরের শুরুতে অব্যাহত থাকবে। রাশিয়ান তেলের উপর নতুন মার্কিন শুল্ক এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের কঠোর মূল্যসীমার প্রভাব বছরের শেষের দিকে আসা চালানগুলিতে দেখা যেতে পারে।
  • Link to this news (আজকাল)