আজকাল ওয়েবডেস্ক: বন্ধুদের গন্ডগোল থামাতে গিয়েছিলেন। তখনও জানতেন না কোন ভয়াবহ পরিস্থিতি অপেক্ষা করে রয়েছে। জানতেন না মুহূর্তে ঘটে যাবে ভয়াবহ ঘটনা। খুন হলে গেলেন এক যুবক। মৃতের নাম সৌভিক দত্ত। তিনি রাজ্যের এক উদীয়মান ফুটবলার। ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া, আতঙ্ক। ইতিমধ্যে এই ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযুক্তকে।
লিলুয়া থানার অন্তর্গত পটুয়া পাড়ার ঘটনা। বৃহস্পতিবার এলাকার একটি ক্লাবে গনেশ পুজো উপলক্ষে খাওয়া দাওয়া হচ্ছিল।সেখানেই দুই যুবকের মধ্যে গন্ডগোল লেগে যায়। দু'জনের এই গোলমাল থামাতে যান ফুটবলার সৌভিক দত্ত ওরফে সানু। অভিযোগ, কথা কাটাকাটিতে পকেট থেকে ছুরি বের করে আচমকাই সৌভিকের গলায় কোপ বসিয়ে দেন অমিত রায় চৌধুরী নামে এক যুবক। রক্তাক্ত অবস্থায় সৌভিককে হাসপাতালে যাওয়া হয়। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। সেখানে নিয়ে যাওয়া হলে, চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
সৌভিককে খুনের পর পালাতে গেলে স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়ে যান অমিত। পরে তাঁকে লিলুয়া থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এলাকার ভাল ছেলে এবং ভাল ফুটবল খেলোয়াড় হিসাবে পরিচিত সৌভিকের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে। নামানো হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী ও RAF। এই ঘটনায় অভিযুক্ত অমিত রায় চৌধুরী ছাড়াও আরও দু'জনকে পুলিশ আটক করেছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। উদীয়মান ফুটবলারের এই মৃত্যু মানতে পারছেন না কেউই। উত্তেজনা থাকায় এলাকায় পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে হামলায় ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্রটি।
এই ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী মৃতের ভাই কৌশিক দত্ত বলেন, 'পুরো লিলুয়া চত্বরে আমাদের বিরুদ্ধে কারুর কোনও অভিযোগ নেই। আমাদের অনুষ্ঠান ছিল। খাওয়া-দাওয়া শেষ হওয়ার পর দু'জনের মধ্যে বচসা হচ্ছিল। সেখানে দাদা আটকাচ্ছিল। বারে বারে দাদাকে চলে যেতে বললেও দাদা শোনেনি। সেই সময় হঠাৎই অমিত রায়চৌধুরী নামে একজন দাদার গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। ও ইচ্ছাকৃতভাবে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। এই ঘটনার পর অভিযুক্তের বাড়ির লোকেরাও অন্যত্র পালিয়ে যায়।'
স্থানীয় বাসিন্দা মানবেন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, 'আগে এমন ঘটনা কোনওদিন ঘটেনি। এই ঘটনায় এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কিত। ১০ মিনিটের মধ্যে এমন ঘটনা ঘটে গেল! অভিযুক্ত অমিত এবং তার ভাই দুজনেই ছুরি নিয়ে ঘোরে। আমরা চাইছি এর ন্যায্য বিচার হোক। ওর ফাঁসি হোক। না হলে এমন ঘটনা ভবিষ্যতে বারে বারে ঘটাবে।'
হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, গতরাতের ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। খুনের কারণ হিসেবে জানা গিয়েছে ওই এলাকায় খাওয়া দাওয়া হচ্ছিল। ওরা একই জায়গার লোক। সেই সময় কোনও একটি বিষয় নিয়ে বচসা হয়। সেই বচসার সময় ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে এই খুন করা হয়েছে। ওদের মধ্যে পুরনো শত্রুতা কিছু ছিল না। ওরা সকলেই পরিচিত ও বন্ধুস্থানীয়। ধৃতের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায়সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।