• ব্যক্তিগত কাজের উদযাপন নয়, বরং জীবনদর্শনের স্মরণ, শুরু দ্বিতীয় বর্ষের বি ভি দোশি মেমোরিয়াল প্রদর্শনী...
    আজকাল | ২৯ আগস্ট ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: দ্বিতীয় বর্ষের বি ভি দোশি মেমোরিয়াল প্রদর্শনীর উদ্বোধন করল অম্বুজা নেউটিয়া গ্রুপ। বুধবার থেকে প্রদর্শনীটি শুরু হয়েছে কলকাতার স্বভূমির কলাভানীতে। ‘স্থপতি গিরিশ দোশির জীবন ও কর্মকে উদযাপন’ শিরোনামে এই প্রদর্শনী ভারতের প্রথম প্রিৎজকার পুরস্কারপ্রাপ্ত স্থপতি বালকৃষ্ণ ভি দোশি-র চিরন্তন উত্তরাধিকারের প্রতি এক আবেগঘন শ্রদ্ধার্ঘ্য।

    এ বারের প্রদর্শনী আলোকপাত করা হয়েছে দোশির অন্যতম প্রিয় শিষ্য গিরিশ দোশি-র কাজের উপর। যার কাজ আত্মসংযম, স্বচ্ছতা এবং গভীর মানবতাবোধের প্রতিফলন। আঁকিবুঁকি, মডেল, আলোকচিত্র ও প্রতিফলিত প্রবন্ধের মাধ্যমে প্রদর্শনীটি তুলে ধরছে কীভাবে তাঁর স্থাপত্যচর্চা কোনও প্রাচুর্য বা আড়ম্বরের উদ্দেশ্যে নয়, বরং সরলতা, কাঠামোগত সততা এবং আন্তঃসংযুক্ত স্থানিক অভিজ্ঞতার প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে বিকশিত হয়েছিল।

    স্মরণীয় সন্ধ্যার অঙ্গ হিসেবে প্রবীর মিত্র মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড প্রবর্তনের ঘোষণা করল অম্বুজা নেওটিয়া। প্রয়াত প্রবীর মিত্র-র স্মৃতিতে একটি বার্ষিক সম্মাননা। তিনি ছিলেন নীরব অথচ দূরদর্শী, যার প্রজ্ঞা, মূল্যবোধ ও সততা প্রজন্মের পর প্রজন্মকে স্থাপত্য ক্ষেত্রে অনুপ্রাণিত করেছে। এই পুরস্কার প্রদান করা হবে সর্বাধিক প্রতিশ্রুতিশীল স্থপতিকে। যিনি নকশায় উৎকর্ষ, পেশায় দায়বদ্ধতা এবং সমাজে অবদানের স্বীকৃতি পাবেন। প্রথম বর্ষের জুরি বোর্ডে ছিলেন বিশিষ্ট স্থপতি পার্থরঞ্জন দাস, সুবীর কুমার বসু, আবিন চৌধুরী এবং বিবেক সিংহ রাঠৌর।

    প্রথম বর্ষের পুরস্কারটি প্রদান করা হয়েছে স্থাপত্য ও অন্তরঙ্গ নকশা পরামর্শক সংস্থা স্কোয়ার-কে। যাদের কাজ পশ্চিমবঙ্গ ও বিশেষত কলকাতার সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে গভীরভাবে প্রোথিত। আবার একই সঙ্গে নতুন প্রজন্মের বৈশ্বিক প্রবণতা ও চাহিদার প্রতিও সমানভাবে সাড়া দেয়। তাঁদের নকশায় ঐতিহ্যবাহী শিল্পরূপগুলিকে রূপায়ণ করা হয়েছে অভিনব ভঙ্গিতে। যা উপাদানগত বিকাশ, চিত্রধর্মী গুণমান এবং আনুষ্ঠানিক ভারসাম্যের মধ্যে এক সঙ্গতিপূর্ণ বিবর্তন প্রদর্শন করে—এবং যার পরিণতিতে গড়ে উঠেছে এক প্রাপ্তবয়স্ক, উদযাপনমুখর স্থাপত্যভাষা।

    এই প্রসঙ্গে অম্বুজা নেউটিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান হর্ষবর্ধন নেওটিয়া বলেন, “বি ভি দোশি মেমোরিয়াল প্রদর্শনী এবং প্রবীর মিত্র মেমোরিয়াল পুরস্কারের মাধ্যমে আমরা শুধু মহান স্থাপত্যকেই উদযাপন করতে চাই না। সেই সঙ্গে উদযাপন করতে চাই সেই মানবিক ও চিরস্থায়ী মূল্যবোধকেও। যা এই পেশাকে রূপ দেয়—সততা, আত্মসংযম এবং উদ্দেশ্যের মূল্যবোধ।”

    সন্ধ্যাটি একত্র করেছিল স্থপতি, সংস্কৃতিক চিন্তাবিদ, নকশাপ্রেমী ও দোশি-ভক্তদের। যারা মিলে গিয়েছিলেন স্থাপত্যকে একই সঙ্গে শিল্প এবং দায়িত্ব হিসেবে পুনর্বিবেচনার এক অভিন্ন প্রতিফলনে। এ যেন কেবল ব্যক্তিগত কাজের উদযাপন নয়, বরং এক দৃষ্টিভঙ্গির, এক নির্মাণপদ্ধতির এবং এক জীবনদর্শনের স্মরণ— যা আজও অনুপ্রেরণা জোগায়।

    ২৯ আগস্ট থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রদর্শনীটি সর্বসাধারণের জন্য খোলা থাকবে কলাভানী, স্বভূমি-তে। প্রদর্শনীর সময় সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টে থেকে রাত ৮টা এবং শুক্রবার থেকে রবিবার দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা।
  • Link to this news (আজকাল)