• বাংলা বললেই বাংলাদেশি! ‘কীসের ভিত্তিতে পুশব্যাক?’, সোনালি বিবির মামলায় কেন্দ্রের জবাব তলব সুপ্রিম কোর্টের
    প্রতিদিন | ২৯ আগস্ট ২০২৫
  • সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: বীরভূমের আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা সোনালি বিবি ও তাঁর পরিবারকে পুশব্যাকের অভিযোগ মামলায় কেন্দ্রের জবাব চাইল সুপ্রিম কোর্ট। কীসের ভিত্তিতে পুশব্যাক করা হল? নির্দিষ্ট ভাষা বললেই কি ভিনদেশি বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে? পুরো কেন্দ্রের কাছে SOP চাইল শীর্ষ আদালত।

    দানিশ শেখ, তাঁর স্ত্রী সোনালি বিবি ও তাঁদের পাঁচ বছরের শিশুপুত্রকে বাংলাদেশে পুশব‌্যাক করা হয়েছে বলে অভিযোগ। বীরভূমের মুরারইয়ের পাইকর গ্রামের বাসিন্দা ওই পরিবারকে ১৮ জুন দিল্লির রোহিনী জেলা পুলিশের কেএন কাটজু থানা থেকে দিল্লি পুলিশ বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করেছিল। পরিবারের সদস্যরা জানান, সেদিনই ধৃতরা ফোন করে খবর দেন যে পুলিশ তাঁদের বাংলাদেশি সন্দেহে গ্রেপ্তার করেছে। সঙ্গে সঙ্গেই পরিবারের লোকজন দিল্লি রওনা হন। কিন্তু থানায় পৌঁছেও তাঁদের কোনও সুরাহা মেলেনি। পুলিশ জানায়, ধৃতদের বিএসএফের হাতে তুলে দিয়ে বাংলাদেশে পুশব্যাক করে দেওয়া হয়েছে। কোন এলাকা দিয়ে তাঁদের সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হয়, তা জানানো হয়নি।

    ওই পরিবারের হয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেন পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদ। ওই মামলার শুনানিতে শুক্রবার শীর্ষ আদালতের নির্দেশ, সোনালি এবং তাঁর পরিবারকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তার ভিত্তিতে করা হেবিয়াস কর্পাস মামলা শুনবে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। এদিন বিচারপতি সূর্য কান্ত, জয়মাল্য বাগচি এবং বিচারপতি বিপুল এম পাঞ্চোলির ডিভিশন বেঞ্চে ওঠে সেই মামলা। এদিন শুনানিতে সোনালির পক্ষের আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ দাবি করেন, শুধুমাত্র ভাষার ভিত্তিতে ওই মহিলাকে বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হয়েছে। তাতে কেন্দ্রের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা দাবি করেন, কারা ভুক্তভোগী তাঁরা নিজেরা তো বিচার চাইতে আসছে না। কেন সংগঠন আসছে। এর নেপথ্যে রাজ্য সরকার থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। তাছাড়া বিষয়টি জাতীয় নিরাপত্তার ইস্যু বলে উল্লেখ করেন তিনি।

    সওয়াল জবাব চলাকালীন ডিভিশন বেঞ্চ বলে, জাতীয় নিরাপত্তা এবং সংহতি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু একই সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ এবং পাঞ্জাব সীমান্ত নির্বিশেষে একই ভাষা সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য বহন করে আসছে। কোনও একটি নির্দিষ্ট ভাষা বলার জন্য কাউকে বিদেশি বলে সন্দেহ করা ঠিক নয়। কাউকে দেশ থেকে বার করার ক্ষেত্রে কী কী নিয়মাবলী রয়েছে সেটা জানতে চেয়ে সাত দিনের ডেডলাইন বেঁধে কেন্দ্রের হলফনামা চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
  • Link to this news (প্রতিদিন)