• ‘গাড়িতে ক্যামেরা, চুরির আগে সব রেকর্ড করছে’, সার্ভে করতে গিয়ে গ্রামবাসীদের হাতে বেধড়ক ঠ্যাঙানি খেলেন গুগল ম্যাপসের কর্মীরা
    আজকাল | ৩০ আগস্ট ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের কানপুরের বিরহর গ্রামে গিয়ে বিপাকে পড়ল গুগল ম্যাপসের এক আধিকারিকের দল। বৃহস্পতিবার রাতে রাস্তার ম্যাপিং করতে গিয়ে স্থানীয়দের কাছে চোর সন্দেহে মারধরের শিকার হন তাঁরা। জানা গিয়েছে, টেক মহিন্দ্রা থেকে আউটসোর্স করা গুগল ম্যাপসের আধিকারিকদের দল ক্যামেরা-সংযুক্ত একটি গাড়ি নিয়ে গ্রামে রাস্তার ছবি তুলছিল। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল, গুগল ম্যাপে সঠিক তথ্য আপডেট করা। কিন্তু গ্রামবাসীরা ক্যামেরা লাগানো গাড়িটি দেখে সন্দেহ করেন যে, তাঁদের গ্রামে চুরির জন্য তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই স্থানীয় বাসিন্দারা একত্রিত হয়ে গাড়িটি ঘিরে ধরে। আধিকারিকদের ওই দলটিকে প্রশ্ন করা শুরু করে। বচসা বাড়তে বাড়তে একসময় তা হাতাহাতিতে রূপ নেয়।

    গ্রামবাসীরা রীতিমত তাঁদের মারধর করতে শুরু করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। তারাই পরিস্থিতি সামাল দেয়। পরে উভয় পক্ষকেই থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে গুগল ম্যাপস টিম জানায়, তাঁরা চুরি করতে আসেননি, বরং রাস্তার ছবি তুলে ম্যাপিং করছিলেন। এরপরই গ্রামবাসীরা শান্ত হন। গুগল টিমের এক সদস্য বলেন, ‘আমার দল নিয়ে গ্রামে ম্যাপিং করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু ভুল বোঝাবুঝিতে গ্রামবাসীরা আমাদের মারধর করে। আমরা এই কাজের জন্য ডি-জিপি’র অনুমতি নিয়েছিলাম।’ অন্যদিকে, গ্রামবাসীদের দাবি, সম্প্রতি এলাকায় চুরির ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় তাঁরা সতর্ক ছিলেন। ক্যামেরা লাগানো গাড়ি দেখে সন্দেহ হওয়ায় তারা এই ধরনের পদক্ষেপ নিতে একপ্রকার বাধ্য হয়েছিলেন।

    পুলিশ জানিয়েছে, গুগল ম্যাপসের আধিকারিকদের ওই দল গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি। কানপুর পুলিশ এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ঘটনার পর গ্রামবাসীদের শান্ত করে বাড়ি পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে কোনও আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা নেই।’ গত ১৮ জুন কলকাতার কড়েয়া থানা এলাকায় এক যুবককে মোবাইল চোর সন্দেহে ব্যাপক নির্যাতন করা হয়। অভিযোগ, স্থানীয় চারজন প্রথমে ওই ব্যক্তিকে আটকে রাখে এবং তাঁর ওপরে নির্মম অত্যাচার চালানো হয়। জানা গিয়েছে, চোর সন্দেহে ওই যুবককে প্রথমে একটি ঘরে আটকে রাখা হয় এবং তারপর ওই ব্যক্তির ওপর পাশবিক অত্যাচার, মারধর এমনকি ড্রিল মেশিন দিয়ে পা ফুটো করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। স্থানীয় চারজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে ওই ব্যক্তির গুরুতর অভিযোগ উঠতেই চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়।

    বৃহস্পতিবার কড়েয়া থানায় ওই চারজন ব্যক্তিকর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তি সিকান্দার আজম(৩৬) এবং তাঁর স্ত্রী জাহানারা বেগম। স্থানীয় সূত্রে খবর, মারধরের পর ওই ব্যক্তির পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক হওয়ায় অভিযুক্তরা সিকান্দরকে এলাকায় রাস্তার মধ্যে ফেলেই চলে যায়। এরপর সিকান্দর কোনওরকমে বাড়ি ফিরলে তাঁর পরিবারের সদস্যরা প্রথমে তাঁকে চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হওয়ায় বৃহস্পতিবার তাঁকে শহরের অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করে এবং চোর সন্দেহে পাশবিক অত্যাচারের কারণে স্থানীয় চারজনকে বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার করা হয় বলে খবর পুলিশ সূত্রে। অভিযুক্ত চারজনকে হত্যার মামলায় গ্রেপ্তার করে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। গ্রেপ্তার হওয়া চারজন ব্যক্তির নাম জাহিদ হোসেন, মনোয়ার হোসেন, শাহিদ আলি, বিকাশ রাউত।
  • Link to this news (আজকাল)