বাংলাদেশ ছাড়াও নেপাল, আফগানিস্তানের নাগরিকরাও বিহারের ভোটার! ভোটের আগেই লঙ্কাকাণ্ড...
আজকাল | ৩০ আগস্ট ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিহারের ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) চলাকালীন ভোটার শনাক্তকরণ নথিতে অসঙ্গতি পাওয়ার পর, জাতীয় নির্বাচন কমিশন (ইসিআই) প্রায় তিন লক্ষ ভোটারের বিরুদ্ধে নোটিশ জারি করেছে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে, বাংলাদেশ ও নেপাল সহ প্রতিবেশী দেশগুলির নাগরিকদের, এমনকি মায়ানমার ও আফগানিস্তানের কিছু নাগরিকের কাছে ভারতীয় ভোটার পরিচয়পত্র পাওয়া গিয়েছে। ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার্স (ইআরও) দ্বারা নথি যাচাইয়ের সময় এই অসঙ্গতিগুলি ধরা পড়েছে।
কমিশনের একটি সূত্র জানিয়েছেন, “১ থেকে ৩০ আগস্টের মধ্যে পুঙ্খানুপুঙ্খ যাচাই করা হবে এবং ৩০ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হতে যাওয়া চূড়ান্ত ভোটার তালিকা থেকে অযোগ্যদের নাম বাদ দেওয়া হবে।” তিনি আরও বলেন, “বিহারে এসআইআর-এর জন্য বাড়ি বাড়ি পরিদর্শনের সময়, বিএলওরা নেপাল, বাংলাদেশ এবং মায়ানমার থেকে বিপুল সংখ্যক লোককে খুঁজে পেয়েছেন। এই ব্যক্তিরা আধার, আবাসিক শংসাপত্র, রেশন কার্ড ইত্যাদি সহ সমস্ত নথি সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছেন।”
পর্যাপ্ত অনুসন্ধানের পরেই নোটিশ জারি করা হয়। প্রতিটি ভোটারকে তাদের রেকর্ড স্পষ্ট করতে বা সংশোধন করতে সাত দিনের মধ্যে কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তারা খসড়া তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত বা তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার জন্য ভোটারদের কাছ থেকে মোট ১,৯৫,৮০২টি আবেদন পেয়েছে। এর মধ্যে ২৪,৯৯১টি আবেদন ইতিমধ্যেই ইআরও দ্বারা নিষ্পত্তি করা হয়েছে। কমিশন এখনও স্পষ্ট করেনি যে কতগুলি আবেদন নতুন অন্তর্ভুক্তির এবং কতগুলি বাদ দেওয়ার।
সিপিআই(এমএল) কমিশনের কাছে ৭৯টি আবেদন দাখিল করেছে, যেখানে বিহারের প্রধান বিরোধী দল, রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) তিনটি আবেদন দাখিল করেছে। দাবি ও আপত্তির সময়সীমা শেষ হতে তিন দিন বাকি থাকা সত্ত্বেও, বিজেপি এবং কংগ্রেস সহ অন্য কোনও স্বীকৃত রাজ্য বা জাতীয় রাজনৈতিক দল এখনও পর্যন্ত আপত্তি দাখিল করেনি। যদিও কংগ্রেস বিহারে এসআইআর প্রক্রিয়া ঘিরে বিরাট অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে। তাদের অভিযোগ, কমিশনের (ইসি) পক্ষপাতদুষ্ট ও অস্পষ্ট পদ্ধতির ফলে লক্ষাধিক প্রকৃত ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন, অথচ বহু মৃত ব্যক্তির নাম এখনও রয়ে গেছে চূড়ান্ত খসড়া ভোটার তালিকায়। এর ফলে নির্বাচনী স্বচ্ছতা ও ভোটাধিকার সুরক্ষায় গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে।
২৪ জুন থেকে এসআইআর কার্যক্রম শুরু হয় এবং ১ আগস্ট খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়। নির্বাচন কমিশনের মতে, বিহারের ৭.২৪ কোটি ভোটারের মধ্যে ৯৯.১১ শতাংশের নথি ইতিমধ্যেই যাচাই করা হয়েছে। ২৪ জুন থেকে ২৪ আগস্টের মধ্যে, প্রায় ৯৮.২ শতাংশ ভোটার তাদের নথি জমা দিয়েছেন।
সুপ্রিম কোর্ট নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছে যে, ভোটার তালিকায় বাম অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদনকারী নাগরিকদের কাছ থেকে আধার কার্ড বা সরকারীভাবে তালিকাভুক্ত ১১টি নথির যে কোনও একটি গ্রহণ করতে। কমিশন, পরিবর্তে, আদালতকে যাচাইকরণ প্রক্রিয়ার উপর আস্থা রাখার অনুরোধ করেছে।