মলয় কুণ্ডু: বাংলা কথা বলায় ‘বাংলাদেশি’ বলে দাগিয়ে দেওয়া, বাংলাদেশে ‘পুশব্যাক’ ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়েছে কেন্দ্র। কীসের ভিত্তিতে পুশব্যাক? নির্দিষ্ট ভাষা বললেই কি ভিনদেশি বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে? কেন্দ্রের কাছে SOP চেয়েছে শীর্ষ আদালত। এবার তা নিয়ে সন্তোষপ্রকাশ করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে মমতার বক্তব্য, ‘বিপন্ন পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য একটা বড় ভরসার জায়গা আজ তৈরি হল। বাংলার অনন্য অবস্থান নিয়ে এই সর্বোচ্চ স্বীকৃতি বাংলাভাষী অসংখ্য পরিযায়ী শ্রমিককে আশা জোগাবে। আমাদের দেশে নানা প্রান্তে শ্রম ও ত্যাগ স্বীকার করতে থাকা পরিবারগুলি এবার একটু আশার আলো দেখছেন।’
ঠিক কোন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের এই জবাব তলব? গত ১৮ জুন বীরভূমের মুরারইয়ের পাইকর গ্রামের বাসিন্দা দানিশ শেখ, সোনালি বিবি ও তাঁদের পাঁচ বছরের শিশুপুত্রকে দিল্লির কেএন কাটজু থানা থেকে বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করেছিল দিল্লি পুলিশ। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই পরিবারের লোকজন দিল্লি রওনা হন। কিন্তু থানায় পৌঁছেও কোনও সুরাহা মেলেনি। পুলিশ জানায়, ধৃতদের বিএসএফের হাতে তুলে দিয়ে বাংলাদেশে ‘পুশব্যাক’ করে দেওয়া হয়েছে। কোন এলাকা দিয়ে তাঁদের সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হয়, তাও জানানো হয়নি। এনিয়ে আপত্তি তুলে পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদ সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করে। তার ভিত্তিতে শুক্রবার শীর্ষ আদালত কেন্দ্রের জবাবদিহি করেছে।
‘সুপ্রিম’ প্রশ্ন নিয়ে এবার আশা প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। সোশাল মিডিয়া পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘মাননীয় সুপ্রিম কোর্ট আজ একটি জনস্বার্থ মামলার সূত্রে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের বিষয়ে যুগান্তকারী নির্দেশ ও পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন। সীমান্ত রাজ্য হিসেবে বাংলার ঐতিহাসিক ভূমিকা স্বীকার করে প্রজন্মের পর প্রজন্মে বাংলা কীভাবে আশ্রয়, ভরসা ও সংস্কৃতির আশ্রয়স্থল হয়েছে, তার স্বীকৃতি দেশের সর্বোচ্চ আদালতে আজকে মিলেছে। মাননীয় সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যের মাননীয় হাই কোর্টকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পরিযায়ী শ্রমিকদের আবেদনটিকে শুনতে নির্দেশ দিয়েছেন। আটক হওয়া বিপন্ন পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য একটা বড় ভরসার জায়গা আজ তৈরি হল।’