• পোষ্য হারাতেই মেজাজ খোয়ালেন ইন্সপেক্টর! মধ্যরাতে বেল্ট-স্যান্ডেল দিয়ে মার কনস্টেবলকে, জানাজানি হতে হুলুস্থুল ...
    আজকাল | ৩০ আগস্ট ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: মধ্যপ্রদেশে সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে৷ ঘটনা ঘিরে রাজ্যজুড়ে তীব্র শোরগোল। খবর অনুযায়ী, খারগোন জেলার এক রিজার্ভ ইন্সপেক্টরের (RI) পোষা কুকুর নিখোঁজ হয়েছে। এই ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে এক কনস্টেবলকে নৃশংসভাবে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এই নির্মম ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতে না হতেই জনমনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।

    সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে ২৩ অগাস্ট রাতে। রিজার্ভ ইন্সপেক্টর সৌরভ সিং কুশওয়ার পোষ্য কুকুর নিখোঁজ হয়৷ খবর অনুযায়ী, তখন তিনি তাঁর সরকারি বাসভবনে কর্মরত কনস্টেবল রাহুল চৌহানকে রাত ১টা ৩০ মিনিটে ডেকে পাঠান। কনস্টেবল চৌহানের দাবি, নিখোঁজ কুকুরের দায়ে তাঁকে বেল্ট ও স্যান্ডেল দিয়ে মারধর করা হয়। শুধু তাই নয়, কুশওয়া ও তাঁর স্ত্রী তাকে জাতিগত গালি দেন , এমনকী চরম শারীরিক নির্যাতন চালান বলে অভিযোগ। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, চৌহানের হাতে, পিঠে ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

    জানা গিয়েছে চৌহান এই ঘটনার পর তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী জয়শ্রীও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সরব হন এবং অভিযোগ না মানা হলে আত্মহত্যার হুমকি দেন।

    অন্যদিকে, অভিযুক্ত কুশওয়া এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন৷ তিনি বলেন, ঘটনার দিন তিনি বাড়িতে ফিরে দেখেন ঘর নোংরা, সিগারেটের ছাই ও মদের বোতল ঘরের মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। একইসঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, কনস্টেবল মদ্যপ অবস্থায় কুকুরটির ওপর হামলা চালায় এবং তাঁকে বাইরে ফেলে আসে।

    বর্তমানে ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে, কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত ইন্সপেক্টর কুশওয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে ও বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। এদিকে, আদিবাসী সংগঠন 'জয় আদিবাসী যুব শক্তি' (JAYS) ও কংগ্রেস দল এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদ জানায় এবং এসসি/এসটি অ্যাক্ট অনুযায়ী কড়া পদক্ষেপের দাবি তোলে। এমনকী তিনজন কংগ্রেস বিধায়কও এই আন্দোলনে যোগ দেন বলে খবর।

    ঘটনার জেরে পূর্ণ তদন্ত জারি রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এহেন নৃশংশতায় রাজ্য জুড়ে আপামর জনসাধারণের নিন্দার ঝড় উঠেছে। পুলিশ প্রশাসনের ভেতরের এই বর্বর আচরণের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন অনেকে।

    এই ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটল, যখন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে পথকুকুরদের আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানোর বিষয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক চলছে। উল্লেখ্য, গত ১১ আগস্ট পথকুকুরদের নিয়ে দেশের শীর্ষ আদালত যে রায় দিয়েছিল, দেশজুড়ে প্রবল আলোচনা-সমালোচনা হয় তার। দেশের কোনায় কোনায় বিক্ষোভে ফেটে পড়েন মানুষ। নজর ছিল ২২ আগস্টের শুনানির দিকে। ২২ আগস্ট শীর্ষ আদালত ১১ আগস্টের রায় স্থগিত করেছে। বদল করা হয়েছে নির্দেশাবলীতে। কী জানা গেল পথকুকুর মামলা প্রসঙ্গে? প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ১১ আগস্টের নির্দেশাবলীতে বদল করেছে শীর্ষ আদালত। আগের রায়ে বলা হয়েছিল, দিল্লি এনসিআর এলাকায়, পথকুকুর আর রাস্তায় থাকতে পারবে না। তাদের সরিয়ে নেওয়া হবে অন্যত্র। তারপর থেকে দেশজুড়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন সাধারণ মানুষ, পশুপ্রেমীরা।

    শুক্রবার শীর্ষ আদালত ওই রায়ের পরিবর্তন করেছে। এদিন জোর দেওয়া হয়েছে পথকুকুরদের জীবাণুমুক্ত করার এবং টিকা দেওয়ার বিষয়ে। শুক্রবার আদালত জানায়, পথকুকুরদের রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে জীবাণুকরণ প্রতিষেধক এবং বন্ধ্যাত্বকরণ টিকা দেওয়ার পর, আবার যে জায়গার কুকুর, সেই এলাকাতেই ছেড়ে দেওয়া হবে। ব্যতিক্রম হিসেবে, হালমা চালাতে পারে, অর্থাৎ হিংস্র কিংবা জলাতঙ্ক ঘটাতে পারে, এমন কুকুরদের ছাড়া যাবে না বলেও জানানো হয়েছে বলে খবর সূত্রের। একই সঙ্গে সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, প্রকাশ্য রাস্তায় আর পথকুকুরদের খাওয়ানো যাবে না। পথকুকুরদের খাওয়ানোর জন্য আলাদা, নির্দিষ্ট জায়গা তৈরি করতে হবে।
  • Link to this news (আজকাল)