পাটনা: কংগ্রেসের ‘ভোটার অধিকার যাত্রা’য় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তাঁর প্রয়াত মাকে গালিগালাজ করা হয়েছে—এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হল পাটনায়। বিক্ষোভ হয়েছে কলকাতাতেও। এদিন বিহারের রাজধানী শহরে কংগ্রেসের সদর কার্যালয় ‘সাদাকত আশ্রমে’র বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে জড়ো হন প্রচুর বিজেপি কর্মী-সমর্থক। তাদের অনেকের হাতেই ছিল লাঠি। হঠাত্ই তারা গেট ভেঙে কার্যালয়ের ভিতরে ঢুকে পড়েন। শুরু হয় ভাঙচুর। ছোড়া হয় ইট-পাথর। দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ির কাচও ভেঙে দেওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর পাল্টা প্রতিরোধ শুরু করে কংগ্রেস কর্মীরাও। দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়। ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এদিন বিজেপির বিক্ষোভ কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন বিহারের মন্ত্রী নীতিন নবীন। দলের কার্যালয় থেকে মিছিল করে বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা কংগ্রেস দপ্তরে পৌঁছান। নীতিন বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রীর অপমান কোনওমতেই সহ্য করব না। রাহুল গান্ধী, তাঁর দল ও শরিক দলগুলিকে ক্ষমা চাইতে হবে।’ এদিন পাটনায় যখন দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে, তখন সেখান থেকে ১২০ কিমি দূরে গোপালগঞ্জে ছিলেন রাহুল। সরাসরি এই ঘটনার কথা উল্লেখ না করলেও তিনি এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘সত্য ও অহিংসার কোনও বিকল্প নেই। মনের আনন্দে আক্রমণ ও ভাঙচুর করো। সত্য ও সংবিধান রক্ষার জন্য লড়াই চালিয়ে যাব। সত্যমেব জয়তে!’
গত বুধবার দ্বারভাঙ্গা শহরে কংগ্রেসের কর্মসূচি চলছিল। সেই সময় এক তরুণ মাইক্রোফোনে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর প্রয়াত মাকে নিয়ে কুরুচিকর কথা বলে। মহম্মদ রিজভি ওরফে রাজা নামে ওই তরুণকে শুক্রবার গ্রেপ্তার করেছে দ্বারভাঙ্গা পুলিস। বছর কুড়ির রিজভি সিংওয়ারা এলাকার বাসিন্দা বলে পুলিস জানিয়েছে। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক শচীন পাইলট বলেন, ‘কেউ গালিগালাজ করলে তা অবশ্যই নিন্দার। কিন্তু ওই ঘটনার সঙ্গে কংগ্রেস ও বিরোধী জোটের বাকি দলগুলিকে জড়িয়ে দেওয়া ও আমাদের কার্যালয়ে হামলা চালানোর ঘটনা ন্যক্কারজনক।’ আরজেডির মুখপাত্র মনোজ ঝাও বলেছেন, ‘আমরা সঙ্গে সঙ্গে ওই ঘটনার নিন্দা করেছিলাম। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সহ শীর্ষ বিজেপি নেতারা একের পর এক কুমন্তব্য করে কি একবারও ক্ষমা চেয়েছেন?’
এদিকে, প্রধানমন্ত্রীকে গালিগালাজের ঘটনার কড়া নিন্দা করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এদিন তিনি বলেন, ‘আমি রাহুল গান্ধীকে অনুরোধ করছি, যদি তাঁর মধ্যে ন্যূনতম লজ্জাবোধ থাকে, তাহলে মোদিজি, তাঁর প্রয়াত মা ও দেশের মানুষের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।’ শাহের আরও বক্তব্য, ‘মোদিজির মা দারিদ্র্যের মধ্যে জীবন কাটিয়েছেন, সন্তানদের বড় করেছেন। তাঁকে নিয়ে কুমন্তব্য করলে মানুষ মেনে নেবে না।’