নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: তিনদিন নিখোঁজ থাকার পর টোটোচালকের দেহ উদ্ধার। শুক্রবার জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সরকারপাড়া থেকে সিতুল রায় (৪৯) নামে ওই ব্যক্তির দেহ উদ্ধার হয়। রেললাইনের ধারে কালভার্টের নীচে কচুরিপানা দিয়ে ঢাকা দেওয়া ছিল দেহটি। এমনকী মৃতদেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। গলায় কালশিটে দাগ রয়েছে বলে দাবি পরিবারের। যা থেকে তাদের অনুমান, ওই টোটোচালককে খুন করা হয়েছে। সিতুলের দেহ উদ্ধার হলেও তাঁর টোটো এবং মোবাইল ফোনটি পাওয়া যায়নি। এতেই আরও গাঢ় হয়েছে সন্দেহ। কোতোয়ালি থানার পুলিস এদিন দেহ উদ্ধারের পর সেটি ময়নাতদন্তের জন্য জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের মর্গে পাঠায়। পুলিস জানিয়েছে, অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। মৃতের দাদা নিতুল রায় বলেন, দেহ দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, ভাইকে প্রচণ্ড মারধর করা হয়েছে। ওর গলায় কালশিটে দাগ দেখেছি। এমনকী চোখ ও জিভ বেরিয়ে এসেছে। এর থেকে আমাদের অনুমান, মারধরের পর ভাইকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। এনিয়ে পুলিসের কাছে উপযুক্ত তদন্তের দাবি জানিয়েছি আমরা।
তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি’র জলপাইগুড়ি টাউন ব্লকের সভাপতি পুণ্যব্রত মিত্র বলেন, ঘটনাটি খুবই উদ্বেগজনক। একজন টোটোচালক স্ট্যান্ড থেকে যাত্রী নিয়ে রওনা হলেন। আর ফিরে এলেন না। তিনদিন পর টোটোস্ট্যান্ড থেকে অনেকটা দূরে রেললাইনের ধারে কালভার্টের নীচে কচুরিপানা দিয়ে ঢাকা দেওয়া অবস্থায় তাঁর দেহ মিলল। আমরা চাইব, পুলিস এর উপযুক্ত তদন্ত করুক। দেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে এদিন ঘটনাস্থলে আসেন খড়িয়া পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মনোজ ঘোষ। দেহটি যেভাবে পড়েছিল, তাতে খুন করে ফেলে যাওয়া হয়েছে বলেই সন্দেহ তাঁরও। পরিবার নিয়ে আগে জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন গোশালা মোড়ের কাছে মাহুতপাড়ায় জাতীয় সড়কের ধারে থাকতেন সিতুল রায়। রাস্তার তৈরির জন্য সেখান থেকে তাঁদের সরে যেতে বলা হয়। ফলে মাহুতপাড়া থেকে পরিবার নিয়ে কাছে সাকেরপাড়া এলাকায় ঘর বানান সিতুল। বাড়িতে স্ত্রী ও দুই ছেলে রয়েছেন। পরিবারের দাবি, দূরপাল্লার বাস থেকে অনেক যাত্রী নামেন ভোরে। ওই ভাড়া পাওয়ার আশায় অন্যদিনের মতো ২৭ আগস্ট ভোররাত ৩টে নাগাদ বাড়ি থেকে বের হন সিতুল। ভোর থেকে সকাল ৯টা, সাড়ে ৯টা পর্যন্ত টোটো চালাতেন তিনি। এরপর রংমিস্ত্রির কাজে যেতেন। ২৭ তারিখ সকাল ১০টা নাগাদ মোবাইলে বাড়ির লোকের সঙ্গে কথা হয় তাঁর। জানান, কিছুক্ষণের মধ্যেই ফিরবেন। এরপর দেখা যায়, তাঁর মোবাইল বন্ধ। দীর্ঘক্ষণ হয়ে গেলেও সিতুল বাড়ি না ফেরায় শুরু হয় খোঁজ। ২৮ আগস্ট থানায় মিসিং ডায়েরি করে পরিবার।