সংবাদদাতা, চাঁচল: বিজেপির গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল মালদহের চাঁচল সদরে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ইট পাটকেল ছোড়াছুড়িতে সাত জন জখম হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বিজেপির দুই নেতা প্রসেনজিৎ শর্মা ও সুমিত সরকার। বর্তমানে তাঁরা চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঘটনায় উভয়পক্ষের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে চাঁচল থানার পুলিস।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,চাঁচল গ্রাম পঞ্চায়েতের থানাপাড়া বুথের বিজেপি সদস্য প্রিয়াঙ্কা হালদার সরকারের স্বামী তথা বিজেপি নেতা সুমিত সরকার ও আশ্রমপাড়া বুথের বিজেপি পঞ্চায়েত সদস্য প্রসেনজিৎ শর্মার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক চাপানউতোর চলছিল। পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকেই পাশাপাশি দু’টি বুথ এলাকায় প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে চাপা উত্তেজনা তৈরি হয়। তবে এতদিন তা সংঘর্ষে রূপ নেয়নি। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ আশ্রমপাড়ায় রাস্তার মধ্যে দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। অভিযোগ,সুমিত বাইক নিয়ে যাচ্ছিলেন। সেই সময় প্রসেনজিতের লোকজন তাঁকে ঢিল মারে। এতে তিনি জখম হন। এরপরই উভয় পক্ষের মধ্যে বচসা থেকে হাতাহাতি শুরু হয়। ইট পাটকেল ছোড়া হয়। চলে হামলা ও পাল্টা হামলা।
একটি ভাইরাল ভিডিওতে (বর্তমান অবশ্য সত্যতা যাচাই করেনি) দেখা গিয়েছে,রক্তাক্ত অবস্থায় দু’পক্ষ সংঘর্ষ চালিয়ে যাচ্ছে। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে এক পুলিস অফিসার চোট পান। রাতেই পুলিস স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। চাঁচল থানার এক পুলিস আধিকারিক বলেন,দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। আমরা পৌঁছে দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেছি। জখম প্রসেনজিৎ শর্মা হাসপাতালে ঢোকার মুখে বলেন,সুমিত সরকার বিজেপির নাম ভাঙিয়ে তৃণমূলের হয়ে কাজ করছেন। তৃণমূলের সঙ্গে আঁতাত করে ও দলবল নিয়ে আমার উপর হামলা চালিয়েছে।
সুমিত সরকার বলেন, পাড়ার এক ভাইকে বাড়ি পৌঁছে দিতে গিয়েছিলাম। ফেরার পথে ওরা আমাকে ঘিরে ধরে। দলবল নিয়ে আমার উপর হামলা চালায়। সুমিতবাবুর স্ত্রী তথা থানাপাড়া বুথের বিজেপি সদস্য প্রিয়াঙ্কা হালদার সরকার বলেন,দলে আমার স্বামীর সুনাম রয়েছে। প্রসেনজিৎ সেটা সহ্য করতে পারছে না। তাই ষড়যন্ত্র করে দলবল নিয়ে হামলা চালিয়েছে। বিষয়টি আমরা জেলা নেতৃত্বকে জানিয়েছি।
উত্তর মালদহের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু গোষ্ঠী সংঘর্ষের অভিযোগ মানতে চাননি। তিনি বলেন,এটি ব্যক্তিগত বিবাদ। তবে এর পিছনে তৃণমূলের উস্কানি আছে বলে মনে হচ্ছে। বিষয়টি জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। পাল্টা চাঁচলের তৃণমূল বিধায়ক নীহারঞ্জন ঘোষ বলেন,বিজেপির মধ্যে ভাগবাটোয়ারা ও নেতৃত্বের টানাপোড়েন থেকেই এই সংঘর্ষ। তৃণমূলের শক্তি বৃদ্ধির জন্য আমরা উস্কানি দেব,এমন অভিযোগ হাস্যকর। চাঁচলে বিজেপির সংগঠন ভেঙে পড়ছে,তাই এই অশান্তি। নিজস্ব চিত্র