• হুগলি ও বর্ধমানের রাইসমিলে পরপর চুরি, ধৃত চক্রের ৫ দুষ্কৃতী
    বর্তমান | ৩০ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: হুগলি ও বর্ধমানের একের পর এক রাইসমিলে চুরির ঘটনায় পুলিস মহলে উদ্বেগ বেড়েছিল। অবশেষে এল সাফল্য। বৃহস্পতিবার হাওড়া ও হুগলি জেলার চুরি চক্রের পাঁচ দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করে আরামবাগ থানার পুলিস। ধৃতদের কাছ থেকে চুরি করার বিভিন্ন যন্ত্রাংশ উদ্ধার হয়েছে। তারসঙ্গে চুরি করা ৫০০ কেজিরও বেশি তামা সহ অন্যান্য সামগ্রী উদ্ধার হয়েছে। ধৃতদের জেরা করতে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিসের তদন্তকারী অফিসাররা আরামবাগে আসবেন বলে জানা গিয়েছে। 

    শুক্রবার ধৃতদের নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন আরামবাগের এসডিপিও সুপ্রভাত চক্রবর্তী। তিনি বলেন, পূর্ব বর্ধমান ও হুগলির একাধিক রাইস মিলে চুরির ঘটনার অভিযোগ এসেছে। তার জেরে গত কয়েকদিন ধরে সজাগ ছিল প্রত্যেকটি থানাই। অবশেষে পাঁচ দুষ্কৃতীকে বমাল সহ গ্রেপ্তার করা গিয়েছে। আরামবাগ থানার ষষ্ঠীপুর এলাকায় একটি রাইস মিলে চুরির সময় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে চুরি যাওয়া অন্যান্য সামগ্রী উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হবে। সেই সঙ্গে তাদের দলে আর কে কে রয়েছে, তাও জানার চেষ্টা চলছে। 

    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বুধবার গভীর রাতে আরামবাগ পুরসভা এলাকার নওপাড়া-সুপাড়া এলাকা দিয়ে একটি মোটর ভ্যান যাচ্ছিল। সেই ভ্যানের অংশ মোটা প্লাস্টিক দিয়ে ঢাকা ছিল। কর্তব্যরত পুলিস কর্মীরা ভ্যানটি আটকে চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তার কথা বার্তায় সন্দেহ হয় পুলিস কর্মীদের। এরপর মোটর ভ্যানের প্লাস্টিক সরিয়ে তল্লাশি চালাতে গেলে পুলিস কর্মীদের চোখ কপালে ওঠে। পুলিসের দাবি, ওই মোটর ভ্যানে প্রচুর কাটার মেশিন, স্ক্রু-ড্রাইভার, শাবল সহ বিভিন্ন চুরির কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম উদ্ধার হয়। মোটর ভ্যানের চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিস জানতে পারে তাদের একটি দল ষষ্ঠীপুর এলাকায় রয়েছে। সেখানে তারা একটি রাইস মিলে চুরির ছক কষেছে। ষষ্ঠীপুর এলাকায় সে মোটরভ্যান নিয়ে যাচ্ছিল। চুরির পর নানা সামগ্রী তাতে করে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার প্ল্যান ছিল। এই খবর জানতে পেরেই আরামবাগ থানার একটি পুলিস বাহিনী ওই রাইস মিলে হানা দেয়। যদিও সেই সময় দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু, স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের সাহায্যে পুলিস দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করে। সেখান থেকে প্রায় ৫০০ কেজি তামার সরঞ্জামও উদ্ধার হয়। এই ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট রাইস মিল কর্তৃপক্ষ আরামবাগ থানায় অভিযোগ দায়ের করে। 

    উল্লেখ্য, হুগলি ও পূর্ব বর্ধমানের পরপর বেশ কয়েকটি রাইসমিলে চুরির ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ে। পুলিসও বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসে। তারপর সচেতন করতে সম্প্রতি পুলিস রাইসমিল মালিকদের নিয়ে বৈঠক করে। সিসি ক্যামেরা লাগানো সহ বিভিন্ন বিষয়ে সচেতন করা হয়। ওইদিন গ্যাংটি ধরা পড়তে স্বস্তি ফিরেছে পুলিস মহলে। পুলিসের দাবি, ধৃতদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। তবে এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত জড়িত রয়েছে কি না, তা পুলিস খতিয়ে দেখছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)