বহিরাগত টিএমসিপি ছাত্রনেতাদের পাশে রেখে নবাগতদের সঙ্গে পরিচয়পর্ব সারলেন প্রিন্সিপাল
বর্তমান | ৩০ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: মঞ্চের পিছনে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরাট ব্যানার। ফার্স্ট সেমেস্টারে নবাগতদের প্রথম দিনের ক্লাস উপলক্ষ্যে বহিরাগতদের ছাত্র নেতারা স্যুটবুট পরে হাজির। সুতাহাটার বিবেকানন্দ মিশন মহাবিদ্যালয়ের হলঘরে বহিরাগতদের ডাইনে ও বাঁয়ে বসিয়ে প্রথম দিনের প্রথম দিনের পরিচয়পর্ব সারলেন অধ্যক্ষ মানবেন্দ্র সাউ। ২০১৭ সাল থেকে গোটা রাজ্যে কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ। হাইকোর্টের নির্দেশে সব কলেজের ইউনিয়ন রুমেও তালা। তবুও নতুন সেশনের প্রথম দিন কলেজের ভিতরে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতাদের খাতির করা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এনিয়ে কলেজের প্রিন্সিপাল বলেন, হলঘরে কিছু সময়ে পরিচয়পর্ব সারা হয়েছিল। তারপর সেখান থেকে ছাত্রছাত্রীরা যে-যার ক্লাসে চলে যায়। ইউনিয়নের ব্যানার নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।
এবার রাজ্যব্যাপী কলেজে ভর্তির হাল খুবই খারাপ। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন প্রতিটি কলেজে অল্প সংখ্যায় ছাত্রছাত্রী ভর্তি হয়েছেন। ইউনিভার্সিটির অধীন ৫২টি কলেজে ৭৪ হাজার ৪৩২ আসনের মধ্যে ভর্তি হয়েছেন মাত্র ১৮ হাজার ৪৪১ জন। গড় ২৫ শতাংশ পড়ুয়া ভর্তি হয়েছেন।
বিকোনন্দ মিশন মহাবিদ্যালয়ে মোট আসন ১৭০০। ভর্তি হয়েছেন মাত্র ৩৭০ জন। প্রথম দিন শ’দুয়েক পড়ুয়া এসেছিলেন। তাঁদের প্রথমে কলেজের সেমিনার হলে বসানো হয়। সেখানেই চন্দনের ফোঁটা দিয়ে স্বাগত জানানো হয় নবাগতদের। আশ্চর্যের বিষয় হল, মঞ্চের পিছনে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরাট ব্যানার। আর প্রিন্সিপালের পাশে বসলেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই ব্লক কনভেনর শেখ জমিরউদ্দিন ও বিশ্বজিৎ দাস। এছাড়াও সৈয়দ মইনুদ্দিন সহ বেশ কয়েকজন বহিরাগত ছাত্র নেতাও উপস্থিত ছিলেন। এমনিতেই কলেজে সাধারণ কোর্সের প্রতি ছাত্রছাত্রীদের অনীহা বাড়ছে। অনেক পড়ুয়া কলেজের ভিতর রাজনৈতিক স্লোগান, ঝামেলা পছন্দ করেন না। পড়ুয়াদের মধ্যে ড্রপ আউট হওয়া এটাও একটা কারণ। নন্দীগ্রাম সীতানন্দ কলেজে প্রায়ই ছাত্র সংঘর্ষের জেরে এবছর পড়ুয়ার সংখ্যা একেবারেই কমে গিয়েছে। প্রথম দিনেই কলেজে বহিরাগত ছাত্র নেতাদের আপ্যায়ন করে কলেজ কর্তৃপক্ষ ঠিক কাজ করেননি বলে অনেকের দাবি।
টিএমসিপির সুতাহাটা ব্লক কনভেনর বিশ্বজিৎ দাস বলেন, কলেজের মধ্যে তারা সংগঠন করেন। তাঁদের উদ্যোগেই প্রথম দিন পরিচয়পর্ব সেশন হয়েছিল। তাই সংগঠনের পতাকা ছিল। আমাদের আমন্ত্রণ করায় সেখানে গিয়েছিলাম।
এদিন কোলাঘাট রবীন্দ্রভারতী কলেজে তৃণমূল ছাত্র ইউনিয়নের কোন গোষ্ঠী প্রথম নবাগতদের সঙ্গে মুখোমুখি হবে, তানিয়ে ঝামেলা বাধে। ছাত্রনেতা জয়প্রকাশ সিং গভর্নিং বডির সদস্যও। সেই মেম্বারশিপকে ঢাল করে প্রথম দিনের ক্লাসে ঢুকে পড়েন। অপর গোষ্ঠী ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করলে বাধা দিয়ে হটিয়ে দেয় সভাধিপতি ঘনিষ্ঠ ছাত্রনেতারা।
কোলাঘাট রবীন্দ্রভারতী কলেজের প্রিন্সিপাল তিতাসকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, জয়প্রকাশ ছাত্রনেতার পাশাপাশি গভর্নিং বডির সদস্য। তাই প্রথম দিন পরিচয়পর্বের ক্লাসে তিনি আমাদের সঙ্গেই ছিলেন।-নিজস্ব চিত্র