• ক্লাসরুমে মদ খেয়ে টলমল অষ্টম শ্রেণির ১০ ছাত্রছাত্রী
    বর্তমান | ৩০ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: স্কুলের ক্লাসরুমে উঠল মদের ফোয়ারা! বোতল ঝাঁকিয়ে সেলিব্রেট হল সহপাঠীর জন্মদিন। ফূর্তির শেষ এখানেই নয়, ক্লাসরুমের ভিতর ভরপেট মদ পান করে টলতে টলতে বেরিয়ে এল একদল পড়ুয়া। ওরা সকলেই অষ্টম শ্রেণির ছাত্রছাত্রী! এমন নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী থাকল নন্দীগ্রাম-২ব্লকের টাকাপুরা আদর্শ বিদ্যাপীঠ। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই সরগরম গোটা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা। নিন্দার ঝড় বইছে শিক্ষামহলে। 

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,ঘটনাটি ঘটে ২৫আগস্ট। স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ক্লাসরুমে ওই মদ্যপানের আসরে যোগ দিয়েছিল মোট ১০জন পড়ুয়া। তাদের মধ্যে সমসংখ্যক ছাত্র ও ছাত্রী। ঘটনাটি কানে যেতেই কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। সবার অভিভাবককে ডেকে অভিযুক্ত ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে না আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মদ বিক্রেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধান শিক্ষক প্রেমেন্দুবিকাশ প্রামাণিক নন্দীগ্রাম থানা এবং টাকাপুরা বাজার কমিটির কাছে লিখিত আর্জি জানিয়েছেন। ওই পড়ুয়াদের টিসি দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু, সেশনের মাঝপথে তাদের নিয়ে অভিভাবকরা অথৈ জলে পড়বেন বলে প্রধান শিক্ষককে জানান। এরপর স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওই দশজন পড়ুয়া স্কুলে ক্লাস করতে পারবে না। তারা শুধু পরীক্ষা দেবে।

    দু’মাস আগে নন্দীগ্রাম থানার পুলিস টাকাপুরা বাজার থেকে নমিতা মণ্ডল নামে এক মহিলাকে গ্রেপ্তার করেছিল। ওই বাজারে তার ইমিটেশন গয়নার দোকান রয়েছে। সেই দোকান থেকে লুকিয়ে মদ বিক্রি করার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। জামিন পাওয়ার পর ফের নমিতা দোকান খোলে। আবারও আগের মতোই সেখান থেকে মদ বিক্রি শুরু করে। ২৫আগস্ট টাকাপুরা আদর্শ বিদ্যাপীঠের এক ছাত্র ইউনিফর্ম পরা অবস্থায় ওই দোকান থেকে মদ কেনে। বোতলটি স্কুল ব্যাগে করে নিয়ে যায় ক্লাসরুমে। তারপর ছিপি খুলে ফোয়ারা তোলা হয়। এক সহপাঠীর জন্মদিন উদযাপন করতে তাদের এমন ভাবনা বলে জানা গিয়েছে।

    ক্লাস এইটের ক্লাসরুমে মদের বোতল খুলে ফোয়ারা তোলার কথা মুহূর্তে গোটা স্কুলে ছড়িয়ে পড়ে। প্রধান শিক্ষক সহ অন্যান্য শিক্ষকের কাছেও সেই খবর পৌঁছে যায়। স্কুলে হুলস্থূল পড়ে যায়। ২৭ আগস্ট দশ পড়ুয়ার অভিভাবককে তলব করা হয়। তাঁদের জানানো হয়, স্কুল কর্তৃপক্ষ এই ঘটনায় কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে চায়। অভিভাবকদের অনুরোধে শেষ পর্যন্ত শাস্তি একটু লঘু করা হয়। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য শতদ্রু প্রামাণিক বলেন, ‘প্রত্যেক অভিভাবক সন্তানের এমন গর্হিত কাজে লজ্জিত। তাঁরা স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। আমরা নমিতা মণ্ডলের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ চাই।’প্রধান শিক্ষক প্রেমেন্দুবিকাশ প্রামাণিক বলেন, ‘স্কুলে একটা ঘটনা ঘটেছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি।’
  • Link to this news (বর্তমান)