• ‘পার্ক স্ট্রিট ছিল অন্য এক পৃথিবী, আজ তাকে আলাদা করে চেনা যায় না’, কেন বললেন দেবজ্যোতি?
    আনন্দবাজার | ৩০ আগস্ট ২০২৫
  • পার্ক স্ট্রিটের বিখ্যাত পানশালায় একসময় নিয়মিত অনুষ্ঠান করতেন। কলকাতা শহরে বাস করত আরও একটা শহর। শহরের বাকি এলাকা থেকে একেবারেই ভিন্ন ছিল পার্ক স্ট্রিটের আবহ। কিন্তু আজ আর আলাদা করে চেনা যায় না কলকাতার এই এলাকাকে। মনে করেন সঙ্গীত পরিচালক দেবজ্যোতি মিশ্র।

    সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে অনীক দত্ত পরিচালিত ছবি ‘যত কাণ্ড কলকাতাতেই’-এর একটি গান। নাইটক্লাবের ভিতর আলো আঁধারি আবহে এই গানের দৃশ্যায়ন হয়েছে। একসময় বিখ্যাত শিল্পীরা এই নাইটক্লাবে গান গেয়েছেন, গিটার বাজিয়েছেন। তাই সঙ্গীত পরিচালকেরও রয়েছে এই নাইটক্লাবকে ঘিরে নানা স্মৃতি। দেবজ্যোতি বলেছেন, “৬০-এর দশকে বহু খ্যাতনামী গেয়েছেন। ইংরেজি গানই হত। সারা বিশ্বে যে ইংরেজি গানগুলি চলত, সেই গানগুলিই গাওয়া হত সেখানে। সেগুলি মাথায় রেখেই এই ইংরেজি গান বাঁধা হয়েছে।”

    স্মৃতি হাতড়ে দেবজ্যোতি জানান, একসময় অমিতাভ বচ্চন, সত্যজিৎ রায়, রাহুল দেববর্মণও এই পানশালায় গান শুনতে আসতেন। সঙ্গীত পরিচালক বলেন, “আমি নিজেও ৮০-র দশকে দীর্ঘ দিন এই পানশালায় বাদ্যযন্ত্রশিল্পী হিসেবে অনুষ্ঠান করেছি। দেশ বিদেশের বহু শিল্পীর সঙ্গে বাজিয়েছিলাম। সে এক অন্য রকমের পৃথিবী ছিল। তখন পার্ক স্ট্রিট সম্পূর্ণ অন্য রকমের ছিল।”

    গানটি লিখেছেন অপরাজিতা বারুই, সুর ও সঙ্গীতায়োজন দেবজ্যোতি মিশ্রের। গানটি গেয়েছেন তানিয়া সেন। দৃশ্যায়নে দেখা গিয়েছে রোজা পারমিতা দে ও ঋক চট্টোপাধ্যায়কে। পুরনো কলকাতার পানশালার সংস্কৃতি সম্পর্কে দেবজ্যোতি আরও বলেন, “সেই সময়ের পানশালা এবং গোটা পার্ক স্ট্রিট শহরের মধ্যে এক অদ্ভুত ‘গ্ল্যামার’ ছিল। ওই পাড়াটা গোটা কলকাতা থেকে আলাদা ছিল। এখন আর ওই পাড়াকে আলাদা করে চেনা যায় না। হিন্দুস্থান পার্ক আর পার্ক স্ট্রিটের পার্থক্য আর বোঝা যায় না এখন। আগে পানশালার দরজার কাছে দাঁড়িয়ে বোঝা যেত, কোন শিল্পী বা কোন ব্যান্ড অনুষ্ঠান করছেন। তবে এখনও কিছু কিছু জায়গায় ছেলেমেয়েরা গাইছে।”

    অনীক দত্ত তাঁর ছবিতে দুই সময়কালের কলকাতাকে তুলে ধরছেন। বেশ কয়েকটি সাক্ষাৎকারে কলকাতার বর্তমান রূপ নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন। দেবজ্যোতি এই বদল কী ভাবে দেখেন? প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন, “সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদল তো আসেই। কোনও কিছুই চিরস্থায়ী নয়। সঙ্গীতেও বদল আসে। কিন্তু কিছু বিষয় আজও একই রয়ে গিয়েছে। যেমন পার্ক স্ট্রিটের রেস্তরাঁর ওয়েটাররা আজও জানেন, কোন অতিথি কোন খাবার খেতে ভালবাসেন। ওঁরা এক রকমই রয়ে গিয়েছেন।”
  • Link to this news (আনন্দবাজার)