গুজরাট থেকে বাংলায় ‘ভেজাল’ ড্রাগ! কলকাতার ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষায় ফেল ১৫১টি ওষুধ
প্রতিদিন | ৩০ আগস্ট ২০২৫
অভিরূপ দাস: উৎকর্ষের পরীক্ষায় ডাহা ফেল করল ১৫১ টি ওষুধ। সেন্ট্রাল ড্রাগ স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন সাম্প্রতিকতম নোটিসে তুলে দিল সেই তালিকা। দেখা গিয়েছে, এর মধ্যে একাধিক ওষুধ পাওয়া গিয়েছে শহর কলকাতায়। যা এসেছে ভিনরাজ্য থেকে।
কলকাতার সেন্ট্রাল ড্রাগ ল্যাবরেটরিতে সে সমস্ত ওষুধ পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, তাতে উপাদানের অভাব স্পষ্ট। এই ধরনের ওষুধ খেলে সংশ্লিষ্ট অসুখ নিরাময় হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ব্যাচ নম্বর-সহ তালিকা প্রকাশ করে ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ড জানিয়েছে, “এই ওষুধগুলো কিনবেন না।” প্রতিটি খুচরো-পাইকারি বিক্রেতাকেও এই ওষুধগুলি রাখতে বারণ করা হয়েছে।
ল্যাবরেটরিতে বাতিল হওয়া ওষুধের তালিকা দেখে চিকিৎসকদের মাথায় হাত! গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিবায়োটিক, ক্যানসারের ওষুধ, এমনকী মূত্রনালি সংক্রমণের ওষুধও ফেল করেছে গুণমান পরীক্ষায়। প্রাথমিক তদন্তের পর ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ড জানিয়েছে, সিংহভাগ ‘নট স্ট্যান্ডার্ড কোয়ালিটি’ ওষুধই বাংলায় এসেছে ভিনরাজ্য থেকে। যার মধ্যে রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর জন্মভূমি গুজরাটও। কলকাতার সেন্ট্রাল ড্রাগ ল্যাবরেটরিতে ক্যানসার রোগীদের জন্য ব্যবহৃত হেপারিন ইঞ্জেকশন গুণমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি। দেখা গিয়েছে, গুজরাটের বড়োদরা থেকে এই ইঞ্জেকশন এসেছে বাংলায়।
পরীক্ষায় পাস করতে পারেনি অ্যাজিথ্রোমাইসিন ট্যাবলেট। Gnosis ফার্মাসিউটিক্যালের তৈরি এই গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিবায়োটিক হিমাচল প্রদেশের মগিনান্দ গ্রাম থেকে এসেছে বাংলায়।
বাতিল তালিকায় রয়েছে ক্ষুদ্রান্ত্রের আলসারের সিরাপ সুক্রালফেট (sucralfate, ব্যাচ নম্বর RL2412-10)। যা বাংলায় এসেছে উত্তরাখণ্ড থেকে। গুরুত্বপূর্ণ আরও একটি অ্যান্টিবায়োটিক অ্যামোক্সিসিলিন পটাশিয়াম ক্লভুলানেট (Amoxycilin and potassium clavulanate) ও মান পরীক্ষায় পাস করতে পারেনি। নন স্ট্যান্ডার্ড কোয়ালিটি সে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যাচ নম্বর BT240754। খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে এই অ্যান্টিবায়োটিকও বাংলায় এসেছে হিমাচল প্রদেশের সোলান থেকে।
মূত্রনালির সংক্রমণ ঠেকাতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিবায়োটিক Amikacin Sulphate Injection (ব্যাচ নম্বর 24AM19) গুণমান পরীক্ষায় ডাহা ফেল করেছে। ড্রাগ কন্ট্রোলের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, বাংলায় এই ওষুধ এসেছে তেলেঙ্গানার সংস্থা সাই প্যারেনটেরালস লিমিটেডের কারখানা থেকে। কলকাতার সেন্ট্রাল ড্রাগ ল্যাবরেটরিতে আতশ কাচের তলায় ভেজাল ধরা পড়েছে ডেক্সামিথাসোন ট্যাবলেটেও। ইউনাইটেড বায়োসিউটিক্যালসের তৈরি এই ওষুধের কারখানা হায়দরাবাদে।