সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত বুধবার থেকে ভারতের কাঁধে ৫০ শতাংশ মার্কিন শুল্কের ভার চেপেছে। তথাপি ডোনাল্ড ট্রাম্পের চোখরাঙানির পরোয়া করছে না নয়াদিল্লি, নীরব কূটনৈতিক কৌশলে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে তা। শুক্রবার রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা অয়েল অ্যান্ড ন্যাচারাল গ্যাস কর্পোরেশন (ওএনজিসি) জানিয়ে দিল, রাশিয়া থেকে তেল আমদানির বিষয়ে সরকারের তরফে কোনও চাপ নেই! ফলে আমদানি অব্যাহত রাখা হয়েছে। যত দিন রাশিয়া থেকে তেল কেনা লাভজনক হবে, তত দিন পুতিনের দেশ থেকে অশোধিত তেল আমদানিও অব্যাহত থাকবে।
শুক্রবার রাশিয়া তেল আমদানি নিয়ে মুখ খোলেন ওএনজিসির চেয়ারম্যান অরুণকুমার সিং। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “যত দিন পর্যন্ত বিষয়টি লাভজনক থাকবে, তত দিন পর্যন্ত আমরা প্রতিটি ফোঁটা (রাশিয়ার তেল) কিনে যাব।” আরও জানান যে রাশিয়া থেকে তেল কেনা নিয়ে কোনও সরকারি নিষেধাজ্ঞা নেই। এই বিষয়ে সরকার কোনও সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত ওএনজিসির দুই তেল পরিশোধনকারী সংস্থা হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (এইচপিসিএল) এবং ম্যাঙ্গালোর রিফাইনারি অ্যান্ড পেট্রোকেমিক্যালস (এমআরপিএল) রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কেনার বিষয়ে স্বাধীন। উল্লেখ্য, এইচপিসিএল ও এমআরপিএল যৌথভাবে বছরে ৪ কোটি টন তেল পরিশোধন করতে পারে। অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণের পর শোধিত তেলের একাংশ পশ্চিমের দেশগুলিতে বিক্রি করে ভারত।
প্রথমে ভারতের উপরে ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছিলেন ট্রাম্প। এরপর রুশ তেল আমদানির ‘অপরাধে’ আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপে ভারতের উপর। যদিও এরপরেও সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবর মাসের জন্য রাশিয়াকে বিপুল পরিমাণ তেলের বরাত দিয়েছে ভারত। তার কারণ সম্প্রতি ব্যারেলপ্রতি তিন ডলার ছাড় দেওয়া হয়েছে উরালের তেলে। হিসাব অনুযায়ী, এই ছাড়ের অঙ্কটা ৫ শতাংশ। তবে এই নিয়ে সরকারিভাবে কোনও পক্ষই কিছু জানায়নি। তবে এটা পরিষ্কার, রাশিয়ার থেকে তেল কেনা বাড়িয়ে আমেরিকাকেই পালটা বার্তা দিয়েছে দিল্লি। ওএনজিসির বার্তায় স্পষ্ট, এই কৌশল থেকে সরছে না ভারত।
এদিকে এই আবহে এসসিও সম্মেলনে যোগ দিতে চিনে পৌঁছে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যেখানে রুশ রাষ্ট্রপ্রধান ভ্লাদিম পুতিন, এমনকী উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জন উনেরও যোগ দেওয়ার কথা। বলা বাহুল্য, ডোনাল্ডের ট্রাম্পের ‘শুল্কবোমা’র বিপরীতে গড়ে উঠছে নতুন অক্ষশক্তি।