কুকুরের ডাককে কেন্দ্র করে রক্তাক্ত পরিণতি, কুড়ুলের হামলায় যুবকের মৃত্যু, গুরুতর জখম কাকা
আজকাল | ৩১ আগস্ট ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: ছত্তিশগড়ের রায়গড় জেলায় কুকুরের ডাককে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া রাস্তার ঝগড়া শেষ হল রক্তাক্ত হত্যাকাণ্ডে। শুক্রবার গভীর রাতে কুড়ুলের হামলায় প্রাণ হারালেন এক যুবক। জানা গিয়েছে, নিহতের কাকা প্রাণ বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর আহত হন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে ফিটিংপাড়া গ্রামে। মৃতের নাম সুজিত খালখো (২৫)। শুক্রবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ তিনি এক আত্মীয়ের বাড়িতে খেতে গিয়েছিলেন। সেই সময় তিনজন যুবক সেখানে গিয়ে আচমকাই কুড়াল দিয়ে হামলা চালায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সুজিতের। তাঁকে মৃত্যুর হাত বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর আহত হন তাঁর কাকা সুরেশ মিঞ্জ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওইদিনই সন্ধ্যায় সুজিত তাঁর পোষা কুকুর নিয়ে হাঁটতে বেরোলে কুকুরটির ডাককে কেন্দ্র করে অভিযুক্তদের সঙ্গে ঝগড়া হয় সুজিতের। বচসা ক্রমশ বাড়তে থাকে।
সেই সময় থেকেই শুরু হয় গালিগালাজ ও হুমকি। তবে ওই মুহূর্তে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে মিটে গেলেও ভিতরে ভিতরে রাগ পুষে রেখেছিল অভিযুক্তরা। পরে রাতেই তা রক্তাক্ত রূপ নেয়। পাশাপাশি পুরনো দ্বন্দ্বও এই হত্যাকাণ্ডে বড় ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করছে পুলিশ। হামলার পর সুজিতের মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। জানা গিয়েছে, ঘটনায় ইতিমধ্যেই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যার মধ্যে দু’জন নাবালক বলে জানা গিয়েছে। রায়গড় জেলার পুলিশ সুপার দিব্যাং প্যাটেল জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে স্পষ্ট হয়েছে কুকুরের ডাক নিয়ে ঝগড়া এবং পূর্বের শত্রুতাই এই হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ। অভিযুক্তদের হেফাজতে নিয়ে ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ। প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই পথকুকুর নিয়ে বড় ঘোষণা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। জানানো হয়েছে, দিল্লি-এনসিআরের সব পথ কুকুরকে রাস্তা থেকে সরিয়ে নিতে হবে বাধ্যতামূলক ভাবে। এমনকি, এই কার্যক্রমে বাধা দিলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের।
উল্লেখ্য, গত কয়েক মাসে দিল্লিতে কুকুরের কামড়ের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় এবং রেবিস আক্রান্ত হয়ে একাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটায় এই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এদিন সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি জে বি পারদেওয়ালা এবং আর মহাদেবনের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। বেঞ্চ জানিয়েছে, কেন্দ্র ছাড়া অন্য কোনও পক্ষের তরফে শুনানি হবে না। বেঞ্চের বক্তব্য, ‘আমরা এই কাজ আমাদের জন্য করছি না, এটি জনস্বার্থে। তাই এখানে কোনও আবেগের স্থান নেই। দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে’। আদালতের বেঞ্চের স্পষ্ট বার্তা, ‘সব জায়গা থেকে কুকুরকে তুলে নিয়ে গিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে। আপাতত নিয়ম-কানুন ভুলে যান’। এর আগে আমিকাস কুরাই গৌরব আগরওয়ালা সুপারিশ করেছিলেন কীভাবে পথ কুকুর সমস্যার সমাধান করা যায়।
কিন্তু আদালতের স্পষ্ট বক্তব্য, ‘কুকুরদের গৃহপালিত করার ব্যাপার আপাতত বিবেচনা করা হচ্ছে না। তাতে পরে তাদের আবার ছেড়ে দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে’। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, ‘দিল্লিতে একটি আলাদা জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে যেখানে কুকুরদের স্থানান্তর করা হবে। কিন্তু পশু অধিকারকর্মীদের আপিলের কারণে প্রকল্প আটকে গেছে। আদালতের বেঞ্চ এই প্রসঙ্গে কঠোর ভাষায় জানিয়েছে, ‘এসব পশু অধিকার কর্মীরা কি রেবিস আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া মানুষদের ফিরিয়ে আনতে পারবেন? রাস্তাকে সম্পূর্ণ পথ কুকুর মুক্ত করতে হবে’। দিল্লি, নয়ডা, গাজিয়াবাদ এবং গুরগাঁও সহ দিল্লি-এনসিআর অঞ্চলের পৌর প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দ্রুত কুকুরদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র গড়ে তোলার। পথ কুকুরদের উদ্ধার করে সেখানে জরুরি ভিত্তিতে নিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছে।