গলা টিপে ধরেছিল বাবা, জোর করে মুখে কীটনাশক দিয়ে নিজের মেয়েকেই শেষ করল! আসল কারণ জেনে পুলিশের মাথায় হাত
আজকাল | ৩১ আগস্ট ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রেমের সম্পর্ক ঘিরে আরও একটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড। ভিন জাতের যুবকের সঙ্গে মেয়ের সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি বাবা। শুরু থেকেই ছিল আপত্তি। কিন্তু পরিবারের নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করেই ভিন জাতের যুবকের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিল কিশোরী। এর জেরেই ঘটল বিপত্তি। নিজের মেয়েকে গলা টিপে খুন করেন বাবা। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে মেয়ের মুখে কীটনাশক ভরে দিয়েছিলেন। যাতে সকলে বোঝেন, মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। এত কাণ্ড ঘটিয়েও শেষরক্ষা হয়নি। পুলিশের জালে অবশেষে ধরা পড়েছে ঘাতক বাবা।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে কর্ণাটকে। কালাবুরাগি পুলিশ কমিশনার শরনাপ্পা এস ডি জানিয়েছেন, নিজের মেয়েকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন বাবা। কিন্তু ঘটনাটি আত্মহত্যা হিসেবে সাজাতে চেয়েছিলেন। সেই কারণেই মেয়ের মুখে কীটনাশক ভরে দিয়েছিলেন। শেষমেশ মেয়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন নিজের হাতে। কারণ ভিন জাতের এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল তাঁর মেয়ের।
পুলিশ আধিকারিক আরও জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছিল মেলাকুন্দ গ্রামে। প্রথমে জানা গিয়েছিল, ১৮ বছর বয়সি কিশোরী আত্মহত্যা করেছেন। পুলিশকে জানিয়েই তার দেহ পুড়িয়ে শেষকৃত্যের কাজ সম্পন্ন করেন তার বাবা। কিন্তু ঘটনাটি ঘিরে সন্দেহ হয়েছিল পুলিশের। তড়িঘড়ি শেষকৃত্য সম্পন্ন করা ঘিরেও রহস্য দানা বেঁধেছিল। এরপর ওই গ্রামে পৌঁছেই তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
এই ঘটনার ভিত্তিতে কিশোরীর বাবা শঙ্করকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জানা গেছে, জেরায় শঙ্কর জানিয়েছেন, তাঁর পাঁচ সন্তান রয়েছে। কিশোরী ভিন জাতের এক যুবকের সঙ্গে প্রেম করছিল। এই প্রেমের সম্পর্ক ঘিরে আপত্তি জানিয়েছিলেন তিনি। সম্পর্কটি কোনও মতেই মেনে নেননি। তাঁর আশঙ্কা ছিল, ভিন জাতের ছেলে তাঁর জামাই হয়ে ঘরে এলে, বাকি মেয়েরাও এক কাজ করবে।
এই বিষয়ে আত্মীয়দের সঙ্গেও আলোচনা করেন শঙ্কর। এরপর আত্মীয়দের দিয়ে মেয়েকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। মেয়েকে পড়াশোনা মনোযোগ বাড়ানোর জন্য আত্মীয়দের কথা বলতে এগিয়ে দিতেন। কিন্তু বাড়িতে অশান্তি, বাবার আপত্তি জানা সত্ত্বেও ভিন জাতের যুবকের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিল কিশোরী।
পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, রাগের মাথায় মেয়েকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন শঙ্কর। এরপর মুখে কীটনাশক ভরে দেন। যাতে সকলের মনে হয় মেয়ে কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছে। গ্রামবাসীরাও বিষয়টি দেখে আত্মহত্যা ভেবেছিলেন। শঙ্করের বানানো গল্প বিশ্বাস করে নিয়েছিলেন। অনেকেই শেষকৃত্যের কাজে যোগ দেন। তখনও কেউ আসল সত্যিটা জানতেন না।
তদন্তে নেমে পুলিশ প্রথমে শঙ্করকে গ্রেপ্তার করেছে। ইতিমধ্যেই ফরেন্সিক টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেছে। পুলিশ আধিকারিকের অনুমান, শঙ্কর একা এই খুন হয়তো করেননি। তাঁকে তাঁর আরও কয়েকজন আত্মীয় সাহায্য করতে পারেন। খুনের ঘটনাটিতে দুই থেকে তিনজন জড়িত থাকতে পারেন। ইতিমধ্যেই খুন ও খুনের প্রমাণ লোপাটের জন্য ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
পুলিশ আধিকারিকের অনুমান, শঙ্করের আরও দুজন আত্মীয় এই খুনের জড়িত থাকতে পারেন। ঘাতক বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। দোষ প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত আত্মীয়দের গ্রেপ্তার করা হবে শীঘ্রই।