ঠিক যেন 'জব উই মেট', প্রেমিকের জন্য পালিয়ে গিয়েছিলেন তরুণী, ফিরলেন অন্য যুবকের গলায় মালা পরিয়ে!
আজকাল | ৩১ আগস্ট ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: পরিচালক ইমতিয়াজ আলির 'জব উই মেট' সিনেমাটি মনে আছে! প্রেমিককে বিয়ে করার জন্য পালিয়ে গিয়েছিল গীত। ট্রেনে আলাপ হয় আদিত্যর সঙ্গে। ক্রমেই আদিত্যর সঙ্গেই ঘনিষ্ঠতা বাড়ে তার। প্রেমিক বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায়, গীত শেষমেশ আদিত্যকেই বিয়ে করে। সিনেমার সেই কাহিনি এবার বাস্তবে ঘটল। তাও আবার যে স্টেশনে সিনেমার শুটিং হয়েছিল, সেখানেই শুরু হল আরও এক প্রেমের কাহিনি।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ২২ বছর বয়সি তরুণীর নাম শ্রদ্ধা তিওয়ারি। তিনি বিবিএ ছাত্রী ছিলেন। গত ২৩ আগস্ট প্রেমিককে বিয়ে করতে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন। সাতদিন পর নিজেই ফিরলেন বাড়িতে। তাও আবার সিঁদুর পরে। তবে প্রেমিকের স্ত্রী হিসেবে নয়। অন্য একজনের বউ হয়ে বাড়িতে পা রাখলেন শ্রদ্ধা।
পুলিশি জেরায় ২২ বছরের শ্রদ্ধা জানিয়েছেন, স্বার্থক নামের এক তরুণের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল তাঁর। মূল পরিকল্পনা ছিল, স্বার্থকের সঙ্গে পালিয়ে যাবেন। তাঁকেই বিয়ে করবেন। পরিকল্পনা মতো বাড়ি থেকে পালিয়ে যান শ্রদ্ধা। ব্যাগপত্র নিয়ে রেলস্টেশনে অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও স্বার্থক স্টেশনে আসেননি। উল্টে শ্রদ্ধাকে ফোন করে স্বার্থক জানান, পরিবারের অমতে এই বিয়ে তিনি পালিয়ে গিয়ে করতে পারবেন না।
মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন শ্রদ্ধা। কষ্টে, অভিমানে হঠাৎ একটি ট্রেনে উঠে পড়ে। সেই ট্রেন থেকে রতলাম স্টেশনে গিয়ে নামেন। এই স্টেশনেই ইমতিয়াজ আলির 'জব উই মেট' সিনেমার শুটিং হয়েছিল। শ্রদ্ধা জানিয়েছেন, রতলাম স্টেশনে বসে থাকাকালীন এক যুবকের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। যুবকের নাম, কর্ণদ্বীপ। ইন্দোরের এক কলেজের ইলেকট্রিশিয়ান ছিলেন তিনি।
শ্রদ্ধার সঙ্গে কর্ণদ্বীপ প্রথমে আলাপ করেন। তাঁর ঘটনা শোনার পর বাড়ি ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন কর্ণদ্বীপ। এমনকী বাড়িতে সবটা জানিয়ে দেওয়ার পরামর্শও দিয়েছিলেন। কিন্তু শ্রদ্ধা জানান, 'আমি বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছি বিয়ে করার জন্য। অবিবাহিত অবস্থায় বাড়ি ফিরলে আমি আর বাঁচব না।' এই কথোপকথনের শেষে শ্রদ্ধাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন কর্ণদ্বীপ। সঙ্গে সঙ্গে সেই প্রস্তাবে রাজি হন শ্রদ্ধা।
তরুণী জানিয়েছেন, এরপর তাঁরা দুজনে মিলে মাহেশ্বর-মান্ডলেশ্বরে পৌঁছে গিয়েছিলেন। সেখানে পৌঁছে সাত পাকে বাঁধা পড়েন। বিয়ের পর সেখান থেকে মান্দসৌরে পৌঁছে যান। এরপর সেখানে এক জনপ্রিয় মন্দিরে পুজো দিয়ে ইন্দোর থানায় পৌঁছে যান শ্রদ্ধা। থানায় পৌঁছে পুলিশকে শ্রদ্ধা জানান, তিনি বিয়ে করেছেন। কিন্তু শ্রদ্ধার দাবি মানতে রাজি ছিল পুলিশ। বারবার বিয়ের সার্টিফিকেট চাইছিল তারা।
এদিকে শ্রদ্ধার বাবা জানিয়েছেন, 'ও আমাকে ফোন করে সবটা জানিয়েছে। কিন্তু আমি এই বিয়ে কোনও মতেই মেনে নেব না। ওকে ফিরে আসার জন্য টাকা পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু ও কর্ণদ্বীপের সঙ্গেই থাকবে বলে জানিয়েছে।' এদিকে পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, শ্রদ্ধা তরুণী। যে কাউকে বিয়ে করার স্বাধীনতা তাঁর রয়েছে। কিন্তু পুলিশের সন্দেহ, কর্ণদ্বীপকে শ্রদ্ধা হয়তো আগে থেকেই চিনতেন। দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়েছে।