আজকাল ওয়েবডেস্ক: ল্যাপটপ, স্মার্টফোন, ট্যাব দিয়ে কৃতী ছাত্র-ছাত্রীদের সংবর্ধনা দেওয়া হল। ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেক্ষাগৃহে সূর্যমনি নগর এলাকার বিধায়ক তথা ত্রিপুরা বিধানসভার উপাধ্যক্ষ রামপ্রসাদ পালের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হল সূর্যমনি নগর এলাকার এক অনন্য অনুষ্ঠান ‘কৃতী সংবর্ধনা ২০২৫’। ২০২৫ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ প্রায় ৭০০ জন ছাত্রছাত্রীকে এদিন সংবর্ধনা জানানো হয়।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ছত্তিশগড়ের রাজ্যপাল রমেন ডেকা। উপস্থিত ছিলেন এলাকার জনপ্রিয় বিধায়ক ও বিধানসভার উপাধ্যক্ষ রাম প্রসাদ পাল। এদিন কৃতী ছাত্র- ছাত্রীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় ল্যাপটপ, স্মার্টফোন, ট্যাবলেট এবং স্মার্টওয়াচ।
অনুষ্ঠানে ছত্তিশগড়ের রাজ্যপাল রমেন ডেকা তাঁর ভাষণে বলেন, 'আজকের এই কৃতী ছাত্র-ছাত্রীদের দেখে আমি আশ্বস্ত হচ্ছি যে, ত্রিপুরার শিক্ষা ক্ষেত্র দ্রুত অগ্রগতির পথে এগোচ্ছে। প্রযুক্তিকে হাতিয়ার করে তোমরা আগামী দিনে সমাজ ও রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিয়ে যাবে—এই আশা রাখছি।'
এলাকার বিধায়ক ও বিধানসভার উপাধ্যক্ষ রামপ্রসাদ পাল বলেন, 'সূর্যমনি নগরের ছাত্র- ছাত্রীরা সবসময়ই মেধার পরিচয় দিয়ে এসেছে। আজকের এই সাফল্য আরও একবার প্রমাণ করল তাদের অধ্যবসায় ও শ্রমের ফল। শিক্ষকদের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং অভিভাবকদের উৎসাহই এই সাফল্যের মূলে রয়েছে। ভবিষ্যতেও তোমরা রাজ্যকে গর্বিত করবে বলে এই প্রত্যাশা রইল।'
অনুষ্ঠান জুড়ে ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। করতালির মধ্যেই অতিথিদের কাছ থেকে পুরস্কার ও সংবর্ধনা গ্রহণ করে উজ্জ্বল মুখে মঞ্চ থেকে নামল ভবিষ্যতের তারকারা। তবে এই দিন ছাত্র-ছাত্রীরা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ল্যাপটপ, স্মার্টফোন, ট্যাব পেয়ে খুবই খুশি। উচ্ছ্বাসের মুহূর্ত দেখা গেল এলাকার ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে।
প্রসঙ্গত, চলতি মাসের শুরুতেই নেশার বিরুদ্ধে পথে নামলেন ত্রিপুরা বিধানসভার উপাধ্যক্ষ রামপ্রসাদ পাল। মাদকের বিরুদ্ধে আপোষহীন সংগ্রাম— এই দৃঢ় সংকল্প নিয়ে রবিবার বিকেলে আগরতলার সূর্যমনি নগরে অনুষ্ঠিত হল এক সচেতনতা মূলক বাইক র্যালি। এই নেশা বিরোধী র্যালির নেতৃত্ব দেন ত্রিপুরা বিধানসভার উপাধ্যক্ষ রামপ্রসাদ পাল নিজে। আয়োজিত এই বাইক র্যালিতে অংশ নেন বহু সরকারি কর্মী ও সাধারণ মানুষ। মাদকমুক্ত ত্রিপুরা গঠনের লক্ষ্যে এই ধরনের কর্মসূচি যে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তনের বার্তা দেয়, সে কথাই জানান অংশগ্রহণকারীরা।
র্যালির সূচনা পূর্বে রামপ্রসাদ পাল এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, 'নেশা শুধু একজন ব্যক্তির সমস্যা নয়। এটা গোটা সমাজের ক্ষয়িষ্ণুতা ডেকে আনছে। তরুণ সমাজকে রক্ষা করতে হলে আমাদের সবাইকে, দলমত নির্বিশেষে, একজোট হয়ে নেশার বিরুদ্ধে দাঁড়াতেই হবে।' র্যালিটি শ্রীপালের বিধানসভা কেন্দ্র সূর্যমনি নগরের বিভিন্ন এলাকা পরিক্রম করে এবং পথচারীদের মাঝে মাদকবিরোধী প্রচার করা হয়।
এদিন র্যালিতে এলাকার বিধায়ক তথা ত্রিপুরা বিধানসভার উপাধ্যক্ষ নিজে স্কুটি চালিয়ে নেশার বিরুদ্ধে যুবসমাজকে সচেতন করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা এই উদ্যোগকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, 'জনপ্রতিনিধিরা যদি এভাবে মাঠে নেমে সচেতনতা গড়ে তোলেন, তাহলে যুব সমাজ অনেকটাই সঠিক দিশা পাবে।' এই কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণিত হল, মাদকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শুধু প্রশাসন নয়, সমাজের সব অংশের সক্রিয় অংশগ্রহণ একান্ত প্রয়োজন। এবং সেই পথেই এক সাহসী পদক্ষেপ আজ সূর্যমনি নগর থেকে শুরু হল।
গত মাসে আগরতলার উমাকান্ত উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে নেশামুক্ত ভারত অভিযানের অঙ্গ হিসেবে মাদকের অপব্যবহার এবং অবৈধ পাচার বিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা: মানিক সাহা এ কথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, মাদক ব্যবহারের সঙ্গে এইডস বিস্তারের একটা সম্পর্ক রয়েছে। সেক্ষেত্রে 'নো টু ড্রাগস' কর্মসূচিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নেশামুক্ত ত্রিপুরা এবং এইডস মুক্ত ত্রিপুরা গড়তে অভিভাবক এবং ছাত্রছাত্রীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'নিজেরা সচেতন হয়ে, অন্যদেরকেও এবিষয়ে সচেতন করতে হবে। তবেই আমাদের এই ছোট রাজ্য ত্রিপুরা নেশার কবল থেকে দূরে থাকবে।'
বিদ্যালয় এবং মহাবিদ্যালয়গুলিতে ছাত্রছাত্রীদের মাদকের ব্যবহার ও এইডস সম্পর্কে সচেতন করে তোলার উপর মুখ্যমন্ত্রী গুরুত্ব আরোপ করেন। অনুষ্ঠানে রাজ্যের মুখ্যসচিব জে কে সিনহা বলেন, মাদক বিরোধী অভিযানের অঙ্গ হিসেবে রাজ্যে ১৯৩৩ নম্বরের একটি হেল্পলাইন এবং কিউআর কোড খোলা হয়েছে। রাজ্য পুলিশের ডি জি অনুরাগ বলেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে মাদক বিরোধী অভিযানে বিশেষ সফলতা এসেছে। এছাড়া এবছর ৮.৫ লক্ষ গাঁজা গাছ ধ্বংস করা হয়েছে।