বাংলায় নতুন ‘রঘু ডাকাত’, পঞ্চায়েত প্রধানকে খুন করা হবে আগাম জানিয়ে বাড়ির সামনে রেখে গেল চিঠি এবং বোমা...
আজকাল | ৩১ আগস্ট ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত মুর্শিদাবাদের নওদা থানার অন্তর্গত সর্বাঙ্গপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে কিছু অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতী তাঁর বাড়ির সামনে রেখে গেল দু'টি তাজা বোমা এবং পঞ্চায়েত প্রধানকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে লেখা একটি চিঠি। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার সকালে নওদা থানার অন্তর্গত দুধসর এলাকায়। ইতিমধ্যে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে নওদা থানার পুলিশ। তবে এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কেউ গ্রেপ্তার হয়নি বলেই জানা গিয়েছে।
গত নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিট জয়ী হয়ে আতিকুল মালিথা সর্বাঙ্গপুর পঞ্চায়েতের প্রধান পদে বসেন। সূত্রের খবর পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের সময় তৃণমূলের পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় বিরোধী কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সাহায্য নিয়ে আতিকুল প্রধান পদে নির্বাচিত হন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সদস্যরা তৃণমূল কংগ্রেসের যোগ দেওয়ার পর বর্তমানে ওই পঞ্চায়েতের তৃণমূলের সদস্য সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭।
স্থানীয় সূত্র জানা গিয়েছে, শনিবার ভোর ৫টা নাগাদ আতিকুলের বাড়ির সামনে একটি সাদা কাগজে নীল কালিতে লেখা হুমকি চিঠি এবং তার ঠিক পাশেই একটি কালো প্লাস্টিকের ব্যাগের মধ্যে দুটি সুতলি বোমা পড়ে থাকতে দেখেন পঞ্চায়েত প্রধানের পরিবারের এক সদস্য। এরপরই খবর দেওয়া হয় স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পে। পরে নওদা থানার পুলিশ এসে বোমা এবং চিঠিটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
আতিকুলের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই হুমকিতে লেখা রয়েছে এক মাসের মধ্যে সর্বাঙ্গপুর ব্রিজের উপর আতিকুলকে খুন করা হবে এবং ওই পঞ্চায়েত প্রধান যে সমস্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে চলাফেরা করেন তাঁদেরকেও দেখে নেওয়া হবে।
এলাকার জনপ্রিয় তৃণমূল নেতার বাড়ির সামনে হুমকি চিঠি এবং বোমা পড়ে থাকতে থাকার ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই ব্যাপক চঞ্চল্য ছড়িয়েছে সর্বাঙ্গপুর এলাকায়।
পঞ্চায়েত প্রধান আতিকুল মালিথা বলেন, “আজ ভোর ৫টা নাগাদ আমার এক ভাই বাড়ির দরজার সামনে প্লাস্টিকের ব্যাগের মধ্যে দু’টি সুতলি বোমা এবং হুমকি চিঠি পড়ে থাকতে দেখেন। আমার বাড়ির মূল দরজার নীচে কিছুটা ফাঁক থাকায়, তার তলা দিয়ে হাত ঢুকিয়ে কেউ বা কারা ওই চিঠি এবং বোমা দু’টি বাড়ির ভিতরে রেখে গিয়েছিল। কিন্তু সিসিক্যামেরা না থাকায় কে বা কারা এই কাজ করেছে তা জানতে পারিনি।”
পঞ্চায়েত প্রধান বলেন, “এলাকার প্রায় সমস্ত ব্যক্তি এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও আমার যথেষ্ট সুসম্পর্ক রয়েছে। প্রায় রোজ রাত সাড়ে ১০টা এগারোটা পর্যন্ত আমি একাই এলাকায় ঘুরে বেড়াই। তাই কে বা কারা এই কাজ করেছে সে সম্পর্কে আমার কোনও ধারণা নেই। তবে এই ঘটনার পর অবশ্যই কিছুটা আতঙ্কিত বোধ করছি।” মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা মোশারফ হোসেন মধু বলেন, “আতিকুল সর্বাঙ্গপুর পঞ্চায়েতের প্রধান পদে রয়েছেন এবং এলাকায় যথেষ্ট প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা। আমরা পুলিশকে অনুরোধ করেছি কে বা কারা তাঁকে হুমকি চিঠি দিয়েছে এবং বাড়ির সামনে বোমা রেখে গিয়েছিল তা তদন্ত করে দেখতে।”
প্রসঙ্গত এবছর জানুয়ারি মাসে তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত নওদা থানার অন্তর্গত মধুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য মনিরুল শেখের বাড়ির সামনে থেকে হুমকি পোস্টার, গুলি এবং অন্ত্যষ্টি ক্রিয়ার জন্য ব্যবহৃত বিভিন্ন সামগ্রী উদ্ধার হয়েছিল। কিছু অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতী সেগুলি ওই পঞ্চায়েত সদস্যের গঙ্গাধারী এলাকায় অবস্থিত বাড়ির সামনে রেখে গিয়েছিল।