স্ত্রীকে খুন করেছিলেন আবগারি আধিকারিক। তবে সাজিয়েছিলেন দুর্ঘটনার তত্ত্ব। শেষমেশ ধরা পড়েন। ৭ বছর মামলা চলার পর দোষী সাব্যস্ত হলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের বাসিন্দা দিবাকর ঘোষ। শনিবার তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করল বালুরঘাট আদালত।
ঘটনাটি বছর সাতেক আগের। ২০১৮ সালে বালুরঘাটের পতিরামের নিচাবন্দরে এলাকায় অস্বাভাবিক ভাবে মৃত্যু হয় অনন্যা দত্ত রায়ের। ১১ জুন সকালে অনন্যার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয় বাড়িরই গ্যারাজ থেকে। তার আগের দিন তিনি কলকাতা থেকে বালুরঘাটে স্বামীর বাড়িতে ফিরেছিলেন। স্বামী দিবাকর নিজেই মল্লিকপুর স্টেশনে আনতে গিয়েছিলেন অনন্যাকে। পরের দিন সকালে স্ত্রীর মৃত্যুর পর তিনি জানান, গাড়ি ঘোরাতে গিয়ে দুর্ঘটনা হয়েছে। বুঝতে পারেননি যে স্ত্রী দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তাঁর গাড়ির চাকায় পিষ্ট হন অনন্যা। যদিও ওই দাবি উড়িয়ে দেয় আবগারি আধিকারিকের শ্বশুরবাড়ি। তারা খুনের অভিযোগ করে। পুলিশের কাছে অভিযোগ করে অন্যত্র খুন করে স্ত্রীর উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেন দিবাকর।
ঘটনাক্রমে গ্রেফতার হন দিবাকর। বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আদালতে প্রমাণ হয় যে স্ত্রীকে খুন করেছেন ওই আবগারি আধিকারিক। শনিবার বালুরঘাট আদালতের এডিজি ফাস্ট কোর্টের বিচারক সন্তোষকুমার পাঠক শাস্তি ঘোষণা করেন দিবাকরের।
মামলার সরকারি আইনজীবী ঋতব্রত চক্রবর্তী এই শাস্তিঘোষণাকে ‘দৃষ্টান্তমূলক’ বলে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, ‘‘২০১৮ সালের ১১ জুন অমলেন্দু দত্ত রায় নামে এক ব্যক্তি বালুরঘাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি জানান, তাঁর মেয়ে অনন্যা দত্ত রায়কে খুন করা হয়েছে।’’ আইনজীবী আরও বলেন, ‘‘সামাজিক মতে বিয়ে হয়েছিল দিবাকর-অনন্যার। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে স্ত্রীর উপর শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচার চালাতেন স্বামী। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ও ২০১ নম্বর ধারায় অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক।’’