‘মুখ্যমন্ত্রীর নাম করে অসত্য কথা বলছেন’! পরীক্ষা পিছোনো নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর নিশানায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য
আনন্দবাজার | ৩০ আগস্ট ২০২৫
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করে অসত্য কথা বলেছেন কলকাতা বিদ্যালয়ের উপাচার্য শান্তা দত্ত। শনিবার এমনই দাবি করলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস, ২৮ অগস্ট কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা কলেজগুলিতে পরীক্ষা হওয়া নিয়ে টানাপড়েন শুরু হয়েছিল। তবে পরীক্ষা হওয়া নিয়ে অনড় ছিলেন শান্তা। বৃহস্পতিবার পরীক্ষা মিটে যাওয়ার পর তিনি দাবি করেন, মুখ্যমন্ত্রীর নাম করেও তাঁকে পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছিল। সেই দাবি অসত্য বলে জানালেন শিক্ষামন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে মেয়ো রোডে জনসভার আয়োজন করা হয়েছিল। একই দিনে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএ এলএলবি এবং বিকম চতুর্থ সেমিস্টারের পরীক্ষা ছিল। অধ্যক্ষ, অধ্যাপকদের একাংশের আশঙ্কা ছিল, পরীক্ষা দিতে গিয়ে সমস্যায় পড়বেন ছাত্রছাত্রীরা। তাঁরা এই নিয়ে অস্থায়ী উপাচার্য শান্তার দিকেও আঙুল তুলেছিলেন। তবে পরীক্ষা মিটে যাওয়ার পর শান্তা দাবি করেন, উচ্চশিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক তাঁকে পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করে বলেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন। তাঁর এই বক্তব্য নিয়ে জলঘোলা শুরু হতেই আসরে নামলেন ব্রাত্য। তাঁর প্রশ্ন, পরীক্ষা না নেওয়ার কথা কোথায় উঠছে? কোথা থেকে জানা গেল মুখ্যমন্ত্রী অনুরোধ করেছেন? ব্রাত্যের দাবি, ‘‘এই মিথ্যাচার কত দিন চলবে? মুখ্যমন্ত্রী করলে, তবে তার ইমেল থাকত বা চিঠি থাকত। শিক্ষা দফতর থেকে মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ সংক্রান্ত কোনও মেল বা চিঠি পাঠানো হয়নি।’’
এই প্রসঙ্গে ব্রাত্য আরও দাবি করেন, ‘’২৮ তারিখ কলকাতা-সহ একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা ছিল। সেই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব বিশ্ববিদ্যালয়কেই পরীক্ষা পিছোনোর অনুরোধ করে চিঠি দেওয়া হয়েছিল উচ্চশিক্ষা দফতরের তরফে। কোনও কোনও বিশ্ববিদ্যালয় অনুরোধ রেখেছিল, কোনও কোনও বিশ্ববিদ্যালয় রাখেনি।’’ তার পরেই শান্তাকে নিশানা করে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘অসত্য কথার একটা সীমানা রয়েছে।’’
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছিলেন অধ্যক্ষ, অধ্যাপকদের একাংশ। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য শান্তাকে চিঠি দিয়েছিল তৃণমূল সমর্থিত অধ্যাপকদের সংগঠন ওয়েবকুপা। এর পর পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন জানিয়ে শান্তাকে চিঠি দিয়েছিল নিখিল বঙ্গ অধ্যক্ষ পরিষদ। তাদের দাবি ছিল, ২৮ অগস্ট পরীক্ষা হলে ছাত্রছাত্রীরা অসুবিধায় পড়বে। ১ অগস্ট ওই পরীক্ষার দিন পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যকে চিঠি দিয়েছিল উচ্চশিক্ষা দফতর। সে চিঠিতে জানানো হয়েছিল, ২৮ অগস্ট কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১২ বিষয়ের পরীক্ষা রয়েছে। কলকাতা সংলগ্ন এলাকায় মিছিল এবং সভার জন্য পরীক্ষার্থীদের অসুবিধা হতে পারে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য যদিও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, পরীক্ষা হবে নির্ধারিত দিনেই। শেষ পর্যন্ত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা কলেজগুলিতে ‘নির্বিঘ্নেই’ মিটেছিল বৃহস্পতিবারের পরীক্ষা।
পরীক্ষা শেষের পর শান্তা জানিয়েছিলেন, এই পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ এসেছিল বিভিন্ন ভাবে। তবেপরীক্ষা করানো নিয়ে ভোটাভুটি হয়। তাতে বেশির ভাগই পরীক্ষা করানোর বিষয়ে মত দেন।