সংবাদদাতা, মাথাভাঙা: মাথাভাঙা-১ ব্লকের জোরপাটকি গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস সংলগ্ন এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীর খুনের ঘটনায় উঠে আসছে মদ্যপানের বিষয়। মদ্যপ দু’জনের বচসা থামাতে গিয়ে আক্রান্ত হন সঞ্জয় বর্মন (৩৭) নামে ওই তৃণমূল কর্মী। পঞ্চায়েত অফিসের সামনের ওই মোড়ে শুধু যে মদ্যপানের আসর বসে তা নয়, ব্রাউন সুগারের ডিলাররাও আসে। এলাকার উঠতি যুবকরা গভীর রাত পর্যন্ত নেশায় ডুবে থাকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাজার সংলগ্ন গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের সামনে দিনের পর দিন মদ্যপান ও মাদকের আসর বসলেও এনিয়ে এতদিন কারও হেলদোল ছিল না। তবে জোরপাটকিতে যেখানে সেখানে যেমন মদ পাওয়া যায়, তেমনি পাওয়া যায় ব্রাউন সুগারও। এর আগে পঞ্চায়েত ও জোরপাটকি হাইস্কুল সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। স্থানীয়রা চাপ দিয়ে এক ব্যক্তিকে এখান থেকে চলে যেতে বাধ্য করেছে। সে ছিল ব্রাউন সুগারের ডিলার। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পুলিস মাঝে মাঝে দু’একজনকে ধরেছিল। কিন্তু ওই পর্যন্তই। রাজনৈতিক নেতাদের একাংশ ও পুলিসের মদতেই দিনের পর দিন জোরপাটকি পঞ্চায়েত এলাকায় মাদক কারবারিরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। জোরপাটকিতে এখনও বেশ কয়েকজন ব্রাউন সুগার ডিলার রয়েছে। তারা দিব্যি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। নেশায় আসক্ত হচ্ছে যুবকরা।
জোরপাটকি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান তথা তৃণমূলের অঞ্চল সহ সভাপতি কমল অধিকারী বলেন, ওই জায়গায় অনেকদিন ধরে রাতে নেশার আসর বসে। দলেরই একাংশের মদত রয়েছে। গ্রামে গ্রামে সিভিক ভলান্টিয়ার রয়েছে, পুলিস নেশার আসর বসার বিষয়টি জানে না এমনটা নয়। জোরপাটকিতে এর আগেও কয়েকজন ব্রাউন সুগার সহ ধরা পড়েছে। কাদের মদত রয়েছে এসব সবাই জানে। যদিও শুক্রবার মাথাভাঙা থানায় কোচবিহার জেলার পুলিস সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য জানিয়েছিলেন, মাদকের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে অভিযান চলছে। মাদক কারবারিদের ধরতে তৎপর রয়েছে পুলিস।
মৃত তৃণমূল কর্মী সঞ্জয় বর্মনের বাড়িতে শনিবার যান তৃণমূলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক, চেয়ারম্যান গিরিন্দ্রনাথ বর্মন সহ অন্যান্যরা। তাঁরা পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, এটা খুনের ঘটনা। সঞ্জয় আমাদের দলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। আমরা পরিবারের পাশে রয়েছি। এদিন মৃতের স্ত্রীকে আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছে। একই সঙ্গে জোরপাটকি পঞ্চায়েত অফিসে একটি অস্থায়ী কাজের ব্যবস্থা করার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে।