নিজস্ব প্রতিনিধি, কোচবিহার: কোচবিহারের বাণেশ্বর শিবদিঘিতে একের পর এক মোহনের (কচ্ছপ) মৃত্যুতে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। শনিবার শিবদিঘি থেকে তিনটি মোহনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। শুক্রবার আরও দু’টি মোহন অসুস্থ হয়েছিল। তাদের বনদপ্তর কোয়ারেন্টাইনে রেখে চিকিৎসা চালাচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এভাবে যদি পরপর শিবদিঘিতে মোহনের মৃত্যু হয় তাহলে আগামীদিনে এখানে এদের অস্তিত্বই থাকবে না।
বাণেশ্বর এলাকায় শিবদিঘি ছাড়াও অন্যান্য পুকুর, জলাশয়ে মোহনদের বসবাস রয়েছে। সেখানে তারা ভালোই রয়েছে। কিন্তু শিবদিঘিতে এভাবে মোহনদের মৃত্যু স্থানীয়দের ভাবিয়ে তুলেছে। এই বিষয়ে তারা প্রশাসনিক উদাসিতার কথাও বলতে শুরু করেছেন। এই পরিস্থিতিতে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার চিন্তাভাবনাও শুরু করেছে স্থানীয় মোহন রক্ষা কমিটি।
উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর ধরেই কোচবিহারের বাণেশ্বর শিবদিঘিতে মোহনদের মৃত্যুকে নিয়ে নানাভাবে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। এই মোহনদের সঙ্গে কোচবিহার রাজ পরিবারের ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে। স্থানীয় মোহনদের দেবতা জ্ঞান করেন। শুধু শিবদিঘিতে মোহনদের মৃত্যুই নয়, আশপাশের এলাকার জলাশয় ভরাট, বসতি স্থাপন, যানবাহন চলাচল ব্যাপকভাবে বৃদ্ধির কারণে বেশকিছু ছোট-বড় মোহনের মৃত্যু হয়েছে। এক্ষেত্রে গাড়ির চাকায় পিষ্ট হওয়ার ঘটনাই বেশি। এছাড়াও এলাকা থেকে মোহন চুরির অভিযোগ ওঠে মাঝে মাঝে। এই পরিস্থিতিতে মোহন রক্ষায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কোভিড কালেও এখানে পরপর মোহন মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল।
কোচবিহারের এডিএফও বিজনকুমার নাথ বলেন, শনিবার শিবদিঘি থেকে তিনটি মোহনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সেগুলির ময়নাতদন্ত চলছে। শুক্রবার দু’টি অসুস্থ মোহন উদ্ধার হয়েছিল। কোয়ারেন্টাইনে রেখে তাদের চিকিৎসা চলছে।
বাণেশ্বরের মোহন রক্ষা কমিটির সভাপতি তথা জেলা পরিষদ সদস্য পরিমল বর্মন বলেন, শিবদিঘি যেন মোহনদের মৃত্যুপুরী হয়ে গিয়েছে। অথচ, আশপাশের জলাশয়ের মোহনরা ভালোই আছে। তাদের ক্ষেত্রে কোনও বিধিনিষেধ নেই, তাই তারা ভালো আছে। তারা অবাধে ঘোরাফেরা, খাওয়াদাওয়া করতে পারে। আমরা বহুবার প্রশাসনকে জানিয়েছি। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। মহারাজাদের মোহন দিনের পর দিন অসুস্থ হচ্ছে। এসব মেনে নেওয়া যায় না। আমরা আদালতের দ্বারস্থ হব। চলতি বছরেই এখানে বেশকিছু মোহনের মৃত্যু হল। কোচবিহারের মহকুমা শাসক কুণাল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, শিবদিঘির ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট গাইড লাইন অনুসারেই সব কিছু করা হয়। এরপরেও মোহন-মৃত্যু হচ্ছে একথা ঠিক। যদি বনদপ্তর ও প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের কোনও নির্দিষ্ট কোনও পরামর্শ থাকে সেটা আমাদের জানালে তার ব্যবস্থাও