ঈশিতা খুন-কাণ্ডে দেশরাজের ‘হদিশ’ পেয়েছেন তদন্তকারীরা, আশ্রয়স্থল থেকে বাড়ির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ
বর্তমান | ৩১ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: ঈশিতা মল্লিক (১৯) খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত উত্তরপ্রদেশের দেওরিয়ার বাসিন্দা প্রাক্তন প্রেমিক দেশরাজ সিংয়ের খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে তদন্তকারী দল। ঠিক কোথায় এখন সে রয়েছে, তার হদিশ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। গত ২৫ আগস্ট কৃষ্ণনগরের পালপাড়ায় মল্লিক বাড়িতে ঢুকে ঈশিতাকে নৃশংসাভাবে খুন করেছিল দেশরাজ। তারপর থেকেই নিজের পরিবার, গ্যাংস্টার দুই জামাইবাবু এবং যোগীরাজ্যের প্রভাবশালী একটা অংশের প্রত্যক্ষ মদতে পুলিসের সঙ্গে লুকোচুরি খেলে বেড়াচ্ছে দেশরাজ। তার সঙ্গেই গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছে দেওরিয়ার কাইরাউতা গ্রামের বন্ধু নবীন প্রতাপ সিং। ঈশিতাকে খুন করতে যে নাইন এমএম পিস্তলটি ব্যবহার করেছিল দেশরাজ, তা জোগান দিয়েছিল নবীন। কৃষ্ণনগর পুলিস জেলার তদন্তকারীরা বলছেন, নিজের বাসস্থান দেওরিয়া ছেড়ে গত কয়েকদিন ধরে লাগোয়া গোরক্ষপুর জেলায় গ্যাংস্টার ‘জিজাজি’দের ডেরায় আশ্রয় নিয়েছে দেশরাজ ও নীতিন। খুব শীঘ্রই তাদের হদিশ মিলবে বলে দাবি তদন্তকারীদের।
এদিকে, গত ২৬ আগস্ট এই খুনের তদন্তে উত্তর প্রদেশ যাওয়ার পর তদন্তকারীরা যে বিষয়গুলি নিয়ে স্পষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন, তা হল, গোপন আশ্রয় থেকে দেশরাজ নিয়মিত তার বাবা-মা, দাদু ও পরিবারের অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছে। সে নিজেও যেমন ঘনঘন সিমকার্ড পাল্টাচ্ছে, তেমনই তা পরিবর্তন করছে বাড়ির লোকজনও। দেওরিয়ার কাইরাউতা গ্রামে দেশরাজের বাড়ি এবং প্রতিবেশীদের কাছে স্থানীয় মাইল থানার পুলিসকে নিয়ে পৌঁছেছিলেন বাংলার তদন্তকারীরা। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল গ্রামের লোকজনকে। তদন্তকারীরা বলছেন, পুলিস ফিরে যাওয়ার পরই এক আত্মীয় পঙ্কজ সিংকে সঙ্গে নিয়ে সেই সব প্রতিবেশীদের মুখে কুলুপ এঁটে রাখার শাসানি দিয়ে এসেছেন দেশরাজের মা। পুলিস বলছে, পালিয়ে থাকা পর্বে দেশরাজের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন তার বাবা রাঘবেন্দ্র প্রতাপ সিং। বিএসএফ কর্মী রাঘবেন্দ্রকে জেরা করতে তাঁর কর্মস্থল রাজস্থানের জয়সলমিরেও গিয়েছিল কৃষ্ণনগর পুলিস। কীভাবে ছেলেকে সাহায্য করছেন এই বিএসএফ কর্মী, সেখানে বিভিন্ন সূত্র থেকে তার বিস্তারিত তথ্য পেয়েছে পুলিস।
অপরদিকে, এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন ঈশিতার বাবা দুলাল মল্লিক ও মা কুসুম মল্লিক। কীভাবে দেশরাজ মেয়েকে খুন করার পাশাপাশি তাঁকে লক্ষ্য করেও গুলি চালিয়েছিল, তার বিবরণ দেন কুসুমদেবী। অপরাধীর কঠোরতম শাস্তি দাবি করে দুলালবাবু বলেন, পুলিসের তদন্তে পুরো ভরসা রয়েছে।