৩০৩ পড়ুয়ার জন্য শিক্ষক পাঁচ, লালগড়ের স্কুলে সিলেবাস নিয়ে উদ্বেগ
বর্তমান | ৩১ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: স্কুলে শিক্ষক মাত্র পাঁচ। কিন্তু পড়ুয়া সংখ্যা তিনশো। পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে তাতে লালগড়ের নেতাই জুনিয়র হাইস্কুলে ইতিহাস ও ভৌতবিজ্ঞানের মতো বিষয় পড়ানোর জন্য স্থানীয় শিক্ষিত যুবকদের দায়িত্ব দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, সেই ক্লাসও নিয়মিত হয় না। অভিভাবক ও ছাত্রছাত্রীরা দু’বার স্কুল চত্বরে শিক্ষক ও পরিকাঠামোর দাবিতে অবস্থান বিক্ষোভ করেছেন। কিন্তু পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয়নি। সিলেবাস শেষ করা নিয়েও শিক্ষকরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। ঝাড়গ্রাম জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক শক্তিভূষণ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, জুনিয়র হাই স্কুল থেকে হাই স্কুলে উন্নীত হলেও শিক্ষকের পদ বরাদ্দ হয়নি। আমাদের তরফে রাজ্য শিক্ষা দপ্তরে একবার আবেদন পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু আবেদন খারিজ হয়ে যায়। পুনরায় আবেদন পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। লালগড়ের এই স্কুল ২০০৮ সালে যাত্রা শুরু করে। ২০১৯ সাল নাগাদ জুনিয়র থেকে হাইস্কুলে উন্নীত হয়। নবম ও দশমের পঠন-পাঠন শুরু হলেও শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। মাধ্যমিক স্তরের এই স্কুলে ১৩ জন শিক্ষক থাকার কথা সেখানে বাস্তবে স্কুলে প্রধান শিক্ষক সহ মাত্র চার জন রয়েছেন। যথেষ্ট সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে পড়ুয়া, অভিভাবকরা ধারাবাহিকভাবে আবেদন করেছেন। বর্তমানে এই স্কুলে বাংলা, ইংরেজি, ভূগোল ও গণিতের স্থায়ী শিক্ষক আছেন। জীবনবিজ্ঞানের এক শিক্ষককে স্থানীয় ধবাধোবনী জুনিয়র হাই স্কুল থেকে নিয়ে আসা হয়েছে। ইতিহাস ও ভৌত বিজ্ঞানের কোনও স্থায়ী শিক্ষকই নেই। এলাকার দুই শিক্ষিত যুবককে দিয়েই পঠন-পাঠন চালানো হচ্ছে। স্কুলে শিক্ষকের দাবিতে গত জুনে অবস্থানে বসেন স্কুলের পড়ুয়া ও অভিভাবকরা। তাতেও কিছুই হয়নি।
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দেবাশিস গিরি বলেন, যথেষ্ট সংখ্যক শিক্ষক এবং কর্মীর অভাবে স্কুল পরিচালনা করাই কঠিন হয়ে যাচ্ছে। অভিভাবকরা ছেলে, মেয়েদের এই স্কুল ছাড়িয়ে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছেন। প্রশাসন ও শিক্ষা দপ্তরের কাছে বারবার আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু আশ্বাস মিললেও কার্যকর পদক্ষেপ করা হয়নি। স্কুলের এক শিক্ষকের কথায়, স্কুলের বিভিন্ন সরকারি কাজ শিক্ষকদেরই করতে হচ্ছে। সেই কাজে সময় নষ্ট হচ্ছে।
নেতাই গ্ৰামের বাসিন্দা জয় রায় বলেন, লালগড়ের নেতাই জুনিয়র হাই স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের জন্য গ্ৰামবাসীদের তরফেও আবেদন করা হচ্ছে। স্কুলের পড়াশোনার অবস্থা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।