নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: কৃষ্ণনগর পুরসভায় দৈনিক মজুরির কর্মচারীদের নিয়ে টানাপোড়েন চলছেই। শনিবার পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে ওই কর্মীদের অপসারণের সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়েছে। ২০২২সালে নতুন বোর্ড গঠনের পর থেকে যতজন দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করছেন, তাঁদের পাকাপাকিভাবে বসিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু এই বৈঠকের আগেই ওই কর্মীরা পুরসভার বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা ঠুকেছেন। শহরের বেশকিছু কাউন্সিলারও এই সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। শনিবার বোর্ড মিটিং বয়কট করেছেন শাসকদলের সাত কাউন্সিলার। ভাইস চেয়ারম্যান নরেশচন্দ্র দাসের অ্যাক্টিং চেয়ারম্যানের ভূমিকা পালন করা নিয়েও বিতর্ক দেখা দিয়েছে।
দৈনিক মজুরির কর্মীদের অভিযোগ, সপ্তাহখানেক আগে ভাইস চেয়ারম্যানের ডাকা সিআইসি মিটিংয়ের পরই মৌখিকভাবে তাঁদের বসিয়ে দেওয়ার কথা জানানো হয়েছিল। তখনও বিওসি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত পাশ হয়নি। সেজন্য তাঁরা কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছেন।
ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, বৈঠক হয়েছে। কিন্তু বৈঠকের বিষয়বস্তু বাইরে বলা যাবে না। দৈনিক মজুরির কর্মচারীরা মামলা করলে করুন। তবে আমি এবিষয়ে কিছু জানি না। কাউন্সিলারদের কেউ কেউ অনুপস্থিত থাকলে থাকতে পারেন।
২সেপ্টেম্বর কৃষ্ণনগর পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলারদের কলকাতায় ডেকে পাঠানো হয়েছে। সেখানে ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত বক্সির উপস্থিতিতে পুরসভার সমস্যা নিয়ে বৈঠক হবে। সেজন্য শনিবার তৃণমূলের সাতজন কাউন্সিলার বোর্ড মিটিং বয়কট করেন। এই সাতজন রীতা দাসকে অপসারণের অনাস্থা প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেননি। এদিন ওই অনাস্থা প্রস্তাব আনা তৃণমূলের ১৩জন, কংগ্রেসের একজন ও এক নির্দল কাউন্সিলার বোর্ড মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন। অনাস্থা না আনা একজন বিজেপি ও একজন কংগ্রেস কাউন্সিলারও মিটিংয়ে আসেন। সেই মিটিংয়ে দৈনিক মজুরির কর্মচারীদের অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর জেরে প্রায় ২০০কর্মী কাজ হারাতে বসেছেন। এনিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। কারণ দীর্ঘদিন ধরে কৃষ্ণনগর পুরসভায় এভাবেই নিয়োগ হয়ে আসছে।
কংগ্রেসের কাউন্সিলার শান্তশ্রী সাহা বলেন, ২০২২সালের ১৬মার্চ থেকে যতজন দৈনিক মজুরির কর্মচারী নিয়োগ করা হয়েছে, তাঁদের বসিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সিআইসি মেম্বার গৌতম মালাকার বলেন, ভাইস চেয়ারম্যানের কাছে লিখিতভাবে জানতে চেয়েছি, উনি কবে অ্যাক্টিং চেয়ারম্যান হয়েছেন? কোন নিয়ম মেনে তিনি এই ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন? সেটা কাউন্সিলারদেরই বা জানালেন না কেন? ইও সাহেবের কাছেও লিখিতভাবে এসব জানতে চেয়েছি। এসব প্রশ্নের কোনও উত্তর মেলেনি। ২সেপ্টেম্বর দল আমাদের ডেকেছে। শীর্ষ নেতৃত্ব কী বলতে চান, সেটা আমরা শুনব। সেজন্য এদিন বোর্ড মিটিং বয়কট করেছি।