নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: পণের দাবিতে গৃহবধূর উপর লাগাতার নির্যাতন এবং পরবর্তীতে খুন। আট বছর আগে হাঁসখালির এই নৃশংস ঘটনায় স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে দোষী সাব্যস্ত করে রানাঘাট মহকুমা আদালত। শনিবার মৃতার স্বামীকে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং শ্বশুর-শাশুড়িকে সাত বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক সৌমেন গুপ্ত। সাজা প্রাপ্তদের নাম স্বামী রঞ্জিত রায়, শ্বশুর কাংলি রায় এবং শাশুড়ি পলি রায়। বিচারক ওই কারাদণ্ডের পাশাপাশি স্বামীকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে অতিরিক্ত ছ’মাস কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার বছর তিনেক আগে নদীয়ার ভীমপুর থানা এলাকার বাসিন্দা পুজা রায় সরকারের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল রঞ্জিতের। বিয়ের পর থেকেই পনের দাবিতে অত্যাচার করা হতো। ২০১৭ সালের ২২ আগস্ট ভোরে অশান্তি চরমে ওঠে। পণ নিয়ে বচসার জেরে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন পূজাদেবীকে নির্মমভাবে মারধর করে। পরে তাঁর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। পূজাদেবীর আর্তনাদ শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই গৃহবধূকে দ্রুত শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এই ঘটনার পর মৃতার বাবা বিকর্ণ সরকার হাঁসখালি থানায় জামাই সহ শ্বশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনার তদন্তে নেমে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে হামসখালি থানার পুলিস। মামলা চলাকালীন আদালতে দ্রুত চার্জশিট পেশ করে পুলিস। মামলার প্রায় আট বছর পর তার রায় দিল রানাঘাট মহকুম আদালত। এই মামলায় সরকারি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন নবেন্দু বিশ্বাস বলেন, পণের দাবিতে গৃহবধূ খুন সমাজের অত্যন্ত নক্কারজনক ঘটনা। এই ঘটনায় আদালত যে সাজা দিয়েছে তা একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালীন মোট ন’জনের সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছে। সমস্ত তথ্য প্রমাণ খতিয়ে দেখার পর আদালত তিনজনকেই দোষী সাব্যস্ত করেছে। - নিজস্ব চিত্র