কলেজ সেরে গাড়িতে বাড়িফিরছিলেন এক ছাত্রী। একটি মোটরবাইকে পিছু ধাওয়া করে তিন যুবক। কটূক্তি চলতে থাকে। গাড়ির চালক গতি বাড়িয়ে পালানোর চেষ্টা করলেও পারেননি। ওই যুবকেরা এসে পথ আটকায়। চালককে গাড়ি থেকে নামিয়ে তারা বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। তরুণীর উদ্দেশ্যে অশালীন মন্তব্য করে। পরে লোকজন জড়ো হওয়ায় পিঠটান দেয় ওই যুবকেরা।
তরুণী ও তাঁর বাড়ির লোকজন পরে অভিযোগ দায়ের করেন থানায়। পুলিশ গ্রেফতার করেছে দুই যুবককে। যার বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ, সেই যুবক এক প্রভাবশালী তৃণমূল নেত্রীর ছেলে। নেত্রীর অবশ্য দাবি, ছেলের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবকের খোঁজ চলছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়ায়। বসিরহাট পুলিশ জেলার সুপার হোসেন মেহেদি রহমান বলেন, ‘‘কোনও ভাবেই মহিলাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার মেনে নেওয়া যায় না। অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আলামিন মোল্লা এবং আফ্রিদি সর্দারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হৃদয় মণ্ডল নামে এক জনের খোঁজ চলছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সল্টলেকে কলেজ সেরে গাড়িতে করে হাড়োয়ার বাড়িতে ফিরছিলেন ওই ছাত্রী। বিদ্যাধরী সেতুরউপরে ওঠার সময়ে তাঁর গাড়ির পিছনে এসে একটি বাইকে তিন যুবক নানা কটূক্তি করে। গাড়ির চালক গতি বাড়িয়ে দেন। ধাওয়া করে যুবকেরা। প্রায় দু’কিলোমিটার রাস্তা ছাত্রীর গাড়ির পিছনে পিছনে আসতে থাকে বাইক। উড়ে আসতে থাকেঅশালীন মন্তব্য।
ছাত্রীর বাবা পুলিশকে জানিয়েছেন, গোপালপুরের কালিকাপুরে এসে চালক গাড়ি থামাতে বাধ্য হন। গাড়ির উপরেপ্রায় ঝাঁপিয়ে পড়ে ওই যুবকেরা। বিপদ বুঝে ওই তরুণী নিজেরমোবাইলে যুবকদের ছবি তোলেন। তা দেখে বাইক আরোহীরা গাড়ির চালককে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। ছাত্রীর কাছ থেকে মোবাইল কেড়ে নিয়ে ছবি মুছে দেয়।
তরুণীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে যান।পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে বাইক নিয়ে পালায় তিন জন। তরুণী বাড়ি এসে ঘটনার কথা জানান। রাতেই বসিরহাট পুলিশ জেলার সুপারের কাছে এবং হাড়োয় থানায় লিখিত অভিযোগ করেন তিনি।
অভিযুক্ত হৃদয় জেলা পরিষদের সদস্য তথা হাড়োয়ার তৃণমূল নেত্রী তাজমিরা বিবির ছেলে। ছেলেরপাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। তাজমিরার কথায়, ‘‘ছোট একটা ঘটনায় আমার ছেলের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।’’ এ বিষয়ে জেলাপরিষদের সদস্য তথা তৃণমূলের বসিরহাট সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বুরহানুল মোকাদ্দিম লিটন বলেন, ‘‘কেউ যদি মহিলাদের প্রতিঅভব্য আচরণ করে থাকে, তা হলে সেটা শাস্তিযোগ্য। ঘটনাটি সত্যি হলে পুলিশকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’’