• অবৈধ দখল রুখতে ডিজিটাল নজরদারি, নতুন সার্ভে মডিউল কলকাতা পুরসভার
    আনন্দবাজার | ৩১ আগস্ট ২০২৫
  • কলকাতা শহরে জমি ওপুরসভার সম্পত্তিতে বেআইনি দখল রুখতে এ বার বিশেষ উদ্যোগ নিল কলকাতা পুরসভা। ১ সেপ্টেম্বর থেকে চালু হচ্ছে ই-কেএমসি ২.০ প্রকল্পের আওতায় নতুনসার্ভে মডিউল। বেআইনি দখল চিহ্নিতকরণ ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে এই মডিউল একটি বড় অস্ত্র হতে পারে বলেই আশা পুরকর্তাদের।

    পুরসভা সূত্রের খবর, এত দিন পর্যন্ত কোনও জমির সরেজমিনে পরিদর্শনের পরে বেআইনি দখল ধরা পড়লেও তার নথিবদ্ধকরণ, পরবর্তী প্রশাসনিক প্রক্রিয়া ও ফি আদায় প্রক্রিয়া ছিলসময়সাপেক্ষ। নতুন সার্ভে মডিউলে থাকছে আলাদা ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে পরিদর্শনের সময়ে বেআইনি দখল চিহ্নিত হলে তা তৎক্ষণাৎ নথিভুক্ত করা হবে। এর ফলে পুরো প্রক্রিয়া হবে অনেক বেশি দ্রুত, স্বচ্ছ।

    শুধু অবৈধ দখল নয়, এই ডিজিটাল মডিউলের মাধ্যমে একাধিকগুরুত্বপূর্ণ কাজও একসঙ্গে হবে। পুরসভা সূত্রের খবর, জমির রেকর্ড ব্যবস্থাপনা, ইজারা বা লাইসেন্স সংক্রান্ত নথি সংরক্ষণ, বিল্ডিং প্ল্যান অনুমোদনের সময়ে সার্ভে অবজ়ারভেশন রিপোর্ট (এসওআর) তৈরি, এমনকি উন্নয়নমূলক ফি সংগ্রহ— সবই এ বার করাযাবে একই প্ল্যাটফর্ম থেকে। অনলাইনের পাশাপাশি অফলাইনেও এসওআর তৈরি করা সম্ভব হবে। উন্নয়নমূলক ফি দেওয়ার ক্ষেত্রে থাকছে অনলাইন পোর্টাল ও সাধারণ কালেকশন সেন্টারের সুযোগ।

    পুরকর্তাদের একাংশের বক্তব্য, নতুন মডিউলের অন্যতম সুবিধা হল ‘কন্ট্রোল নম্বর’ ও ‘অকুপায়ারনম্বর’-এর ভিত্তিতে রেকর্ড সংরক্ষণ। এর ফলে কোন জমি বা সম্পত্তির উপরে কার দখল আছে,কোথায় ইজারা বা লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে, কোন জায়গায় অবৈধদখল হয়েছে— এ সব তথ্য সহজেই একত্রে পাওয়া যাবে। এ ছাড়া,বিভিন্ন ধরনের রিপোর্ট তৈরি হবে, যাতে শীর্ষ কর্তারা নীতি নির্ধারণও নজরদারি করতে পারবেন।বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য, সার্ভে ডিমান্ড রিপোর্টেও এ বার যুক্ত হচ্ছে কিউআর কোড, ফলে তথ্যের সত্যতা যাচাই আরও সহজ হবে।

    পুরসভার দাবি, এই মডিউল চালু হলে নাগরিক পরিষেবার মানোন্নয়ন ঘটবে। অবৈধ দখল সংক্রান্ত মামলার নিষ্পত্তি হবেদ্রুত। প্রশাসনিক স্বচ্ছতাও বাড়বে বহু গুণ। এক আধিকারিক বলেন,“এত দিন তৃণমূল স্তরে যে সব অভিযোগ জমা পড়ত, তার অনেকটাই সময় মতো নথিভুক্ত হত না।এ বার থেকে তৎক্ষণাৎ সিস্টেমেউঠবে তথ্য। এতে দখলদারদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ করা সম্ভব হবে।”

    পুরসভার শীর্ষ কর্তাদের মতে, এই উদ্যোগকে কেন্দ্র করে শহরের জমি-সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা আরও স্বচ্ছ ও কার্যকর হবে। একই সঙ্গে নাগরিক পরিষেবা ডিজিটাল মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া যাবে আরও দ্রুত, যা কলকাতা পুরসভার প্রশাসনিক আধুনিকীকরণের পথে একটি বড় পদক্ষেপ।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)