• জেতা ১৯ আসনে মুখ বদলের ভাবনা বিজেপিতে, সংখ্যায় এগিয়ে দক্ষিণবঙ্গ
    আনন্দবাজার | ৩১ আগস্ট ২০২৫
  • বিধানসভা নির্বাচনের কিছু মাস আগে থেকে কার্যত নির্বাচনী আবহে ঢুকে পড়েছে বঙ্গ বিজেপি। তাদের প্রাথমিক কৌশল, আগের ভুলের পুনরাবৃত্তি না করা। তারই প্রথম ধাপ হিসেবে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব সংস্কার আনতে চাইছেন প্রার্থী তালিকায়। সূত্রের ইঙ্গিত, মুখ বদল হতে পারে বিজেপির গত বার জেতা ১৯ আসনে। এই বিধায়কদের মধ্যে অবশ্য কয়েকজন ইতিমধ্যে শাসক তৃণমূল কংগ্রেসে নাম লিখিয়েছেন।

    গত বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে ৭৭টি আসন জিতেছিল বিজেপি। কিন্তু বর্তমানে খাতায়-কলমে তাদের বিধায়ক সংখ্যা ৬৫। এর মধ্যে কৃষ্ণনগর উত্তরের মুকুল রায়, বাগদার বিশ্বজিৎ দাস, রায়গঞ্জের কৃষ্ণ কল্যাণী, কোতুলপুরের হরকালী প্রতিহার, বিষ্ণুপুরের তন্ময় ঘোষ, রানাঘাট দক্ষিণের মুকুটমণি অধিকারী, আলিপুরদুয়ারের সুমন কাঞ্জিলাল, হলদিয়ার তাপসী মণ্ডল তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। কালিয়াগঞ্জের সৌমেন রায় তৃণমূলে যোগ দিয়েও লোকসভা নির্বাচনের আগে ফের বিজেপিতে ফিরে এসেছেন। বিধানসভা উপ-নির্বাচনে দিনহাটা, শান্তিপুর, বাগদা, রানাঘাট দক্ষিণ, রায়গঞ্জ, মাদারিহাট আসন বিজেপির হাতছাড়া হয়েছে। বিধায়কের মৃত্যুতে ধূপগুড়ি আসনে উপনির্বাচন হলে সেই কেন্দ্রেও বিজেপির হার হয়েছে।

    সূত্রের খবর, বিজেপির বিধাননগর কার্যালয়ে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুনীল বনসলের উপস্থিতিতে নির্বাচনী রণকৌশল নিয়ে বৈঠকে প্রার্থী বাছাইয়ে অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। একটা সময় পর্যন্ত স্থির ছিল, জয়ী বিধায়কেরা সকলেই টিকিট পাবেন। সেই কারণে জেলা সভাপতি পদ থেকে তাঁদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক বৈঠকে ঠিক হয়েছে, বিধায়ক হিসেবে কাজ, এলাকায় গ্রহণযোগ্যতা, স্বচ্ছ ভাবমূর্তি, জেতার সম্ভাবনা ও দলের প্রতি আনুগত্যকে মাপকাঠি করে প্রার্থী বাছাই হতে পারে। প্রাথমিক আলোচনায় বেশ কয়েক জন বিধায়ক এই মাপকাঠিতে আটকে গিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। এঁদের মধ্যে উত্তরবঙ্গের দুই বিধায়ক, পশ্চিম বর্ধমানের এক বিধায়ক রয়েছেন। সংখ্যাটা দক্ষিণবঙ্গের ক্ষেত্রেই বেশি। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে কঠিন লড়াই অপেক্ষা করে আছে জেনেও বিজেপি যদি এ ধরনের সংস্কারের পথে হাঁটে, তা ‘ঝুঁকি’র বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবিরের একাংশ। সেই সঙ্গে বর্তমান বিধায়কদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের কাজেই যে বিজেপি খুশি নয়, তা-ও স্পষ্ট এই বার্তায়।

    বিজেপি সূত্রের ইঙ্গিত, গত লোকসভা নির্বাচনে পরাজিত প্রাক্তন সাংসদদের বড় অংশ বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন। তালিকায় থাকতে পারে লকেট চট্টোপাধ্যায়, সুভাষ সরকার, নিশীথ প্রামাণিক, অর্জুন সিংহদের নাম। রাজ্য বিজেপির এক নেতার বক্তব্য, “মানুষ তৃণমূলকে হারানোর জন্য মুখিয়ে আছেন। আমাদের কাজ মানুষের কাছে বিজেপিকে পৌঁছে দেওয়া। সেই কাজে যিনি উপযুক্ত হবেন, তিনিই প্রার্থী হবেন।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)