• ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন নিয়ে সৃজিতের ছবি ‘এম্পারর ভার্সেস শরৎচন্দ্র’, কেন এই বিষয় বাছলেন?
    আনন্দবাজার | ৩১ আগস্ট ২০২৫
  • ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে লেখা শরৎচন্দ্রের উপন্যাস 'পথের দাবি'র ১০০ বছর আগামী বছরের ৩১ আগস্ট। এই উপন্যাসের মুখ্য চরিত্র সব্যসাচী। শরৎচন্দ্রের 'পথের দাবি'কে কেন্দ্র করে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের আগামী ছবি 'এম্পারর ভার্সেস শরৎচন্দ্র'।

    সেই উপন্যাস, সেই সময়কাল কিংবা শাসকের বিরুদ্ধাচারণ আজও কী ভাবে ভয়ঙ্কর পরিণতির দিকে ঠেলে দেয়— এই বিষয়গুলোকে পটভূমিকায় রেখে সৃজিতের আগামী ছবি। যৌথ প্রযোজনায় শ্রীকান্ত মোহতা-মহেন্দ্র সোনির এসভিএফ প্রযোজনা সংস্থা এবং রানা সরকারের দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়া।

    আনন্দবাজার ডট কমকে পরিচালক জানিয়েছেন, ১৯২৬ সালের ৩১ অগস্ট শরৎচন্দ্রের ‘পথের দাবি’ প্রকাশিত হয়েছিল। উপন্যাস প্রকাশের পর দেশ জুড়ে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন আরও জোরালো হয়। যার জেরে ১৯২৭ সালের জানুয়ারিতে বইটি সরকারি ভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। উত্তাল হয়ে ওঠে সারা দেশ। সেই সময়ের আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাঁর ছবিতে তৎকালীন ঘটনার পাশাপাশি সেই সময়ের খ্যাতনামী ব্যক্তিত্বরাও থাকবেন।

    চলতি বছরের পুজোয় বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি শুভ্রজিৎ মিত্রের ‘দেবী চৌধুরাণী’, দেবের ‘রঘু ডাকাত’ মুক্তি পাচ্ছে। দুটো ছবির পটভূমিকাতেই স্বাধীনতা আন্দোলনের সময়কাল। সৃজিত কেন একই বিষয় বেছে নিলেন?

    পরিচালকের কথায়, “বরাবর নানা স্বাদের ছবি বানিয়ে এসেছি। এ বছরেই যেমন মুক্তি পেয়েছে ‘সত্যি বলে সত্যি কিছু নেই’, ‘কিলবিল সোসাইটি’। একটির সঙ্গে আর একটির বিষয়ের কিন্তু কোনও মিল নেই। সেই জায়গা থেকেই আমার এই বিষয়টিকে বেছে নেওয়া।” সৃজিতের ছবিতে সাধারণত অতীত ঘটনার সঙ্গে বর্তমানের অদ্ভুত ‘বন্ধুত্ব’ তৈরি হয়ে যায়। অতীতের শাসকবিরোধিতার সঙ্গে এখনকার প্রতিবাদের ভয়ঙ্কর ফলাফল যদি তাঁর ছবিতে সহাবস্থান করে তা হলে তো সেই ছবি রাজনৈতিক! পরিচালক অবশ্য সাফ বলেছেন, “এ রকম কোনও কিছুই হচ্ছে না। আমি মূলত ‘পথের দাবি’র রচনাকাল, সেই সময়ের বাংলা, ঘটনা এবং ব্যক্তিত্বদের নিয়েই ছবি বানাতে চলেছি।”

    ছবির চিত্রনাট্য লেখার কাজ শেষ। সব ঠিক থাকলে চলতি বছরের নভেম্বরে শুটিং শুরু করবেন। ছবিমুক্তি ২০২৬-এর পয়লা মে। অভিনয়ে কারা থাকছেন? সে কথা এখনই ফাঁস করতে নারাজ পরিচালক। জানিয়েছেন, অভিনেতা বাছাইপর্ব চলছে। ব্রিটিশ আমলে আদালতে মামলা উঠলে ‘এম্পারার’ শব্দটি ব্যবহৃত হত। যেমন, ‘এম্পারর ভার্সেস অরবিন্দ ঘোষ’ সেই সময়ের একটি বিখ্যাত মামলা। তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই সৃজিতের আগামী ছবির নামকরণ। যদিও ঔপন্যাসিক বা বিতর্কিত উপন্যাস নিয়ে আদালতে কোনও মামলা হয়েছিল কি না জানেন না পরিচালক।

    প্রসঙ্গত, ১৯৭৭ সালে পরিচালক পীযূষ বসুর পরিচালিত ছবি ‘সব্যসাচী’তে নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন উত্তমকুমার। তাঁকে ঘিরে ছিলেন সুপ্রিয়া দেবী, বিকাশ রায়, অনিল চট্টোপাধ্যায়, তরুণ কুমার প্রমুখ। কাকতালীয় ভাবে আবারও কি সৃজিতের উত্তম-যোগ? সৃজিতের কথায়, “উত্তমকুমার অভিনীত ছবিটি শুধুই ‘পথের দাবি’ উপন্যাসকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছিল। আমার ছবিতে তৎকালীন সময়, উপন্যাস নিষিদ্ধ হওয়া-- এ গুলো থাকছে। দুটো ছবির সাদৃশ্য খুঁজতে যাওয়া তাই বৃথা।”
  • Link to this news (আনন্দবাজার)