• গ্রামীণ এলাকার বেকার তরুণ-তরুণীদের কর্মসংস্থানের দিশা দেখাচ্ছে IIT খড়্গপুর
    এই সময় | ৩১ আগস্ট ২০২৫
  • সুমন ঘোষ, খড়্গপুর গ্রামীণ এলাকার বেকার তরুণ-তরুণীদের কর্মসংস্থানে দিশা দেখাতে চাইছে খড়্গপুর আইআইটি। সেই লক্ষ্যে একাধিক ‘স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম’ চালু করা হচ্ছে। যাতে অল্প সময়ে এই সমস্ত সার্টিফিকেট কোর্স করে একজন হাতে-কলমে কাজ শিখে কোনও সংস্থায় চাকরি পেতে পারেন অথবা নিজেও উপার্জন করতে সক্ষম হন। এ ক্ষেত্রে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গ্রামীণ এলাকার বেকার যুবক-যুবতীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন খড়্গপুর আইআইটির ডিরেক্টর সুমন চক্রবর্তী।

    সুমন জানান, প্রযুক্তি ও গবেষণার ক্ষেত্রে সব সময়ে সেরা হওয়ার দৌড় তো আছেই। গবেষণালব্ধ ফলও সমাজের কল্যাণেই কাজে লাগে। সেই সঙ্গে সরাসরি যাতে বেকার যুবক-যুবতীদের হাতে-কলমে কিছু শিখিয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যায় সেই লক্ষ্যেই কর্মমুখী ‘শর্ট-টাইম সার্টিফকেট কোর্স’ করানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যে সমস্ত উৎসাহী শিক্ষিত তরুণ-তরুণীরা আইআইটিতে এই কোর্স করতে আসবেন, তাঁদের যাতায়াতের খরচের বিষয়টিও মাথায় রেখেছেন ডিরেক্টর। সে জন্য তাঁদের যদি সামান্য স্কলারশিপেরও ব্যবস্থা করা যায় সে ব্যাপারেও শুরু হয়েছে চিন্তাভাবনা। ডিরেক্টর বলেন, ‘যাতে পিছিয়ে পড়া এলাকার গরিব ছেলেমেেয়রাও ওই কোর্স করতে পারেন, সে জন্য স্কলারশিপেরও চেষ্টা করছি। এব্যাপারে আমাদের প্রাক্তনীদের সঙ্গেও কথা বলছি। যদি তাঁরা এ ব্যাপারে কোনও সাহায্য করতে পারেন।’

    ইতিমধ্যেই ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের কাছ থেকে একটি সার্টিফিকেট কোর্স চালুর জন্য অনুমোদনও পেয়েছে আইআইটি। সেটি হলো, ফ্রন্ট লাইন হেলথ ওয়ার্কার। যেটি চলতি বছরের নভেম্বর থেকে শুরু হওয়ার কথা। ওই কোর্সটি করানোর জন্য গঠন করা হয়েছে ‘স্কুল ফর স্কিলস: হেলথ কেয়ার অ্যান্ড টেকনোলজি।’ আইআইটি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে এই কোর্সে ১৫০ জনকে নেওয়া হবে। তাঁদের অনেকটাই নার্সের মতোই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। রোগীকে ইঞ্জেকশন দেওয়া, রক্তচাপ মাপার পাশাপাশি পরীক্ষার জন্য রক্ত বা অন্য নমুনা কী ভাবে সংগ্রহ করা হয় তা শেখানো হবে। ডিরেক্টর বলেন, ‘তাঁরা একেবারে নার্সের মতো হবেন, এমনটা নয়। তবে এমন ভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে যাতে তাঁরা নার্স ও চিকিৎসকদের সহজেই সাহায্য করতে পারেন।’

    আইআইটি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রশিক্ষণের পরে প্রয়োজন অনুযায়ী খড়্গপুর আইআইটি-র শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী সুপার স্পেশালিটি হাসাপাতালেও তাঁদের কর্মসংস্থানের সুযোগ দেওয়া হবে। মোবাইল রিপেয়ারিং, বিভিন্ন যন্ত্রপাতি সারানো, ডিজিটাল মার্কেটিং, গ্রাফিক ডিজাইন, ভিডিয়ো প্রোডাকশন, অ্যানিমেশন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ড্রোন টেকনোলজি-সহ বিভিন্ন বিষয়েও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। ছ’মাসের কোর্সের উপরে জোর দেওয়া হবে। যাতে কম সময়ে কাজ শিখে উপার্জনের পথে হাঁটা যায়।

    ওই প্রশিক্ষণের পাশাপাশি গ্রামীণ এলাকার স্কুলে পুরোনো কম্পিউটার, চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ, আলমারি দিয়ে সাহায্য করারও পরিকল্পনা নিয়েছে আইআইটি। সম্প্রতি আইআইটি-র প্রথম বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের হাতে পুরোনো সাইকেল তুলে দিয়েছেন ডিরেক্টর। এ বার গুদামের রিপোর্ট থেকে জানতে পারেন, গুদামে থাকা অন্তত ৫০টি কম্পিউটার এখনও ভালো অবস্থায় রয়েছে। যা ছাত্রছাত্রীরা সহজেই ব্যবহার করতে পারবে। অনেক স্কুলেই প্রয়োজন থাকলেও পর্যাপ্ত কম্পিউটার নেই। সেই সমস্ত স্কুলের শিক্ষকেরা যদি উপযুক্ত কারণ দেখিয়ে কম্পিউটার চেয়ে আবেদন জানান, তা হলে তাঁদের হাতে কম্পিউটার তুলে দেওয়া হবে বলে ডিরেক্টর জানান। তিনি বলেন, ‘সেই সঙ্গে কেউ প্রশিক্ষণ দেওয়ার সাহায্য চাইলে সেটাও আমরা ভেবে দেখব।’

  • Link to this news (এই সময়)